কাহিনী সংক্ষেপঃ
নাটকের কাহিনী গড়ে উঠেছে এক যুবককে কেন্দ্র করে যে খুন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। যুবকটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রয়াত সালমান শাহ।
সে যে বাসার ছাদে ভাড়া থাকে তার নিচতলায় থাকে একটি পরিবার। পরিবারের সদস্য দুই মেয়ে (শমী কায়সার ও তমালিকা কর্মকার), মা (ডলি জহুর) এবং বাবা (আবুল কাশেম)। শমী কায়সার অন্ধ আর তমালিকা মেডিকেল স্টুডেন্ট। আবুল কাশেম নির্ঝঞ্ঝাত একজন শিক্ষক কিন্তু ডলি জহুর একদম ঝামেলা পছন্দ করেন না। তাছাড়া তাদের একমাত্র ছেলে এলাকার বখাটেদের অত্যাচারে মারা যাওয়ার পর তিনি একদমই গুন্ডা-পান্ডা সহ্য করতে পারেন না। স্বভাবতই সালমানকে তার পছন্দ করার কোনও কারণ ছিল না।
খুনের প্রেক্ষাপট- নিজের মায়ের উপর তার মামার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সালমান তার মামাকে দূর্ঘটনাবশত খুন করে ফেলে। সালমানের এই খুন করার কথা হালকা-পাতলা অনেকেই জানতো তাই সাধারণ মানুষের সাথে তার দূরত্ব অনেক বেড়ে যায়। তাই সবাই ভয়ে তার সাথে মিশতে চাইতো না।
পারিবারিক আবহাওয়া থেকে দূরে থাকা সালমান এই পরিবারটার সান্নিধ্যে এসে কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে যায়। ডলি জহুরকে দেখে সেও মায়ের স্নেহ পেতে চায় কিন্তু একজন খুনীকে ডলি জহুর কখনোই ছেলে হিসেবে মানতে পারে না।
তখন সালমান সাহায্য নেয় মিথ্যা অভিনয়ের। সে একটি কাহিনী দাঁড় করায় যে তার যমজ ভাই লন্ডন থেকে কিছুদিনের মধ্যেই আসবে কিন্তু তাকে জরুরী কাজে ঢাকার বাইরে যেতে হবে। এই বলে সে পরিবারটির কাছে চাবি রেখে চলে যায়। তারপর যথাসময়ে কিছুটা গেট-আপ চেঞ্জ করে সালমান তার যমজ ভাইয়ের রূপেই পরিবারটির সামনে আসে। কিন্ত এবার ঘটে উল্টো ঘটনা। যেহেতু এই সালমান শিক্ষিত, ভদ্র তাই ডলি জহুর তাকে এবার আর দূরে ঠেলে দেয় না।
এদিকে সময় যতোই এগোতে থাকে, সালমান ততোই বুঝতে পারে কাজটা ঠিক হচ্ছে না। যার জন্যে সামনে অপেক্ষা করছে ফাঁসির দড়ি, তার এতো ভালোবাসা বাড়িয়ে কি লাভ!!! কেউ ধরতে না পারলেও শমী কায়সার বুঝতে পারে সালমানের এই অভিনয়। যদিও সে ভালোবেসে ফেলে সালমানকে, তবুও সে সালমানকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়। সালমানের আসল পরিচয় জেনে গেলেও ডলি জহুর বুঝতে পারে সালমান প্রকৃতপক্ষে চাইতো স্নেহ। পুলিশ যথাসময়ে চলে আসে।
নাটকের শেষ দৃশ্য সম্পন্ন হয় সালমানের এই সংলাপটি দিয়ে “আমি বলেছিলাম, আমার যেন ফাঁসি হয়। কিন্তু এখন আমি দোয়া চাইছি, আমার যেন যাবজ্জীবন হয়। কারণ, আমি এখন বাঁচতে চাই।“
এখানেই শেষ করে দেয়া হয় নাটকটি আর সালমানের বিচার ছেড়ে দেওয়া হয় দর্শকদের উপর।
ইউটিউব লিংকঃ
কিছু কথাঃ
১। নাটকটির রচয়িতা অরুণ চৌধুরী, বিটিভিতে প্রচার করা হয় ১৯৯৫-৯৬ সালের দিকে।
২। নাটকটির একটি গান “এই ভালোবাসা আর এই অভিমান, থাকবে না চিরদিন থাকবে না”, গানটিতে কন্ঠ দিয়েছেন শুভ্রদেব।
৩। নাটকটির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক করেছেন রিপন খান।
৪। নাটকটির নাম “নয়ন” রাখা হয়েছে শমী কায়সারের চরিত্রটির কথা বিবেচনা করে।
৫। নাটকটিতে সালমানের অভিনয় নিয়ে কিছু বলার নেই, এটুকু বলবো যে, সালমান যদি শুধু নাটকও করতো, তাহলেও ও অনেকদূর যেতে পারতো।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:২৭