ডিজিটাল যুগ। সবাই মুখ দিয়ে যা উচ্চারন করে তাই সিগন্যালে কনভার্ট হয়ে 3G প্রযুক্তির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু উপগ্রহ-১ এ চলে যায়। সেখান থেকে ডাটাগুলো বিশেষ গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে একটি বিশেষ তথ্য গ্রহন স্টেশনে চলে আসে। সেখানে সিগন্যাল কনভার্ট হয়ে আবার মানুষের কথা হয়ে যায় যেগুলা খুবই সূক্ষ্মভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়। সরকারের বিরুদ্ধে কে কে কথা বলে তা চিহ্নিত করার জন্য সরকার এই স্পেশাল বাহিনী গঠন করেছে। সবার কণ্ঠ যাতে চেনা যায় এজন্য সবার কণ্ঠস্বরের স্যাম্পল একটি বিশাল ডাটাবেসে সংরক্ষিত আছে।
রাত ২ টা। বিভিন্ন সিগন্যাল গ্রহন করে তা যাচাই বাছাই করছিল স্পেশাল বাহিনীর কয়েকজন কর্মী। কয়েকটি সিগন্যাল কনভার্ট হবার পর তারা দেখে যে সেগুলা আসলে বিখ্যাত শিল্পীদের গাওয়া কয়েকটি গান যেগুলা মাত্রই গাওয়া হয়েছে। গানের সুর তাদের পরিচিত হলেও গানের কথাগুলা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। গানগুলো শুনে সেই স্পেশাল বাহিনী ঐ বিখ্যাত শিল্পীদের নামে দেশদ্রোহী মামলা দিয়ে দেয়। যদিও গোপনীয়তার দোহাই দিয়ে গানের কথাগুলো প্রকাশ করা হয়নি জনসম্মুখে। কিন্তু, জনগনের আগ্রহের কমতি নেই। কি এমন গান তারা গেয়েছিল যার জন্য তাদের মীর জাফর উপধি দেয়া হল!
কি ছিল সেই গানের কথা??? সবার তুমুল আগ্রহ দেখে স্পেশাল সেই বাহিনীর নেটওয়ার্ক হ্যাক করে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ঐ দিনের সমস্ত ডাটা সংগ্রহ করে তা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ঃ
প্রথমেই শোনা যায় বিখ্যাত শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের করুন কণ্ঠে ভেসে আসা একটি গানঃ
সেই জানালার গ্রিলের ধারে সরু পর্দার পাশে দাঁড়িয়ে
এই বৃদ্ধ বয়সেও আমি এখনো রয়েছি হাত বাড়িয়ে-
কারেন্ট আসবে, এবার আসবে,
কারেন্ট আসবেএএএ নাকি আসবে না!
তারপরেই শোনা যায় এক সময়কার জনপ্রিয় শিল্পী আসিফের সেই জনপ্রিয় গানের মত একটি গানঃ
দেহের জমানো ঘাম, কান্নার লোনা জলে
ঢেউ খেলে ঘামের নদীতেএএএ
দুই ঘণ্টা আগে চলে গেছ তুমি
পারিনা তোমায় ছাড়া থাকতে-
ও কারেন্ট ও কারেন্ট তুমি কোথায়?
ও কারেএএন্ট ও কারেন্ট তুমি কোওওথায়?
এরপরেই ভেসে আসে মিহি কণ্ঠের অধিকারী হাসানের হতাশ কণ্ঠে গাওয়া একটি গানঃ
কাআরেন্ট! তুমি আর যেও না, অভিমান করোনা
দূরে দূরে থেকো না আআ
ঘুম আসে না,
এ এ এ ঘুম আসে না, নারে না
ঘুউউউম আসে না
তারপর শোনা যায় ব্যান্ড শিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর কণ্ঠে ভেসে আসা একটি গানঃ
এক সরকারে মারে বিদ্যুৎ আরেক সরকারে খায়
এক সরকারে মারেএ বিদ্যুৎ আরেক সরকারে খায়
আর জনগন আইসা দেখে কোন বিদ্যুৎ নাই
আমার তিন পুরুষ
তিন পুরুউউউষ আমার তিন পুরুষ
সবশেষে দেখা যায় লোডশেডিং-এ হতাশ বেস বাবা শেষ পর্যন্ত মৃত্যু কামনা করছেঃ
চারিদিকে আঁধার, ঘামের গন্ধ
স্রস্টার কাছে মিনতি দেখাও একটু আলো
দেশের এই অসুখটা বাড়ছে প্রতিদিনই
জীবনের শেষ ঘণ্টাটা-যে এখনো বাজতে বাকি
আমার যেন মৃত্যু হয় কারেন্ট আসার আগে
কারেন্টের কাছে আমার অনেক ঋণ আছে
তাই আমি পেতে চাই না ঐ কারেন্টটাকে
আমার যেন মৃত্যু হয় কারেন্ট আসার আগে
এই মাত্র এখানে কারেন্ট চলে যাবার জন্য বাকি সিগন্যালগুলো আর পাঠানো সম্ভব হয়নি
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১২ রাত ২:২১