গোটা ইউরোপের জন্য দুঃসংবাদ হলো তাদের জনসংখ্যা দিন দিন শুধু কমেই যাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) সদস্য ২৭টি দেশের বর্তমান মোট জনসংখ্যা ৪৮ কোটি ২০ লাখ। জাতিসংঘের হিসাব অনুসারে ২০৫০ সাল নাগাদ ওই দেশগুলোর মোট জনসংখ্যা কমে ৪৫ কোটি ৪০ লাখে দাঁড়াবে। ইউরোপের দেশগুলোর কথা আলাদাভাবে বিচার করলে দেখা যাবে কয়েকটি দেশের জনসংখ্যা কমছে নাটকীয়ভাবে।
২০৫০ সাল নাগাদ ইতালির জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ থেকে কমে ৪ কোটি ৫০ লাখে এবং স্পেনের জনসংখ্যা ৪ কোটি থেকে নেমে ৩ কোটি ৭০ লাখে দাঁড়াবে। আর জার্মান ব্যাংকের (Deutsche Bank) হিসাব অনুসারে চলতি শতাব্দী শেষ হবার আগেই জার্মানির জনসংখ্যা ৮ কোটি থেকে কমে মাত্র আড়াই কোটিতে দাঁড়াবে। যদি জার্মানি প্রতিবছর আড়াই লাখ করে অভিবাসীও গ্রহণ করে তবুও ওই সময়ের মধ্যে জার্মানির জনসংখ্যা কমে হবে পাঁচ কোটি!
উল্লেখ্য, জনসংখ্যা কমার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ইউরোপে বাড়ছে পেনশনভোগী নাগরিকদের সংখ্যা এবং কমছে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা। এর যেমন অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়া আছে, তেমনি আছে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া। কর্মক্ষম লোকের সংখ্যা কমার অর্থ দেশের অর্থনীতিকে সামনে টেনে নেয়ার শক্তি কমে যাওয়া। ওদিকে ক্রমবর্ধমান পেনশনভোগীরা, ক্রমহ্রাসমান কর্মক্ষম নাগরিকদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পরিস্থিতি আরো খারাপ করে দিচ্ছে। মনে রাখতে হবে জার্মানি, ফ্রান্স ও ইতালির মতো ইউরোপীয় দেশগুলোতে কর্মক্ষম ব্যক্তিদের ট্যাক্সের অর্থে পেনশনভোগীদের পেনশন দেয়া হয়। আর ওইসব দেশে পেনশনের পরিমাণও অনেক বেশি। এখন ক্রমবর্ধমান পেনশনভোগীদের পেনশনের অর্থ যোগানের জন্য ক্রমহ্রাসমান কর্মক্ষম নাগরিকদের উপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপানো হচ্ছে একটি উপায়।
কিন্তু এ পথ মাড়াতে গেলে সরকারগুলোকে অবধারিতভাবেই পড়তে হবে রাজনৈতিক সঙ্কটে। বিকল্প হিসেবে পেনশনভোগীদের সুযোগ-সুবিধা কমানো যেতে পারে। কিন্তু গত বছর সে চেষ্টা করে ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, ইতালি ও জার্মানীতে সংশ্লিষ্ট সরকারগুলো শ্রমিকদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে পড়েছিলো। ইউরোপে আলোচ্য সমস্যা ধীরে ধীরে কী ভয়াবহরূপ ধারণ করতে চলেছে তা বোঝাতে এখানে আরো কিছু তথ্য দেখা যায়- ইউরোপে বর্তমানে প্রতি একশত জন কর্মক্ষম ব্যক্তির বিপরীতে পেনশনভোগী আছে ৩৫ জন; ২০৫০ সাল নাগাদ ইউরোপে প্রতি ১০০ জন কর্মক্ষম ব্যক্তির বিপরীতে পেনশনভোগীর সংখ্যা হবে ৭৫ জন; জার্মানির করদাতারা দেশে পেনশন স্কীমে এখনই নিজেদের আয়ের ২৯ শতাংশ দিচ্ছে; ইতালির করদাতারা সেদেশে পেনশন স্কীমে দিচ্ছে নিজেদের আয়ের শতকরা ৩৩ ভাগ; ইত্যাদি ইত্যাদি।
পরিস্থিতি ইতোমধ্যে ইউরোপের কোনো কোনো দেশকে ভোগাতে শুরু করেছে। সামনে ভোগান্তির মাত্রা দ্রুত বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষকরা। সমস্যা হবে ইইউ’র সদস্য দেশগুলোর নিজেদের মধ্যেও। তবে বিশেষভাবে আরো উল্লেখ্য যে, শুধু ইউরোপেই নয় বরং জনসংখ্যাবিদদের মতে আগামী পঞ্চাশ বছরে এশিয়ায় জাপানের জনসংখ্যা অর্ধেক কমে যাবে।
আর এই যখন প্রকৃত অবস্থা তখন এদেশে তথা মুসলিম বিশ্বে এখনও বেশ কিছু তথাকথিত দ্বীনি ও দুনিয়াবী শিক্ষিত লোক জন্ম নিয়ন্ত্রণের পক্ষে বলে থাকে। এমনকি ধর্মব্যবসায়ী মাওলানারা এর স্বপক্ষে কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর দলীল উপস্থাপন করে কিছু বই-পুস্তকও প্রণয়ন করে বলছে যে, “জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পূর্ণ ইসলাম সম্মত।” নাঊযুবিল্লাহ! আর বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমেও এর প্রয়োজনীয়তা ঢালাওভাবে প্রচার করে জনগণকে এর প্রতি উদ্বুদ্ধও করা হয়ে থাকে।
মূলত জন্ম নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে- একটি আন্তর্জাতিক চক্রান্ত, যার মাধ্যমে মুসলমানদের চরিত্র নষ্ট করার তথা মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি ঠেকিয়ে তাদের সংখ্যা হ্রাস করার একটি নীল নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ তিনি করেন, “তোমরা এমন মেয়ে বিয়ে করো যাদের সন্তান অধিক হয়। কেননা, ক্বিয়ামতের ময়দানে আমার উম্মাহর আধিক্য দ্বারা আমি অন্যান্য নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাঝে ফখর করব।” সুবহানাল্লাহ!
