আগের পর্বঃআধুনিক স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেমের গল্পকথা(পর্ব ০-প্রারম্ভিকতা)
স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে গল্পের পূর্বের পর্ব ছিল স্মার্টফোন নিয়ে হাবি-জাবি কথা। এই পর্ব থেকে ধারাবাহিকভাবে আসবে স্মার্টফোনের মেজর অপারেটিং সিস্টেম এবং সাথে সেইসব অপারেটিং সিস্টেমের অধিকারী কোম্পানিদের এই বিষয়ে পদক্ষেপ।
নোকিয়া (সিম্বিয়ান,লিনাক্স বেসড মায়েমো,উইন্ডোজ)ঃ ধারাবাহিকতার প্রথমেই শুরু করি বিগ নেম নকিয়া দিয়ে। নকিয়ার মার্কেট শেয়ার মোটামুটি ভাল ।কিন্তু প্রায় ৪৫% স্মার্টফোনের শেয়ারের মালিক নকিয়ার অধিকাংশ মোবাইল লো লেভেলের তাই এইসব মোবাইল থেকে ইন্টারনেট ট্রাফিক কম পরিমাণে তৈরি হয় & হাই লেভেলের অ্যাপ্লিকেশন কম চলে। মোবাইল ইন্টারনেট টেকনলজীর অগ্রসরতায় নকিয়া তার মার্কেট শেয়ার হারাচ্ছে তো বটেই সাথে সাথে তাদের মোবাইলের নানামুখি ব্যবহারের বৈচিত্রতা কমে যাচ্ছে। আমি আমার এই ধারাবাহিকের পূর্বের পর্বে একটা চার্টে দেখিয়েছিলাম সিম্বিয়ান অর্ধেকের বেশি শেয়ার নিয়ে ইন্টারনেট ট্রাফিক তৈরিতে কিরকম পিছিয়ে আছে। ইন্টারনেটের যুগে এই পিছিয়ে থাকা নকিয়ার মেইন অপারেটিং সিস্টেম সিম্বিয়ানের দৈনতাই প্রকাশ করে।
একটা গবেষণায় দেখা গিয়েছে নকিয়া সব থেকে বেশি শেয়ারের মালিক হলেও মোবাইল প্রতি অ্যাভারেজ মূল্য নকিয়ার সব থেকে কম, যা নকিয়ার ভবিষ্যট প্রফিটের জন্য হুমকি স্বরুপ।
আধুনিক টেলিকমের জনক যেসব কোম্পানি আছে তার মধ্য নকিয়া শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি। নিশ্চয় নকিয়া অত্যাধুনিক ফোনের মার্কেট অ্যাপল অথবা অ্যানরয়েডের হাতে ছেড়ে দিবে না বিনা প্রচেস্টায়। দেখা যাক একনজরে নকিয়া তার আধিপত্য বজায় রাখার জন্য, তার যুদ্ধ ট্যাঙ্ক কি রকম রণবারুদ দিয়ে সাজাচ্ছে -------
১। সিম্বিয়ানঃ আমাদের সাধারণের মধ্য একটি ধারনা আছে নকিয়া মানে সিম্বিয়ান, সিম্বিয়ান মানে নকিয়া। ধারনাটি ভুল ২০০৮ পর্যন্ত। মূলত,পাইসন কোম্পানির EPOC অপারেটিং সিস্টেম থেকে সিম্বিয়ানের জন্ম, যাকে লালিত-পালিত এবং বর্ধিত করার জন্য নকিয়া, পাইসন, এরিকসন,সনি-এরিকসন,স্যামসাংগ,এনটিটি ডোকোমো(আমাদের একটেলের একটা শেয়ার এই জাপানিজ অপারেটরের হাতে আছে, বিশ্বে অপারেটরদের মধ্য এদের সব থেকে বড় রিসার্চ সেন্টার আছে) এক জোট হয় ১৯৯৮ সালে