চাকরি বাকরি ছেড়ে ঢাকায় এসে মনটা খুব ভারাক্রান্ত ছিল। এমন সময় ২০১৩ সালের শেষ দিকে এক বন্ধুর (রিন্টু) সাথে হঠাৎ রও্না হয়েছিলাম দুর্গাপুরের উদ্দেশ্যে। কিছু ছবি শেয়ার করলাম।
নেত্রকোনা স্টেশনে নেমে একটি মোটর সাইকেল নিয়ে রও্না হয়েছিলাম দুর্গাপুরের উদ্দেশ্যে। পথে হঠাৎ সাইকেলটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় বসে থাকতে হয়েছিল অনেকক্ষণ। সেই ফাঁকে একটু এদিক ও্দিক করেছিলাম।
উঠেছিলাম স্থানীয় হাজং নেতা স্বপন দা’র বাড়িতে।
এই মোটর সাইকেলটিতে আমরা দুর্গাপুর ঘুরেছিলাম।
সোমেশ্বরী নদী, এই নদীটি পেরিয়ে যেতে হয় গারো পাহাড়ের বাংলাদেশ অংশে। নদিটিতে পানি কোমর পর্যন্ত, কিন্তু স্রোত থাকে খুব। পানি স্বচ্ছ, দুই পাড়ে ধু ধু বালুকারাশি রয়েছে। র্দূরে চোখ পাতলে চোখে পড়বে সবুজ পাহাড়।
ফলকেই বর্ণনা রয়েছে। টংক বিদ্রোহে নিহত শহীদ রাশিমণি স্মৃতি শৌধ।
টংক আন্দোলন হচ্ছে ১৯৪৬-৫০ সাল এ এলাকার কৃষকদের পরিচালিত একটি আন্দোলন। টংক প্রথা হলো উৎপন্ন ফসল দ্বারা জমিদারদের খাজনা পরিশোধ করা। আর তা টাকা দ্বারা খাজনা পরিশোধের চেয়ে বেশি ছিল। হাজং সম্প্রদায় এ ব্যাবস্থায় দিনে দিনে নিঃস্ব হয়ে পরে। এ সময় সুসং দুর্গাপুরের জমিদারদের ভাগ্নে কমিউনিস্ট নেতা কমরেড মনি সিংহ-এর নেতৃত্বে ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে টংক প্রথা উচ্ছেদ, টংক জমির খাজনা স্বত্ব, জোত স্বত্ব, নিরিখ মতো টংক জমির খাজনা ধার্য, বকেয়া টংক মওকুফ, জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ ইত্যাদি দাবি নিয়ে টংক আন্দোলন শুরু হয়। হাজং সম্প্রদায় নিজেদের স্বার্থেই টংক আন্দোলনের সংগে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছিল। সে সূত্রেই কুমুদিনী হাজং এর স্বামী লংকেশ্বর হাজং ও তাঁর তিন ভাই টংক আন্দোলনের সংগে জড়িয়ে পড়েন। (উইকিপিডিয়া)
গারো পাহাড়ের পাদদেশ র্মূলত বাংলাদেশ অংশে। কিছু টিলা রয়েছে। এরই একটি অংশে সাদামাটি বা চিনামাটি পাও্য়া যায়। সরকার নাকি ওগুলো ইজারা দিয়েছে। বিভিন্ন টাইলস কোম্পানি চিনামাটি তুলে তুলে জায়গাটি গর্ত গর্ত করে রেখেছে।
গিয়েছিলাম একদম সীমান্ত ঘেষে অবস্থিত ক্যাথলিক চার্চে।
গারো শিশুরা নাইতে নেমেছে।
গরু চরাচ্ছে একজন গারো পুরুষ। খোঁজ নিয়ে জানলাম শর্ত মেনে যারা এনজিওর আও্তায় আসতে পারেনি, একনো তারা পুরোপুরি প্রকৃতি নির্ভর।
জায়গাটা একদম সীমান্ত ঘেষে অবস্থিত। মাত্র পাঁচ ফুট র্দূরেই ইন্ডিয়ার মেঘালয় অবস্থিত।
যে শর্তেই হোক দুর্গাপুরের অর্থনীতিতে বড় অবদান রয়েছে এনজিও্গুলির।
এটি ছিল হঠাৎ ভ্রমণ। সাথে ক্যামেরাও ছিল না। ছবি তোলার নেশার কারণে ধার করা ক্যামেরা দিয়ে কিছু ছবি তুলেছিলাম। জায়গাটিতে আবার যাওয়ার ইচ্ছে আছে। গারো পাহাড় বলে নয়, আসলে গারো পাহাড়ের তেমন কিছু বাংলাদেশ অংশে নেই। তবে এলাকাটির বিশেষ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট আছে। সোমেশ্বরী নদীটিও বিশেষ। কোনো জায়গায় প্রথমবার গিয়ে আসলে তেমন কিছু দেখা হয় না। দ্বিতীয়বার যাওয়াটা জরুরী। সামনের শীতে ইচ্ছে আছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২০