[[ এই লেখার উদ্দ্যেশ্য গালাগালি পরিহার করে লজিকালি / বিজ্ঞানের সাহায্যে নাস্তিকতার আসাড়তা ব্যাখ্যা করা । চেষ্টা করা হয়েছে কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা – যা বিজ্ঞানের ছাত্র নন এমন ব্যক্তির বোধগম্য হবে না – তা পরিহার করার । এবং ধর্মগ্রন্থের উদ্ধৃতি যথাসম্ভব কম ব্যবহার করার এবং সংক্ষেপে লেখার ]]
ভূমিকা বাদ । সরাসরি কাজের কথায়...
প্রথমেই মনে করি সৃষ্টিকর্তা নেই ।
এখন সেই চিরাচরিত প্রশ্ন উঠবে যে মহাবিশ্ব কোথা থেকে এল?? উত্তরও রেডি আছে – বিগ ব্যাং । প্রবলেম সলভড, ঠিক?? না । প্রবলেম মাত্র শুরু । থিয়োরী অনুযায়ী একটা সুপার এটম থেকে বিগ ব্যাং সংঘটিত হয় । এই সুপার এটম কোথা থেকে এল সেটা একটা প্রশ্ন, তবুও যদি একে কন্সট্যান্ট বা ধ্রুব ধরে নেই তারপরেও কথা থাকে । সুপার এটম অবশ্যই একটা নির্দিষ্ট সময়ে বিস্ফোরিত হয় – নির্দিষ্ট সময় – হকিং এর কথা মতে “এট দ্য ভেরি বিগিনিং মোমেন্ট অফ টাইম”, এই হল সময়ের শুরু । তো, এই সময়ের শুরু কিভাবে / কার দ্বারা নির্ধারিত হল ? কেন এর পূর্বে ( যদিও পরিমাপ করার মত সময় বলে কিছু নেই তখন ) এর বিস্ফোরন ঘটল না ? অথবা কেন বিগ ব্যাং ঘটল? কেন সুপার এটম “থ্রু দ্য অল ইটারনিটি” সুপার এটম হয়েই থাকল না?? এই সকল প্রশ্নের উত্তর বিজ্ঞান এখনও খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে । সবচে সহজ এবং যৌক্তিক উত্তরকে পাশ কাটিয়ে । তা হল একজন কেউ এই ঘটনাটা ঘটিয়েছে, তাই এর নির্দিষ্ট সময় আছে, যা ছিল ঘটনার কারিগরের ইচ্ছামাফিক । একটা কাজ সম্পন্ন হয়েছে তার মানে অবশ্যই এর উপকরণ এবং প্রযোজক আছে । উপকরণ সুপার এটম, অথবা গডস পারটিকেল ( হিগস বোসন কণা ) , আর কর্তা ?? কৃত কাজের কর্তাটি কে? এখন এই কারিগর বা স্রষ্টার আইডিয়া “আধুনিক বিজ্ঞান মনস্ক” ব্যক্তিগণের কাছে খুবই অগ্রহণযোগ্য । অথচ বিজ্ঞানই বলে যে বল প্রয়োগ করে কাজ করতে হয়, কেউ একজন বল প্রয়োগ না করলে, বল শূন্য থাকলে কাজের পরিমাণও শূন্য । কাজেই দেখা যাচ্ছে বিজ্ঞান আসলে সমস্যা না, সমস্যা হল মানুষ নিজে ।
এরপরে আসা যাক মহাবিশ্বের ভেতরে । অসংখ্য গ্রহ, উপগ্রহ, সূর্য, দ্বৈত সূর্য, ব্ল্যাক হোল হয়ে যাওয়া মরা সূর্য, ধুমকেতু ইত্যাদি ভর্তি । অথচ সব কিছু কেমন সুবিন্যাস্ত । উত্তর আছে – গ্র্যাভিটি । কিন্তু এর কোন ব্যাখ্যা নেই । মূল সুত্র মতে মহাবিশ্বের যে কোন দুটি বস্তু কনা একে অপরকে আকর্ষণ করে তাদের সংযোগকারী সরলরেখা বরারবর – কিন্তু কেন আকর্ষণ করে এর কোন উত্তর নেই । একটা ম্যাটার আরেকটা ম্যাটারকে কেন টেনে আনবে? কারণ এটা তাদের ধর্ম । এখন যেহেতু “বিজ্ঞান মতে” এদের কোন সচেতনতা নাই, তাহলে এত জটিল গাণিতিক নিয়ম তারা কিভাবে মেনে চলছে? কেন তাদের এই নিয়ম ভংগ করার ( স্বতঃস্ফূর্ত ) ক্ষমতা নাই? হুম, উত্তর আছে, কারিগরের