এবং গঠন করে সিম্বিয়ান লিমিটেড। তবে এই যৌথ প্রচেস্টার ৫০% এর বেশি মালিকানা ছিল নকিয়ার হাতে,বাকিটুকু অন্যদের হাতে। কিন্তু ২০০৮ এর জুনের দিকে নকিয়া সিম্বিয়ানের বাকি শেয়ার কিনে নেয় এবং নন প্রফিটেবল সিম্বিয়ান অর্গানাইজেশন গঠন করে,যেখানে অন্য মোবাইল ম্যানুফাকচার,সেমিকন্ড্রাকটার কোম্পানিদের প্রতিনিধি আছে। তবে সিম্বিয়ান তৈরির কারিগররা নকিয়ার কর্মচারি হিসেবে বিবেচিত অথার্ৎ ঘুড়ির নাটাই সম্পূর্ণ নকিয়ার হাতে।
সিম্বিয়ানের গঠন প্রকৃতি লিনাক্স কিংবা উইন্ডোজ থেকে আলাদা। অনেকেই বলবে হয়ত, মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম তার গঠন প্রকৃতি ডেস্কটপ/সার্ভার অপারেটিং সিস্টেম তার থেকে আলাদা হবে, এটা আবার বলার মত কি? আসলে আমি সেই আলাদা বুঝাই নাই। আমি কোর লেভেলের আলাদা বুঝিয়েছি।কোর অথার্ৎ কার্ণেল লেভেলে সিম্বিয়ান মাইক্রোকার্ণেল আর্কিটেকচারের অনুসারি। লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম আবার মনোলিথিক আর্কিটেকচারে নির্মিত।
ছবিঃ বিভিন্ন রকম কার্নেল/কোর পার্ট(উৎসাহিদের জন্য)
সহজ বাংলায় বললে, মাইক্রোকার্ণেল আর্কিটেকচারে কোর লেভেলে কোড খুব কম থাকে,অপারেটিং সিস্টেমের অনেক জরুরী অংশ ভাগ করে ফেলা হয় । মনোলিথিক আর্কিটেকচারে কোর লেভেলে অপারেটিং সিস্টেমের আণুসাঙ্গিক সব জিনিসের কোড এক সাথে করা হয়ে থাকে। যত বেশি বিভাজন তত বেশি সময় নস্ট, মাইক্রোকার্ণেল আর্কিটেকচারে বিভাজন বেশি তাই সময় বেশি লাগে অথার্ৎ স্লো। অনেকের অভিযোগ নকিয়া ফোন(সিম্বিয়ান) স্লো ,প্রধান কারণ মনে হয় অন্তর্নিহিত আর্কিটেকচার বলেই আমার ধারণা। তবে পালটা যুক্তি আছে, প্রথম থেকেই সিম্বিয়ান ডিজাইন করা হয়েছে, ছোট ডিভাইস তথা মোবাইলের কথা মাথায় রেখে তাই এইসব ডিভাইসের জন্য সিম্বিয়ান অনন্য। একটু উদাহরণ দেই, অনেকেই বলে থাকে নকিয়ার E সিরিজের পারফরমেন্স অনেক ভাল N সিরিজ থেকে। সত্যিকার অর্থে N এবং E সিরিজ দুইটি একই অপারেটিং সিস্টেমের উপর চলে। E সিরিজে নকিয়া প্রসেসর,মেমরি নামক হার্ডওয়ার মসলা বাড়িয়ে দেয় N সিরিজে নকিয়া এই মসলা কমিয়ে অন্য মসলা -মাল্টিমিডিয়া(মিউজিক,ক্যামেরা) দিকে জোড় দেয়। বিভিন্ন কোম্পানির ফ্ল্যাগশিপ ফোনের প্রসেসরের সক্ষমতার দিকে তাকাই এবার: নকিয়ার বর্তমান ফ্ল্যাগশিপ-N97 & 5800 এর প্রসেসর ৪৩৪ মেগাহার্জ, স্যামসাংগের OmniaLITE এ আছে ৬৬৭ মেগাহার্জ,iPhone 3GS ৬০০ মেগাহার্জ, সনি এরিকসনের XPERIA X1 কোয়ালকমের ৫২৮ মেগাহার্জ। কিন্তু অধুনা ই সিরিজে নকিয়া E সিরিজে ৫০০ মেগাহার্জের বেশি ব্যবহার করছে, তাই টিপাটিপির প্যারফরমেন্স E সিরিজের N সিরিজ থেকে ভাল ,আবার মাল্টিমিডিয়ার জন্য N সিরিজ।
