হামিদুর রহমান,হাফিজুর রহমান দুই ভাই।হাফিজুর বড় ,হামিদুর ছোট ।তাহারা গ্রামের উচ্চবিত্ত পরিবার।জমিজমা আছে অনেক।তাদের জমি বর্গা চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে গ্রামের অনেক।গ্রামের এই বর্গা চাষীর মেয়ে সাজেদা বেগমকে ভাল লেগে যায় হামিদুর রহমানের।
পরিবারের আপত্তি থাকার পরেও পরিবারের সুখ শান্তির কারনে হাফিজুর রহমান ছোট ভাইয়ের বিয়ে মেনে নেয়।
হাফিজুর রহমানের স্ত্রী নাবিলা বেগম এবং এক ছেলে ফায়জুর রহমান।
হামিদুর রহমানের স্ত্রী সাজেদা দেখতে কালো।শুধু কালো নয় কুচকুচে কালো।
হামিদুর রহমানের একটি মেয়ে আছে নাম রাবেয়া বেগম।
রাবেয়ার বয়স যখন তিন তখন হাফিজুর রহমানের স্ত্রী নাবিলা বেগম এবং ছোট ভাই কয়েক দিনের ব্যবধানে ছোট ভাই হামিদুর রহমান পক্স হয়ে মারা গেলেন।
তারপর
গ্রামের ঈদরীশ মৌলভির পরামর্শে হাফিজুর রহমান ছোট ভাইয়ের বউকে নিহাহ করে।
হাফিজুর রহমানের ছেলে ফায়জুর রহমান তার চাচী এবং বাপের বিয়ে মেনে নিতে পারেনি।
তাই সে এস,এস,সি পরীক্ষার পর ঢাকা চলে যায় ,কলেজে ভর্তি হয়।সে আর বাড়ি আসেনি।
ছোট বোন রাবেয়া ফায়জুর রহমান কে চিঠি লিখে সে যেন বাড়ি আসে।
ফায়জুর এইচ,এস,সি পরীক্ষা দেয়ার পরও সে বাড়ি আসেনি।
হাফিজুর রহমান ঢাকা যায় ছেলেকে বাড়িতে ফেরত আনতে এবং তারা রাবেয়া বেগম এর সাথে ফায়জুরের বিয়ে ঠিক করে।
ফায়জুর সাফ জানিয়ে দেয় সে বাড়ি যাবেনা ,রাবেয়া কে বিয়েও করবে না।
অত;পর বাপ-বেটার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
ফায়জুর নিজ উদ্দেগ্যে ভার্সিটি ভর্তি হয় ।উচ্চশিক্ষা লাভ করে বন্ধুর বোন হেমাকে বিয়ে করে।
তাদের এক ছেলে হয় নাম সৈকত।
এদিকে রাবেয়া বেগমের বিয়ে হয় গ্রামের এক ছেলের সাথে।হাফিজুর রহমান তাকে ঘর জামাই হিসেবে রেখে দেয়।
সেই রাবেয়া বেগমের এক মেয়ে হয় নাম আসিয়া বেগম।
ফায়জুর রহমানের ছেলে সৈকত এবং রাবেয়া বেগমের মেয়ে আসিয়া বেগম।
তাদের নিয়েই কাসেম বিন আবু বাকারের "কালো মেয়ে" উপন্যাস।
উপন্যাসের ভুমিকায় কাসেম বিন আবু বাকার লিখেন-
"এ উপন্স্যাসের নায়িকা কালো।শুধু কাল নয় অসম্ভব কালো।এই কারনে ছোট বেলা থেকে সবার কাছ থেকে উপেক্ষিত।তাই জ্ঞান হবার পরে প্রতিজ্ঞা করে,ডাক্তার হবে এবং চির কুমারী থেকে গ্রামের দু;স্থ মানুষের সেবা করে জীবন কাটিয়ে দিবে কিন্তু মেডিকেলে পড়ার সময় ভাগ্যের বেড়াজালে জড়িয়ে পড়ল------------------------------------! "
আসিয়া বেগম ঢাকা মেডিকেলে চান্স পেয়ে ভর্তি হয়।এদিকে ফায়জুর রহমানের ছেলে সৈকত ভর্তি হয় ঢাকা মেডিকেলে।
কেউ কারো পরিচয় জানে না।
অতঃপর
অনেকটা ভারতীয় বাংলা জিৎ কিংবা দেবের সিনেমার মত এগিয়ে যায় উপন্যাসের কাহিনী ।
মেডিকেল কলেজে বোরকা পড়ে,হাত,পায়ে মৌজা লাগিয়ে আসিয়া বেগম ক্লাস করতে আসে।সৈকত দাঁড়িয়ে থাকে কলেজের করিডরে।
বোরকা পড়া আসিয়া বেগম কে দেখে প্রেমে পড়ে যায় সৈকত।
সৈকত আসিয়া কে পাবার জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকে।
সৈকত যখন আসিয়া বেগম কে বন্ধুত্বের আহ্নবান করে আসিয়া বলে উঠে-
-আমার কোন ছেলে বন্ধু নেই
-ইসলামে ছেলে মেয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব নিষিদ্ব।
আসিয়া বেগম সৈকত কে ইসলাম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতে বলে।তাকে বলা হয় -বন্ধু বান্দব দের সাথে ঘুরা ফেরা কমিয়ে দিয়ে ইসলামিক বই পড়ুন।
প্রথমে আপনাকে গোলাম মোস্তফার " বিশ্ব নবী" পড়তে হবে।এটা পড়লে পরবর্তীতে বোঝতে পারবেন কি বই পড়তে হবে।
এভাবেই উপন্যাসের নায়ক সৈকত ইসলামিষ্ট হয়ে আসিয়া কে জয় করেন ।
আরো কাহিনী আছে-আর লিখতে পার্তাছি না।
আমার কথা
কাসেম বিন আবু বাকার যখন কাল মেয়ে উপন্যাস বের করেন তখন সাল ১৯৯৪ ।আমি মনে করি তিনি সেই সময়ের গ্রামীন মুসলিম সমাজের স্থান,কাল,পাত্র অনুযায়ী উপন্যাস লিখেছেন।
বিশেষ করে কাসেম বিন আবুবাকার সেই সময়কার মুসলিম নর নারীর গোপন প্রেমকে উপজীবি করে কিছু কাল্পনিক,সত্য-মিথ্যা এবং এবং হাদিস ,কোরানের উদ্ধৃতি দিয়ে উপন্যাস লিখেছেন।
এখন আমরা যা পড়ছি তা আমাদের কাছে হাস্যকর লাগে।কারন সময়ের বাস্তবতা।
কাসেম বিন আবু বাকার মুসলিম সমাজের অংশ বলেই তাকে নিয়ে আজ সমালোচনা।যার বইয়ের ত্রিশতম সংস্করণ বেরোয়, বিক্রি দুই লাখ ছাপিয়ে যায় তাকে নিয়ে সমালোচনা হবেই।
ধন্যবাদ সবাইকে
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:০৮