প্রখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী ইবনে খালদুনের মতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রগতিকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। মূলত জনসংখ্যা মানব সম্পদ। কাজেই এর হ্রাস নয় বরং যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমেই মুসলমানদের দ্বীন ও দুনিয়ার উন্নতি সম্ভব। তাই ইহুদীরা নিজেদের সংখ্যা হ্রাসের ভয়ে তথা মুসলমানদের উন্নতি রোধকল্পে মুসলমানদের জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে ঠেকিয়ে রাখতে চায়। অতএব, মুসলমান সাবধান হোন, সচেতন হোন।
এ ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে ইহুদী-খ্রীষ্টানরা আমাদের দেশসহ সব মুসলিম অঞ্চলে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনে তহবিল দিচ্ছে। প্রত্যেক মুসলিম সরকারকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে বাধ্য করছে। জোর পূর্বক মুসলিম পূরুষদের স্হায়ীভাবে পুরুষত্বহীন (ভ্যাসেকটমি) করে দিচ্ছে। এজন্য দালাল নিয়োগ করেছে। বিনিময়ে প্রতারণার শিকার মুসলিম পূরুষদের দিচ্ছে ২ হাজার টাকাও একটি নতুন লুঙ্গি। আর দালালদের দিচ্ছে তিন শ’ টাকা। এজন্য দালালরা প্রতারণা করে জোর পূর্বক নির্দিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে পুরুষত্বহীন করে দেয়। আর অনুরুপ মহিলাদেরকেও স্থায়ীভাবে বন্ধ্যা বানিয়ে দেয়া হয়।
যেমন, জন্মনিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের অধীনে ইহুদী-খ্রীষ্টানদের বিদেশী ফান্ডের সহায়তায় আজিমপুরের মাতৃসদন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুরুষের ভ্যাসেকটমি অপারেশন করছে। ইতিমধ্যে এ প্রক্রিয়ায় গত এক বছরে প্রায় তিন হাজার পুরুষের সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা বিলুপ্ত করেছে তারা। সূত্র জানায়, কোন পুরুষই স্বেচ্ছায় তার সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা লুপ্ত করার জন্য সেখানে যান না। একারণে ওই প্রকল্প কর্তৃপক্ষ মাতৃসদন হাসপাতালের দালাল সিন্ডিকেটের সহায়তা নিচ্ছে। তাদের কাছে প্রকল্প পরিচয়পত্র সরবরাহ করে অসহায় লোকজন সংগ্রহ করছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের একজন প্রভাবশালী দালাল বলে, তাদের প্রথম টার্গেট অসহায় ও নেশাগ্রস্ত লোকজন। এরপর রিকশাওয়ালা ও সহজ-সরল অভাবী লোকজনকে নানা কৌশলে সংগ্রহ করেন। তাদের সবাইকে নগদ টাকার লোভ দেখানো হয়। শুধুমাত্র একটি ইনজেকশন পুশ করার বিনিময়ে দুই হাজার টাকা, একটি লুঙ্গি ও একটি কার্ড দেয়ার প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবে রাজি হলে তার অণ্ডকোষের নিচের রগ কেটে দিয়ে সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট করা হয়। এভাবে রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দরিদ্র, মাদকসেবী ও পথচারীদের নানা কথা বলে হাসপাতালে আনা হয়। এক্ষেত্রে একজন ধরতে পারলে তিন শ’ টাকা পাওয়া যায়। আর ভিকটিম পায় নগদ দুই হাজার টাকা ও একটি নতুন লুঙ্গি।
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৩:৩৮