২০০৮ এর আগে সিম্বিয়ান লিমিটেড শুধু খুব বেসিক কোড(কার্ণেল কোড) ডেভেলাপ করে সিম্বিয়ান 9,9.1,9.2 .... ইত্যাদি নামে ছেড়ে দিত। সেই বেসিক কোডের উপর নকিয়া,সনি-এরিকসন অন্যান্য আলংকারিক কোড যেমন ফাইল সিস্টেম(কিভাবে ফাইল নিয়ে কাজ করবেন) বসিয়ে দিত। নকিয়ার তৈরি এই উপরিভাগের কোডকে বলা হত S60(S40ও আছে) এবং সনি-এরিকসনের UIQ। এই উপরিভাগের কোড এবং সিম্বিয়ান বেসিক প্রোগ্রাম মিলে দাড়াত সিম্বিয়ান সম্পূর্ণ অপারেটিং সিস্টেম।
অ্যাপলের আগমন নকিয়াকে একটু অন্যভাবে চিন্তা করতে বাধ্য করে, তার ফলশ্রতিতে নকিয়া সিম্বিয়ানের সবটুকু শেয়ার নিজের করে নেয়, অন্যান্য কোম্পানিকে সাথে রেখে গঠন করে সিম্বিয়ান অর্গানাইজেশন। সিদ্বান্ত হয় সিম্বিয়ান হবে ওপেন সোর্স যা ২০১০ এর মধ্য Eclipse লাইসেন্সের মাধ্যমে প্রকাশিত হবে। সিম্বিয়ানের উপরে ভিন্ন ভিন্ন রকম উপরিভাগের কোড(S60,S40,UIQ) তথা ইউজার ইন্টারফেস থাকবে না। সিম্বিয়ান আবার গোড়া থেকে নিজের নাম দিয়ে যাবে সিম্বিয়ান ১,২...। বর্তমান তথা আগেকার বেসিক কোড নিয়ে এই অর্গানাইজেশন কাজ করছে সাথে ইউজার লেভেলের কোড হিসেবে নিয়েছে S60 কে।
ছবিঃ নতুন গঠিত সিম্বিয়ান অর্গানাইজেশন/ফাউন্ডেশন
নকিয়ার এই প্রচেস্টা কত দূর এগিয়েছে--- সিম্বিয়ান এতদিন চলত ARM প্রসেসরের উপর যা মোবাইল ডিভাইসের জন্য আলাদাভাবে ডিজাইন করা। মজার ব্যাপার, সিম্বিয়ানের একটি ব্লগে দেখা গিয়েছে সিম্বিয়ান পাওয়ারফুল প্রসেসর ইন্টেলে এটমের উপর চালানর একটি সফলজনক প্রচেস্টা,এখানে বলে রাখা উচিত ইন্টেল এটম নেটবুকের জন্য ডিজাইন করা।
নিচের ছবি খান দেখুনঃ
ছবিঃসিম্বিয়ান ইন্টেল এটম প্রসেসর এবং ইন্টেল মাদারবোর্ডের উপরে
নকিয়া শুধু সিম্বিয়ান রিঅর্গানাইজ এবং পুরা অপারেটিং সিস্টেম কেবল ঢেলে সাজাচ্ছে না, তার জন্য প্রয়োজনীয় মাল-মশালা ও নিয়োগ করছে। যেমন- মাইক্রোসফটের সাথে নকিয়া ইতিমধ্য একটি চুক্তিতে উপনীত হয়েছে,যেই চুক্তির আওতায় মাইক্রোসফট তার অফিস প্যাকেজের সিম্বিয়ান ভার্সন তৈরি করবে।