ইসলামই সৃষ্টিকর্তার নিকট গ্রহনযোগ্য একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম সম্প্রীতির ধর্ম। কিন্তু আজ এই মহান ধর্মকে বিতর্কিত করছে ইসলামের সেবক নামধারী কিছু মানুষ, যারা সবসময়ই ধর্মকে তাদের ব্যবসার পূঁজি হিসাবে ব্যবহার করে আসছে। কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করলেই বিষয়টি সবার কাছে পরিস্কার হবে বলে আশা রাখি।
আমরা যারা ইসলামের অনুসারী তারা মুসলমান নামে পরিচিত। আমাদের আদর্শ প্রিয় নবী, সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা: )। বিদায় হাজ্জের ভাষনে প্রিয় নবীজি নিজ মুখেই বলে গেছেন আমি আমার উম্মতের জন্য পথনির্দেশিকা হিসাবে রেখে যাচ্ছি মহান আল্লাহ তা’আলার পবিত্র কুরান মজিদ আর নবীজির সুন্নাহ এবং হাদীস।
এখানেই জামাতে ইসলামীর সাথে ইসলামের সবচেয়ে বড় পার্থক্যটা রয়ে গেছে। মুসলমানদের পথনির্দেশিকা হলো কুরান, হাদীস আর সুন্নাহ, আর জামাতে ইসলামীর পথনির্দেশিকা হলো একজন বিধর্মী ড: মরিচ বুকাইলি রচিত এবং আবু আলা মওদুদীর অনুবাদকৃত কুরান হাদীসের কিছু অপব্যাখ্যা।
শুধু এখানেই নয়, জামাতে ইসলাম কথায় কথায় জিহাদের কথা বলে। ইসলামী দৃষ্টিকোন থেকে জিহাদ দুই প্রকার ১) জিহাদী আকবর ২) জিহাদী আসগর।
জিহাদী আকবর হলো সবচেয়ে বড় জিহাদ যা একজন মুসলমানের সবসময়ের জন্য প্রয়োজন আর জিহাদী আকবরের সঙ্গায় বলা হয়েছে “কু-প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাই হলো জিহাদী আকবর”। এবার আসা যাক কু প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ বলতে কি বোঝায়। আর কিছুই না, মানুষ হিসাবে আমাদের যে ষড় ঋপু বা শত্রু রয়েছে সে গুলিকে পরাস্ত করে উন্নত চরিত্র গঠন। আর এই ছয় শত্রু হলো – লোভ, মোহ, কাম, ক্রোধ, মদ ও মাৎশর্য। কিন্তু আজকের জামাতে ইসলাম কি এই ছয় শত্রুকে জয় করতে পেরেছে! ১৯৭১ সালে ধর্ষন, লুন্ঠন, অগ্নীসংযোগ, হত্যাসহ তাদের মানবতাবিরোধী অপরাধগুলিই বলে দেয় তারা কত বড় জিহাদী?
জিহাদী আসগর বলতে বুঝানো হয়েছে ধর্মযুদ্ধ। কিন্তু আজ তারা কোন ধর্মযুদ্ধ করছে? বোমামেরে অন্যএকজন মুসলমানকে হত্যা করা, অগ্নীসংযোগ করে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারা আর বায়তুল মোকাররমে অগ্নি সংযোগ করে স্যাবোটাজ করতে চেয়ে তারা প্রমাণ করতে চায় তারা জিহাদ করছে (জিহাদী আসগর)!
এবার আসি তাদের আরও কিছু ভন্ডামীতে। ইসলামী ব্যাংকের নামে তারা ব্যবসা করছে এবং বলছে তাদের মূলনীতি সুদ নয় মুনাফা। তাদের ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হয় লাভ লসের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে। কিন্তু কেউ কোনদিন শুনেছেন কোন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আপনি ব্যবসা করে লস করেছেন আর ব্যাংক তার দায় নিয়েছে?
ইসলামে সুদকে হারাম করা হয়েছে, যা ইসলামী ব্যাংক ও স্বীকার করে এবং বলে তারা সুদ নয় মুনাফা নিয়ে কারবার করে। কিন্তু সুদ ও মুনাফার মধ্যকার পার্থক্য কি তাদের জানা নেই, নাকি তারা জেগে জেগে ঘুমান! আমরা সবাই জানি কোন বিনিয়োগ বা আমানতের বিপরীতে পূর্ব নির্ধারিত কোন চার্জ সুদ নামে পরিচিত আর মুনাফা বা ক্ষতি নিরুপিত হয় প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে বা কোন অর্থবছর শেষে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ইসলামী ব্যাংক তার বিনিয়োগে বা আমানতে পূর্ব নির্ধারিত কোন চার্জ ধার্য করে কি না। আমার মনে হয় এ প্রশ্নের উত্তর আর আমার দেয়ার দরকার নেই, সারা দেশের মানুষ এটা জানে।
কাজেই জামাতে ইসলাম কোন ইসলামী দল নয়, জামাতে ইসলাম আর ইসলাম এক নয়। ইসলামী ব্যাংক ইসলামের মূলনীতি মানে না। তারা আধুনিক পূঁজিবাদের ধারক বাহক এবং ধর্মের লেবাস পরিহিত ধর্মব্যবসায়ী যারা সাধারন মানুষকে ধোকা দেয় ধর্মকে পূঁজি করে।
তাই বলতে ইচ্ছা হয়-
“আজকে দেখি স্বাধীনতার শত্রুরা ঐ যায়, মুখে তাদের মিষ্টি বুলি সাধুর পোষাক গায়”।