বাস্তুশাস্ত্র
ঘরে সুখ নেই, শান্তি নেই।ব্যাক্তিগত জীবনে নানা সমস্যায় দিন যাচ্ছে।প্রচলিত আছে ঘরে সুখ শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য বাস্তুশাস্ত্র এনে দিতা পারে সুখ,শান্তি ।
আপনি মানেন আর নাই মানেন ইহা প্রচলিত । বাস্তুকে বলা হয় ভারতীও স্থাপত্য বিজ্ঞান।
প্রায় ৫০০০ বছর ধরে বাস্তুবিদ্যা কালের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রামে জয়ী হয়েছে। স্থাপত্য উপবেদ বা স্থাপত্য শাস্ত্রের সূত্রগুল পরবর্তীকালে 'বাস্তুশাস্ত্র' শিরোনামে লিপিবদ্ধ হয়েছে। বৈদিক যুগে স্থাপত্য বিজ্ঞান মূলত মন্দির নির্মাণে ব্যবহৃত হত। পরবর্তীতে তা বিস্তার লাভ করে। প্রাচীন যুগে স্থপতিরা কেবল নিছক রাজমিস্ত্রির ভূমিকা পালন করতেন না, নির্মাণশৈলী ও পরিকল্পনার বিষয়টিও তদারক করতে হত তাঁদের।
প্রাচীনকালে অন্ধকাসুর বধের সময় ভগবান শিবের ললাট থেকে পৃথিবীতে যে স্বেদ বিন্দু পড়েছিল তার থেকে এক ভয়ঙ্কর আকৃতির দেবতার উদ্ভব হয়। সনাতন পৌরানিক কাহিনী মতে একবার অসুর ও দেবতাদের যুদ্ধে দেবতারা অসুরদের সাথে পেরে না উঠতে পেরে সবাই নিজ নিজ তেজ থেকে এক দেবতা সৃষ্টি করলেন- যার নাম হল বাস্তু দেব- ঊনি জন্ম নিয়েই সকল অসুরদের খেয়ে ফেলেন- কিন্তু উনার খিদে মেটেনা- শেষে ঊপায় না পেয়ে দেবতারা সেই বাস্তু দেবের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে অবস্থান নেন এবং বাস্তু দেবের খিদে নিবৃত হয়। তারপর তিনি এই পৃথিবীকে ধারন করেন।
বাস্তুশাস্ত্রমতে প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য করে আমরা যদি আমাদের বাসস্থান বা কর্মস্থলের নকশা তৈরী করি, তা হলে সেখানকার বাসিন্দা বা কর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠবে এবং জীবন কাটবে অপার সুখশান্তিতে।
বাস্তুশাস্ত্র মেনে চলতে হলে বাস্তুতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে হবে
১) জমির উত্তরে এবং পূর্ব দিকে রাস্তা থাকলে তা যেন প্লট থেকে নীচু হয়। সেক্ষেত্রে বাড়ি করার সময় ভিতটি বেশ খানিকটা উঁচু করে নিতে হবে।
২) যেখানে রাস্তা টি বা ওয়াই ক্রস সেকশনে ভাগ হয়ে গিয়েছে, তার উল্টোদিকের জমি কখনও কিনবেন না। যেখানে রাস্তা বাঁক নিচ্ছে, সেই প্লটে ফ্ল্যাট কেনাও বাস্তু অনুযায়ী একেবারেই ভাল না।
৩) ব্রিজের ধারের জমি কেনা বাস্তু মতে খারাপ। আবার যে জমিতে খরার ফলে ফাটল ধরেছে তেমন জমিও কেনা উচিত নয়।
৪) অনেক বাস্তুশাস্ত্রীরা বলেন, কানাগলির শেষ প্রান্তে বাড়ি হলে সে বাড়িতে খুব সহজেই কুশক্তির বাসা হয় এবং বাড়ির মালিকের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়।
৫) দক্ষিণ-পূর্ব দিক উঁচু হয় যে প্লটের, তেমন প্লটের বাড়িতে সুখ-সমৃদ্ধি আসে আর উল্টোটা হলে আর্থিক ক্ষতি হয়। আবার বাড়ির দক্ষিণ দিক যদি অন্যান্য দিকের থেকে উঁচু হয়, তবে বাসিন্দাদের শরীর-স্বাস্থ্য ভাল থাকে। দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এমন কোনও উঁচু গাছ যেন না থাকে, যাতে সূর্য় আড়াল হয়।
৬) লিভিং রুমের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে একটি অ্যাকোয়ারিয়াম রাথবেন, এতে সংসারে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য আসবে।
৭) প্যাঁচা, ইগল, যুদ্ধ, ক্রুদ্ধ ব্যক্তি বা ক্রন্দনরত মহিলার ছবি ঘরের মধ্যে রাখবেন না। এমন কোনও ছবি যদি থাকে, অবিলম্বে সরিয়ে ফেলুন।
৮) বাড়ির দরজার গোড়ায় উইন্ড চাইম ঝোলান। হাওয়ায় ক্রমাগত দুলে যে মৃদু আওয়াজ তৈরি হয় তাতে বাড়ির ভিতরে পজিটিভ এনার্জির সঞ্চার হয়।