তাহলে কি দাড়াচ্ছে মাইক্রোসফট আমাদের মত গরীবদের জন্য উইন্ডোজ না, সিম্বিয়ান উপযোগি মেনে নিল নাকি নিজেদের অফিস ভার্সন আম-জনতার শিকড় থেকে ভবিষ্যতে যেন উপরে না যায় তার একটা বন্দোবস্ত। তবে এই চুক্তি সিম্বিয়ানের ধারা কে শক্তিশালি করবে যদি নকিয়া সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে। তাহলে বুঝাই যাচ্ছে নকিয়া আরও কিছুদিন অন্ততঃ সিম্বিয়ানকে নিয়ে মার্কেটে খেলবে।
২। লিনাক্স বেসড মায়েমোঃ Maemo(মায়েমো) নকিয়ার লিনাক্স ঘরানার অপারেটিং সিস্টেম,তবে এই ঘরানার ডিভাইস নকিয়ার কম। বস্তুত পূর্বে নকিয়া ইন্টারনেট ট্যাবলেট যেমনঃ N810 এই অপারেটিং সিস্টেম দিয়ে ছেড়েছিল ,কিন্তু তেমন জনপ্রিয়তা পায় নাই। N810 নামক এই ডিভাইস Maemo 4 ঘরানার যার মুক্তিকাল ছিল ২০০৭ এর দিকে। মোবাইল বিশ্বের অনেকের অভিযোগ ছিল, নকিয়ার সিম্বিয়ান প্রীতি হয়ত নকিয়া ডুবাবে, কারণ সিম্বিয়ান অত্যাধুনিক ফোনের অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে অচল(যেমনঃ টাচস্ক্রীন বৈশিস্ট্য, মাল্টিটাস্ক)। তাই অনেকেই ধারণা করেছিল যে, নকিয়া হয়ত গুগলের কাছে আত্নর্সমপর্ণ করে অ্যানরয়েড বেসড ডিভাইস বানাবে। নকিয়া সেই জন্য কিনা জানি না ,Maemo ভার্সন 5 বেসড N900 নিয়ে হাজির হতে যাচ্ছে খুব শীঘ্রই। ইতিমধ্য নকিয়া ওয়ার্ল্ড সহ অন্য জায়গায় নকিয়া N900 তথা Maemo 5 এর ডেমো দেখিয়েছে। শক্তিশালী মাল্টিটাস্কিং এই ফোনের প্রধান বৈশিস্ট্য। টাচস্ক্রীন আছে তবে সেটা আইফোনের মত মাল্টিটাচ নয়, তবে ডেমোতে ক্ষণিকের ব্যবহারকারিরা রেজিস্টিভ টাচস্ক্রীণসম্পন্ন(রেজিস্টিভ কমদামী, বেশি দামি হল capacitive যা আইফোনসহ অধিকাংশ ফোনে ব্যবহার হয়)এই সেটের টাচ বৈশিস্ট্য সন্তুষজনক বলে অভিহিত করেছেন।
Maemo লিনাক্সের ডেবিয়ানের মোবাইল সংস্করণ।(জনপ্রিয় ডেস্কটপ লিনাক্স ভার্সন উবুন্টু ডেবিয়ানের একটি ধারা,সুতরাং সেই সুত্রে Maemo এবং উবুন্টু সহোদর ।) N900 এ আছে মজিলা বেসড ব্রাউজার সাথে ফুল অ্যাডব ফ্ল্যাশ সাপোর্ট,800 x 480 রেজুল্যশন সুতরাং শক্তিশালি ব্রাউজিং সমর্থন। ডেস্কটপ এনভায়রনমেন্ট লিনাক্সের GNOME থেকে ধার করা। ইন্টারনেটে এখন N900 তথা Maemo 5 এর ভিডিও ছড়াছড়ি। আমেরিকা এবং ইউরোপের অনেক অপারেটর এই ফোনকে নিজেদের মত কাস্টমাইজড করে সার্ভিস দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রথমে নকিয়া গড় রাজি থাকলেও পরে নকিয়া অপারেটরদের ব্রান্ডে N900 ছাড়তে রাজি হয়েছে। সেই রাজি হওয়ার পিছনে রয়েছে নকিয়ার কলঙ্ক আমেরিকার মার্কেট ধরার লোভ।
