যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে হুলিয়া মাথায় নিয়ে পলাতক আবুল কালাম আযাদকে (বাচ্চু রাজাকার) দেশে ফেরত আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন।
তিনি মঙ্গলবার বনানীতে নতুন থানার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “তার অবস্থান সনাক্ত করে আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে ফেরত আনব।”
আবুল কালাম পাকিস্তানের পাড়ি দিতে ভারতে পালিয়েছেন বলে এক দিন আগেই জানায় র্যাব।
একাত্তরে ফরিদপুরে পাকিস্তানের মদদপুষ্ট রাজাকার বাহিনীতে ‘সক্রিয়’ এই ব্যক্তির ছেলেদের উদ্ধৃতি দিয়ে এই বক্তব্য জানানো হয়।
পালাতে সহায়তার অভিযোগে আবুল কালামের দুই ছেলে শাহ মোহাম্মদ ফয়সাল আজাদ (৩৬), আবুল কাশেম মুহাম্মদ মুশফিক বিল্লাহ জিহাদ (৩৪) এবং শ্যালক কাজী এহতেশামুল হক লিটনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
আবুল কালাম গত ৩০ মার্চ ঢাকা ছাড়েন এবং ২ এপ্রিল উত্তরাঞ্চলের হিলি সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান বলে তার স্বজনরা র্যাবকে জানিয়েছে; যদিও গত ৩ এপ্রিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আগ থেকে পুলিশ বলে আসছিল, জামায়াতে ইসলামী সংশ্লিষ্ট এই ব্যক্তি নজরদারিতে রয়েছেন।
আবুল কালামের পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের ব্যর্থতা ছিল কি না- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
ড. ইউসুফ নামে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষক তার গাড়িতে করে বাচ্চু রাজাকারকে হিলি সীমান্তে নিয়ে যান বলে জানায় র্যাব।
জিহাদ র্যাব হেফাজতে তার বাবার পালিয়ে যাওয়ার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ৩০ মার্চ রাতে ড. ইউসুফের আগারগাঁও বাসায় যাওয়ার পর সেখান থেকে তার একটি কালো গাড়ির পেছনে শুইয়ে তার বাবাকে হিলি সীমান্তে নেওয়া হয়।
“বাবা ভারতে যাওয়ার পর মামার সঙ্গে ৩ এপ্রিল মোবাইলে যোগাযোগ করে দেশের খোঁজ-খবর নেন, এসময় বাবা জানতে পারেন, তার নামে ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে,” বলেন তিনি।
ভারতে নিরাপদে রয়েছেন বলে আবুল কালাম শ্যালক এহতেশামুলকে জানান বলে জিহাদ জানিয়েছে।
গত ৩ এপ্রিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর পুলিশ ওই দিনই আবুল কালামকে গ্রেপ্তারের জন্য তার বাসা অফিসসহ রাজধানী এবং তার আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।
তার উত্তরখানের বাসায় অভিযান চালানোর পর না পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার সুনন্দা রায় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “বাচ্চু রাজাকার নজরদারির মধ্যে ছিল। তবে নজরদারির মধ্যে কিছুটা দুর্বলতা ছিল বলে বাসা থেকে পালিয়ে যেতে পেরেছে।”
নজরদারির দুর্বলতা ছিল কি না- প্রশ্ন করা হলে র্যাব কর্মকর্তা সোহায়েল বলেন, “তিনি বৈধভাবে যাননি। আর সীমান্ত অনেক বড় এলাকাজুড়ে। ফলে পুরোটা খোঁজ নেওয়া সম্ভব হয়নি।”