নিয়ম । কিন্তু বিজ্ঞান আবার পাশ কাটাবে । কারণ কিছু জিনিস বিজ্ঞানে ফান্ডামেন্টাল, বেসিক । এইসব কে সঠিক ধরে না নিলে সামনে এগিয়ে যাবার উপায় নেই । দেখা যাচ্ছে ধর্মকে একা দোষ দিয়ে এলেও বিজ্ঞান নিজেই কিছু ব্যাপারে গোড়ামি করে । যাই হোক, এখন পর্যন্ত মানবজাতির পর্যবেক্ষণে মহাবিশ্বের যে অকিঞ্চিৎকর অংশ ধরা পড়েছে তার সবটাই মোটামুটি এক, হয় অতি গরম – না হয় অতি ঠান্ডা – এক কথায় মরুভুমি বা নরকতূল্য । একটা জায়গা বাদে – পৃথিবী । পৃথিবীর কক্ষপথের ব্যাস আরেকটু বেশি হলে কি হত ? শুক্রের দিকে তাকান । আর আরেকটু কম হলে? মঙ্গল আছে উদাহরণ । তো, এই পারফেক্ট প্লেসমেন্ট এর কারণ কি? মহাজাগতিক এক্সিডেন্ট! এই এক এক্সিডেন্ট এ আমাদের গ্রহ জীব বৈচিত্রে গিজ গিজ করছে । এক্সিডেন্টে গড়ে উঠেছে এক দারুণ সমৃদ্ধ এবং জটিল কিন্তু ব্যালেন্সড ইকোলজিক্যাল সিস্টেম । তবুও সেটা মেনে নেয়া গেল । পৃথিবীতেই প্রতিদিন কত লাখ লাখ এক্সিডেন্ট হচ্ছে, মহাবিশ্বের মত জায়গায় তো দু একটা না ঘটাই আরেক এক্সিডেন্ট! কিন্তু এক্সিডেন্টে কোন কিছু সুবিন্যাস্ত হয়ে পরে সেটা জানা ছিল না, বরং উল্টোটাই সত্যি হবার কথা । আর জলবায়ু তৈরি হওয়া এক কথা, প্রাণ সৃষ্টি হওয়া পুরোপুরি আলাদা কথা । বারজেলিয়াসের জৈব যৌগের প্রাণশক্তি মতবাদ এ এদিকে ইঙ্গিত ছিল যে এটা আসলে কারিগরের ইচ্ছা বা শক্তি । কিন্তু ল্যাবে ইউরিয়া তৈরি করেই তার ছাত্র প্রাণশক্তি মতবাদ ভুল প্রমাণ করে ফেললেন । আফসোস, জৈব যৌগ আর “প্রাণ / জীবন / সচেতনতা” এক না । একটা মৃতদেহও জৈব যৌগ । তাহলে একটা জীবিত দেহের সাথে এর পার্থক্য কি? শুধু এই যে এর হার্ট আর পাম্প করছে না ? কেন করছে না?? কেন জীবিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে করছে বিরামহীন ভাবে?? উত্তর নেই । আসলে আছে, কিন্তু বিজ্ঞান পাশ কাটাতেই ভালোবাসে । বর্তমানে “আত্মার ওজন ২১ গ্রাম” – এই নিয়ে কিছু আলোচনা কানে এসেছে, এটা আদৌ বিজ্ঞান নাকি হোক্স ঠিক নিশ্চিত না আমি, তাই এই ব্যাপারে কিছু লিখলাম না । তবে আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি ফিজিক্সিস্ট এর চাইতে ফিজিশিয়ান ( মেডিক্যাল সাইন্টিস্ট ) সাধারণত বেশি আস্তিক হন । হয়ত জীবন নামের রহস্যময় আরাধ্য বস্তুর সাথে বেশি সংস্পর্শতার কারণেই...
এমন অনেক বিষয় আছে যা বিজ্ঞান আগে ব্যাখ্যা করতে পারত না, এখন পারে । তাই অনেকে বসে আছে, যেদিন বিজ্ঞান কারিগরের অস্তিত্ব প্রমাণ করবে সেদিনই বিশ্বাস করবে – তার আগে নয় । হায়, তারা বুঝে না, বিজ্ঞান সকল ক্ষেত্রে কারিগরের অস্তিত্ব প্রমাণ করে বসে আছে । যেমনটা বলেছিলাম, সমস্যা বিজ্ঞান না, মানুষ ।
শেষ করার আগে সহজ একটা প্রশ্ন করি বিজ্ঞান মনস্ক মানুষদের জন্য,
আগুন কি? পদার্থ না শক্তি??
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৩৬