ছবিঃ N900
রিভিউ লিংকঃ মোবাইল-রিভিই সাইট থেকে N900 এর বিশ্লেষণ
৩। নকিয়া বুকলেট 3G ঃ এই বস্তুখান হল নকিয়ার তৈরি নোটবুক অথবা ল্যাপটপ। কেউ যদি নকিয়ার ইতিহাস ঘাটে তবে দেখবেন ৯০ দশকের শেষের দিকে নকিয়া পার্সনাল কম্পিউটার তৈরি করত যার নাম ছিল MikroMikko।
ছবিঃ MikroMikko
পরবর্তীতে এই MikroMikko হস্তান্তর হয়ে যায় ICL এবং তার ও পরে ফুজিতসুর কাছে।
কিছুদিন আগেও আমাদের দেশে একটি বিজ্বাপন দেখাত- নকিয়া ফোন কিনলে ল্যাপটপ ফ্রি। এই অ্যাডটাতে আমি খুব ভাল করে লক্ষ করে দেখেছিলাম যে ঐ ল্যাপটপের পিছনে নকিয়া লেখা ছিল। তখন মনের মধ্য সন্দেহ ছিল টেক মার্কেট/ব্লগে গুজব উঠা নকিয়ার ল্যাপটপ মার্কেটে ঢুকা হয়ত সত্য। আমাদের মত গরীব দেশে ল্যাপটপ দিয়ে নকিয়া হয়ত একটা ট্রায়াল দিচ্ছে।
টেলিকম ইন্ডাস্ট্রিতে মোবাইল ইন্টারনেটের আধুনিকতায় যেসব টেকনলজীর জন্ম(HSPA/HSPA+) বা জন্ম হবে(LTE) সেসব টেকনজীর সম্পূর্ণ ব্যবহার মোবাইল/ইন্টারনেট ট্যাবলেট দিয়ে করা হয়ত সম্ভবপর নয় তাই নকিয়া আবার পারসোনাল কম্পিউটারের জগতে নিজের পা রেখেছে। আমরা টেকি প্রেমিকরা যতই লিনাক্সের জন্য আমাদের বগল বাজাই না কেন মাস লেভেলের কাছে এখনও উইন্ডোজ একটি বিশ্বস্ত নাম, তাই বুকলেট 3G তে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে এসেছে মাইক্রোসফটের নতুন অপারেটিং সিস্টেম Windows 7। মডেম হিসেবে 3G এর অত্যাধুনিক ভার্সন জুড়ে দেওয়া হচ্ছে এসব ল্যাপটপের সাথে। ইতিমধ্য নকিয়া আপকামিং টেকনলজী LTE এর মডেমের সাকসেসফুল ডেমো সম্পূর্ণ করে রেখেছে।
ছবিঃনকিয়া বুকলেট 3G
৪। নকিয়ার বিভিন্ন চুক্তি(শত্রু তুমি বন্ধু তুমি)এবং ইত্যাদিঃ নকিয়া সাথে সিডিএমএ টেকনলজীর জনক বিশ্বে সবোর্চ্চ মোবাইল চিপসেট প্রদানকারি কোম্পানি কোয়ালকমের 3G প্যাটেন্ট নিয়ে ঝগড়া আদালতে পৌছে গিয়েছিল। সেই শত্রু কোম্পানি কোয়ালকমের সাথে নকিয়া গাটছাড়া বেধেছে, কোয়ালকম নকিয়াকে সিডিএমএ এবং সিম্বিয়ান বেসড মোবাইল ডেভলপ করতে সাহায্য করবে & সাথে GSM-3G লাইনের চিপসেট দিবে, যা বস্তুত নকিয়াকে, নকিয়ার ব্যর্থ ক্ষেত্র আমেরিকাতে সাহায্য করতে পারে।