৯) বেডরুমে কোনও আয়না না রাখাই ভাল। যদি তা সম্ভব না হয় তবে এমন জায়গায় আয়না রাখুন যাতে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় আয়নাটি কোনও ভাবেই দেখা নাযায়। বিছানার সামনে আয়না থাকলে ঘুমের ব্যাঘাত তো হয়ই পাশাপাশি পরিবারে রোগব্যাধির প্রকোপ দেখা যায়।
১০) বাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রান্নাঘর হওয়াই বাস্তু মতে ঠিক। তা যদি না হয় তবে অন্তত ওভেন বা স্টোভটি দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রাখুন। আর রান্নাঘরে কখনোই ওষুধপত্র রাখবেন না।
১১) নেমপ্লেট ছাড়া বাড়ি বাস্তু অনুযায়ী ঠিক নয়। তাই সুন্দর করে নিজের ও পরিবারের অন্যান্যদের নাম লেখা নেমপ্লেট অবশ্যই লাগাবেন।
১২) বাড়িঘর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হল সবচেয়ে বড় বাস্তু। মেঝে, আসবাব-পত্র ইত্যাদি ঝকঝকে তকতকে রাখবেন। বাড়ির চৌকাঠে জল না ঢালতে পারলেও দিনে একবার অন্তত মুছে নেবেন।
১৩) ইশান কোণের দিকে মুখ করে বিছানা পেতে, ওইদিকেই মাথা করে শোওয়া সবচেয়ে ভাল। না পারলে পূর্বদিকে মাথা করে শোবেন। তবে কখনোই ইশান কোণটি ব্লক করবেন না। বলা হয় বাস্তুদেবতা থাকেন ইশান কোণে। তাই সব সময় ওই কোণটি ফাঁকা রাখবেন।
১৪) বাড়িতে দিনে অন্তত একবার ধূপ জ্বালবেন এবং জানলা খুলে তাজা বাতাস ঘরে আসতে দেবেন। বাড়ির ভিতরে ভাল হাওয়া চলাচল হলে নেগেটিভ এনার্জি বাসা বাঁধতে পারে না
বাস্তুশাস্ত্রের থিম নিয়ে পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এর একটি মুভি আছে ।নাম "বাস্তুশাপ" ।এতে অভিনয় করেছেন -
রাইমা সেন,আবীর চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, চূর্ণী গাঙ্গুলি, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় । কলকাতার
চিত্রনাট্যকার কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় অসাধারন গল্প লিখেন ।তার বেশ কিছু মুভি আমি আগে দেখেছি । একবারে ভিন্ন স্বাদ দিতে পারে।
তার সব গুলা মুভিতেই ভিন্নতা আনার চেষ্টা করেন।
নিউ নিয়র্কের বেস্ট সেলার রাইটার নিকোলাস স্পার্কের সাথে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় আমি মিল খোঁজে পাই।নিকোলাস স্পার্ক যেমন তরুনদের ভাল লাগা,ভিন্নতা নিয়ে চিত্রনাট্য লিখেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় তেমনি ।
বাস্তুশাপ
লাফিং বুদ্ধ
চীনের একটি প্রাচীন বাস্তু বিদ্যা হলো ফেংশুই। ঘরের পরিবেশের সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে কীভাবে জীবনে উন্নতি সাধন করা যায়, এই বিদ্যা সেই বিষয়ে পরামর্শ দেয়। অর্থের অভাব দূরকরার জন্য কী করা যেতে পারে, সে বিষয়ে ফেংশুই নির্দিষ্ট পরামর্শ দিয়েছে।
লাফিং বুদ্ধ বলতে পূর্বে আমি গৌতম বুদ্ধকেই জানতাম ।আমার ধারনা ভূল ছিল ।চীনের একজন সন্যাসী ছিলেন লাফিং বুদ্ধ ।যার নাম চীনে বুদাই বা পুতাই, ভিয়েতনামে বোডাই, জাপানে হোতেই নামে ডাকা হয়।
ফেংশুই মতে বেডরুমেও একটি লাফিং বুদ্ধ রাখুন। এর ফলে ঘরে পজিটিভ এনার্জি আসবে। মন হাল্কা হবে ও ভালো ঘুম আসবে। লাফিং বুদ্ধ ধন ও স্বাস্থ্যের প্রতীক। বেডরুমে লাফিং বুদ্ধ রাখলে ধন ও দাম্পত্য জীবনে প্রেম বাড়বে। পাশাপাশি আর্থিক বাধাও দূর হবে।
লাফিং বুদ্ধ কে নিয়ে বিস্তারিত পাবেন -
খাটাশ ভাইয়ের ব্লগে -
লাফিং বুদ্ধ
পোষ্টের সোর্স লিংক -
উইকিপিডিয়া
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:০৫