প্রুডেনশিয়াল বিশ্বকাপ (১৯৭৯)
ফাইনাল
লর্ডস, লন্ডন, ২৩ জুন
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম ইংল্যান্ড
টস: ইংল্যান্ড
ফলাফল: ৯২ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়ী
ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ: ভিভিয়ান রিচার্ডস
আগের পোস্টঃ
১ম বিশ্বকাপ ক্রিকেট (১৯৭৫): ফাইনাল ম্যাচ Review...
১৯৭৯ এর ২৩ জুন কিন্তু মন ভোলাতে পারেনি দর্শকদের। ইংল্যান্ডের শ্রদ্ধেয় অধিনায়ক ব্রিয়ারলী টসে জিতে ’৭৫ এর মতোই ক্যারিবীয়দের ব্যাটিং-এ পাঠান, সাফল্যও পান। ৫৫ রানে ৩ উইকেট পড়ে যায়। লয়েড এবার যাদু দেখাতে ব্যর্থ। ফলে অবস্থা ৯৯/৪। তবে যাবার সময় লয়েড দুই সাগরেদ কিং-রিচার্ডসকে দায়িত্ব দিয়ে যান। শুরু হলো আসল খেলা।
রিচার্ডসের ব্যাটকে যদি পিকাসোর তুলির সাথে তুলনা করা হয়, তবে কলিস কিং-এর ইনিংসটি ভ্যানগগের ‘সানফ্লাওয়ার’। অখ্যাতির অন্ধকার কিং ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা অ্যাটাকিং ইনিংস উপহার দিয়ে প্রকৃতই কিং হয়ে যান। ৬৭ বলে ৭৬ মিনিটে ৮৬ রান (৬×৩, ৪×১০) করে রিচার্ডসের সেঞ্চুরীর কৃতিত্বকেও ম্লান করে দেন।
একজন নিয়মিত বোলারের অভাব সেদিন ইংল্যান্ডের ভরাডুবি ঘটায়। আহত বব উইলিসের জায়গায় আরেকজন বোলারের পরিবর্তে অতিরিক্ত একজন ব্যাটসম্যান নামানোর মাশুল ব্রিয়ারলী হাড়ে-হাড়ে টের পেয়েছিলেন। বয়কট, গুচ, লার্কিন্স মিলে ১২ ওভারে ৮৬ রান দিয়েছিলেন।
২৩৮ রানের মাথায় অপূর্ব ইনিংস শেষ করে কিং বিদায় নিলেও রিচার্ডস সেদিন ছিলেন অজেয়।
বাকী ৫ জন ব্যাটসম্যান মিলে ৫ রান করলেও (৪ জনের ব্যক্তিগত সংগ্রহ ০) রিচার্ডস একা রান টেনে নিয়ে যান ২৮৬-তে। শেষ বলটিকেও তিনি সোজা উড়িয়ে দেন সীমানার বাইরে। রিচার্ডস অপরাজিত ১৩৮ রানের ইনিংসে৩টি ছক্কা আর ১১টি চার মারেন।
ইংল্যান্ডের শুরু কচ্ছপ গতিতে। তবে নীতি গল্পের মতো তারা কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অতিক্রম করতে পারেনি। বয়কট-ব্রিয়ারলীর কেতাবী খেলা ৩০ ওভারে মাত্র ৮৮ রান তোলে।
১২৯ রানে ১ম উইকেট পড়ে। রান্ডাল-গুচ রানের গতি বাড়াতে চেষ্টা করেন। অবস্থা ১৮৩/২। এরপর ওয়ানডে ইতিহাসের অন্যতম সেরা পিঠটান দেবার নজির স্থাপন করলো ইংল্যান্ড। আর মাত্র ১১ রান যোগ করে ৫১ ওভারে ১৯৪ রান করে অল-আউট! গার্নার আর ক্রফট লর্ডসে ‘ক্যারিবীয়ান হ্যারিকেন’ সৃষ্টি করেন। গার্নার ১১ বলে ৫ উইকেট নেন। দুইবার হ্যাটট্রিকের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন।
২য় বারের মতো লর্ডস থেকে কাপ নিয়ে লয়েড ওয়ানডে ক্রিকেটে ক্যারিবীয়ান দ্বীপপুঞ্জকে অবিসংবাদিত শ্রেষ্ঠত্ব দেন।
যুগ-যুগ ধরে ‘সাদা চামড়া’ ইংরেজদের হাতে শোষিত কলো মানুষের ব্যথিত রক্তকে রিচার্ডস সেদিন কিছুটা হলেও শান্তি দেন। তার এক একটি স্ট্রোকে যেন প্রতিশোধের আগুন জ্বলছিল। বিজয় আনন্দে মাঠ ভরে যায় দর্শকে। কালো মানুষের সমুদ্রে পরিণত হয় লর্ডস।
রাজত্ব স্থাপন করেন ‘ভিভিয়ান রিচার্ডস, কিং রিচার্ডস’।
ইউটিউব ভিডিওঃ
সৌজন্যেঃ খেলার ভুবন
পরের পোস্টঃ
৩য় বিশ্বকাপ ক্রিকেট (১৯৮৩): ফাইনাল ম্যাচ Review...
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১২:৩৮