Wimax টেকনলজী ইন্টেলের ব্যাকআপ পাওয়া টেকনলজী। নকিয়া Wimax কে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ডেড টেকনলজী(View this link ) হিসেবে ঘোষনা দেওয়ার পর ইন্টেল একটু ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েছিল নকিয়ার উপর। কিন্তু ক্ষিপ্ত হয়ে যাওয়ার ঘটনার কিছু দিন পরে দুই শত্রু বন্ধু হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তিনুসারে,ইন্টেল নকিয়ার ইন্টারনেট বেসড ডিভাইসের জন্য প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার সাপোর্ট দিবে, যেমনঃইন্টেল এটম প্রসেসরে পাওয়ার হাংগ্রিনেস বৈশিস্ট্য কমিয়ে আনবে, যা মোবাইল বেসড প্রসেসরের একং শর্ত। ইন্টেল-নকিয়ার বন্ধুত্বের প্রথম স্টেপ দেখতে পাই নকিয়া বুকলেট 3G তে যেখানে প্রসেসর হিসেবে ব্যবহ্রত হচ্ছে ইন্টেলের এটম। শুধু কি তাই, নকিয়ার লিনাক্স বেসড Maemo অপারেটিং সিস্টেমের মত ইন্টেলের আছে লিনাক্স বেসড Moblin। যদি ইন্টেল এবং নকিয়া সত্যকার অর্থে নিজেদের দিকে প্রকৃত বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয় অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে তা মোবাইলের যে কোন হাই ইন্ড অপারেটিং সিস্টেমকে সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত অথবা চ্যালেঞ্জ করতে সক্ষম।ইতিমধ্য হালকা পাতলা গুজব শোনা যাচ্ছে এই একই ঘরানা কিন্তু ভিন্ন কোম্পানি দ্বারা লালিত দুই অপারেটিং সিস্টেমের সহযোগিতার কথা।
এত এত প্ল্যাটফর্ম নকিয়ার থেকে সুতরাং ডেভেলাপারদের তো পাগল হয়ে যেতে হবে। জাভা ছাড়া আর কোন প্রোগ্রাম নেই যা এক সুতায় গাথবে ভিন্ন ভিন্ন প্ল্যাটফর্মকে। তবে নকিয়া নিজের সুতা বানিয়ে রাখছে এই ক্ষেত্রে। সেই সুতার নাম QT প্ল্যাটফর্ম ।এই QT প্ল্যাটফর্ম নকিয়া ২০০৮ সালে Trolltech নামক এক কোম্পানি থেকে নিজের করে নেয়। নকিয়া QT প্ল্যাটফর্মকে এমন ভাবে প্রস্তুত করছে যেন, এই QT প্ল্যাটফর্মে লেখা কোন অ্যাপ্লিকেশন নকিয়ার যে কোন অপারেটিং সিস্টেমে রান করে।
ইন্টারনেটে কিছুদিন আগে পড়লাম, নকিয়ার পরবর্তী QT ভার্সন 4.6 সিম্বিয়ান আপকামিং ভার্সন ৪ এবং Maemo ভার্সন ৬ এ ইন্টিগ্রেট করা হবে, এবং এই প্ল্যাটফর্ম হবে মাল্টিটাচস্ক্রীন বেসড।
লিংক:View this link
সব দেখে মনে হচ্ছে নকিয়া অ্যাপলের আঘাতে কুত্তা পাগল হয়ে গিয়েছে। টেক মার্কেটে একটা ধারণা হচ্ছে যে, নকিয়া ২০১১ সালকে তার অপারেটিং সিস্টেম সিম্বিয়ান এবং মায়েমোর জন্য যুদ্ধের বছর হিসেবে নিয়েছে।