বাংলাদেশের চলমান বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকট মোকাবেলা কে সরকার ও তার মুখপাত্ররা বক্তৃতা বিবৃতিতে এক নম্বর অগ্রাধিকার বলে দেশবাসীর কাছে জাহির করে আসছেন।উক্ত সংকট মোকাবেলায় প্রকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধি ও নতুন প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎসের সন্ধান কে যুদ্ধাবস্থা বলে মাননীয় অর্থ মন্ত্রী ক'দিন পূর্বে তাঁর ২০১১-২০১২ অর্থ বৎসরের বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ্য করেছেন।এত উচ্চবাচ্চ যে কাগুজে বাঘের রণহুংকার তা ২০১০-২০১১ অর্থ বৎসরেরর সংশোধিত বাজেট বরাদ্দ এবং ২০১১-২০১২ অর্থ বৎসরেরর বাজেটে প্রস্তাবিত বাজেটের উন্নয়ন বরাদ্দের দিকে একবার তাকালেই স্পষ্ট হয়ে উঠে।
তৈল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ সেক্টরে সরকারের নেক নজরের চিত্র
বাংলাদেশ সরকারের সকল তৈল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান , উৎপাদন ও উন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্ট দুই টি সংস্থা ঃ এক , বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (GSB)এবং দুই, পেট্রোবাংলা (অন্তর্ভুক্ত বাপেক্স সহ ১২ টি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি)।
তৈল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ উন্নয়নে ২০১০-২০১১ অর্থ বৎসরে সরকার GSB ও পেট্রাবাংলা (এবং এর অধিনস্ত ১২ টি কোম্পনি) কে সর্বমোট বরাদ্দ প্রদান করেছে ১০৩৯.৬৩ কোটি টাকা। আর আসন্ন ২০১১-২০১২ অর্থ বৎসরের বাজেটে প্রস্তাবিত বরাদ্দ ৮৮০.৮৪ কোটি টাকা।
আবার প্রশ্ন এই সীমিত বাজেট বরাদ্দের কতটুকু প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধি ও নতুন উৎসের অনুসন্ধানে কিংবা এতদবিষয়ে জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যয়িত হয় বা হবে? সে উত্তর পাওয়া যাবে প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানে নিয়োজিত রাষ্ট্রায়ত্ত বহুল আলোচিত বাপেক্সের বাজেট প্রাপ্তি ও বাজেট বরাদ্দের দিকে তাকালে।
তৈল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ উন্নয়নের টাকা আসবে কোথা কে ?
তৈল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ আহোরণে জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির কথা বলা হলেও প্রথমেই বলা হয় দরিদ্র দেশ এতো টাকা পাব কোথায়?
যদি বলা হয় এই সেক্টরের উন্নয়নে সরকারের নিজ তহবিল থেকে একটি টাকাও ব্যয় করা প্রয়োজন নেই , প্রয়োজন নেই বিদেশি দাতাদের দাড়ে হাতপাতার ....তা মানতে অনেকেরই কষ্ট হবে।
যারা আমার কথা মানে নিতে পারছেন না তাদরে অনুরোধ রইলো ''আসুন, পেট্রোবাংলার ওয়েব সাইটে মাসিক প্রতিবেদনের পাতায় ঘুরে আসি।''
নিচে লিংক................
http://www.petrobangla.org.bd/MIS REPORT APRIL2011.pdf
২০১০-২০১১ অর্থ বৎসের এপ্রিল মাস পর্যন্ত পেট্রোবাংলার অধীনস্ত ১২ টি কোম্পানী (পেট্রোবাংলা বাদে) ২৭২৭.৬০ কোটি টাকা ভ্যাট - আয়কর-মুনাফার অংশ হিসাবে রাষ্ট্রীয় তহবিলে জমা প্রদান করেছে। আর বিগত ২০১১-২০১২ অর্থ বৎসরে যার পরিমাণ ছিল ৩৪৯৪.৯৮ কোটি টাকা।
কত টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন?
বাংলাদেশে অন্যতম বৃহৎ গ্যাস ক্ষেত্র সব শেভরনের হাতে থাকা বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের সর্বমোট বিনিয়োগ ২৭.০০ কোটি মার্কন ডলার বা ১৯০০ কোটি টাকা।
.........The total development cost for the project, including 12 development wells, was approximately $270 million. The original development program included a natural gas processing plant with a capacity of 600 million cubic feet per day and a natural gas pipeline to connect the field to the national natural gas transmission grid.
সূত্রঃ Bangladesh Fact Sheet
ConocoPhillips সমূদ্রে ব্লক ১০ ও ১১ তে আগামী ৯ বৎসরের জন্য ১১.০৬ কোটি মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৮০৭ কোটি টাকা বিনিযোগ করবে।
(সূত্রঃ The Financial Eexpress)
Click This Link
অর্থাৎ, সরকার ১ বৎসরে ভ্যাট-আয়কর হিসাবে রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস সেক্টরের প্রতিষ্ঠান হতে
যে অর্থ পায় তা দিয়ে অনায়াসে বিবিয়ান গ্যাস ক্ষেত্রের মত বৃহৎ ক্ষেত্রর অনুসন্ধান , উত্তোরন ও উন্নয়ন ব্যয় সম্ভব।
গ্যাস সেক্টর হতে রাষ্ট্রীয় তহবিলে জমাকৃত অর্থ কোথায় যাচ্ছে?
''আসুন,আবারও পেট্রোবাংলার ওয়েব সাইটে মাসিক প্রতিবেদনের ৮১ পাতায় ঘুরে আসি।''
অধিকন্তু IOC গুলোর পক্ষে পেট্রোবাংলাকে যে ভ্যাট-ট্যাক্স বাবদ অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হয় তার পরিমান কম নয়। ২০১০-২০১২ অর্থ বৎসরে তা ৪৪৩.৮৬ কোটি টাকা।
উপসংহারঃ
উডসংহার লিখবার দায়িত্ব পাঠকের হাতে ছেড়ে দিলাম।