প্রুডেনশিয়াল বিশ্বকাপ (১৯৮৩)
ফাইনাল
লর্ডস, লন্ডন, ২৫ জুন
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম ভারত
টস: ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ফলাফল: ৪৩ রানে ভারত জয়ী
ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ: মহিন্দর অমরনাথ
আগের পোস্টগুলোঃ
১ম বিশ্বকাপ ক্রিকেট (১৯৭৫): ফাইনাল ম্যাচ Review...
২য় বিশ্বকাপ ক্রিকেট (১৯৭৯): ফাইনাল ম্যাচ Review...
মহিন্দর অমরনাথ, কপিল, মদন লাল মিলে ১৯৮৩ এর ২৫ জুনকে ভারতের খেলাধুলার ইতিহাসের সেরা দিনে পরিণত করেন। সারা বিশ্বের কাছে ভারত হয়ে ওঠে জনপ্রিয়। স্বপ্নেও কোনও জুয়াড়ী ভারতকে ফেভারিট ধরেনি।
টসে জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিং-এ পাঠালো ভারতকে। সানি দ্রুত ফিরলেও লড়লেন শ্রীকান্ত-অমরনাথ।
মনে হচ্ছিল ২৫০-এর কোঠায় পৌঁছুবে ভারত।
কিন্তু নিয়তি তো নিজের নিয়মে হাসবেই। ৩৫ বলে ৫ উইকেট চলে গেল।
সবাই ভাবলো ভারতের ভরাডুবি হচ্ছে। টেনেটুনে ভারত ছুলো ১৮৩ রানের কোঠা।
উত্তেজনাহীন আরও একটা ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বিজয় দেখতেহবে ভেবে সবাই একটু বিমর্ষ হয়েছিল বোধ করি।
জবাবে প্রথম দিকে গ্রীনিজ আউট হলেও রিচার্ডস ৭টা চার মেরে ক্যারিবীয় শিবিরে উৎসব সৃষ্টি করলেন। ১১ ওভারেই রান ৫০/১। ক্যারিবীয়ান লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা ভাবছিলেন ‘কিং রিচার্ডস’ বোধ হয় আজ আর কাউকে গৌরবের ভাগীদার হতে দেবে না। হঠাৎ ক্যাচ উঠলো। অসম্ভব রকম একটি ক্যাচ। কপিল ছুটলেন। কিছু একটা করা যায় হয়তো। প্রায় ৩০ গজ দৌড়ে যখন ক্যাচটি ধরলেন তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্তব্ধ। এক সমর্থকতো মাঠেই ঢুকে কপিলকে জড়িয়ে ধরলো।
এখানেই শেষ নয়। লয়েডের ক্যাচটিও কপিল ধরলেন অবিশ্বাস্যভাবে। ক্যাপ্টেনের অসমান্য কৃতিত্ব অনুসরণ করলো সহযোদ্ধারা।
এরপর যা ঘটলো তা শুধু কিংবদন্তীতেই মানায়। বল সামান্য সুইং নিতে শুরু করলো। ক্যারিবীয়ানরা তা উপেক্ষা করলো আর ভারতীয়রা সুযোগ কাজে লাগালো, ফল হিসেবে রিচার্ডসের নেতৃত্বে মিডল অর্ডার ফিরলো ড্রেসিং রুমে।
অবস্থা যখন ৭৬/৬ তখন ডুজন আর মার্শাল জুটি বাঁধলেন। হাতে ২৬টি ওভার। রান আসতেই থাকলো। ১১৯-এ পৌঁছুলো নতুন কোনও আঘাত ছাড়াই। মনে হচ্ছিল, ম্যাচ ভারতের হাত থেকে ছুটে যাচ্ছে। এই সময় নিয়তি আবার বাঁক নিল। ব্যাটিং-এর দক্ষতার সাথে অমরনাথ যোগ করলেন বোলিং-এর কৃতিত্ব।
১৪০-এ বিশ্বশ্রেষ্ঠ ক্যারিবীয়রা অল-আউট।
রচিত হলো ভারতীয় ক্রিকেটের মাহেন্দ্রক্ষণ। অমরনাথ ভারতের জয়ের নায়কে পরিণত হলেন ৩ উইকেট নিয়ে।
মাঠ মাতলো, ভারত কাঁপলো এই আনন্দ উৎসবে। অনবদ্য এক খেলার কৃতিত্বে ভারত বিশ্বের সব ‘আন্ডারডগ’ টিমকে এক অনুকরণীয় অনুপ্রেরণাময় দৃষ্টান্ত উপহার দেয়। কোটি-কোটি ভারতীয়কে স্বপ্নের এক রাত উপহার দিল তারা। সৌভাগ্য আর নাটকীয়তার সংমিশ্রনে কপিল হয়ে গেলেন ভারতমাতার শ্রেষ্ঠ সন্তান।
প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় দল ততোটা শক্তিশালী না হলেও সৌভাগ্যক্রমে ঠিক সময়ে জ্বলে উঠতে পেরেছিল। সৃষ্টি হলো ইতিহস।
ইউটিউব ভিডিওঃ
সৌজন্যেঃ খেলার ভুবন
পরের পোস্ট
৪র্থ বিশ্বকাপ ক্রিকেট (১৯৮৭): ফাইনাল ম্যাচ Review...
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১১:০০