আজ হুমায়ুন আহমেদ স্যারের জন্মদিন । স্যার কে নিয়ে কি লিখবো বুঝতে পারছিনা কারন এতো ভালো লিখতে পারি না! হুমায়ুন আহমেদ এই নাম টা মনে পরলেই ভেসে উঠে হলুদ পান্জাবী পরা হিমুর কথা, আজ রবিবার নাটক, আসাদুজ্জামান নূর অভিনিত বাকের ভাই, শঙ্খনীল কারাগার, মিসির আলী, আরও কিছু অমর লেখা কিংবা জীবন্ত চরিত্র। ছোটবেলা থেকেই হুমায়ুন আহমেদ স্যার আমার কাছে একজন বিষ্ময়কর ব্যাক্তি। বিশেষ করে যখন "কোথাও কেউ নেই" নাটক টি দেখতাম, বাকের ভাই চরিত্রটি ছিলো তখন কার সময়ের সেরা একজন মানুষ !! কাল্পনিক হলেও মানুষ বাকের ভাইকে খুব ভালোবেসে ফেলেছিলো যে বাকের ভাইয়ের ফাসি হলো কেন এ নিয়েও অনেক কাহিনী!বাকের ভাইয়ের হাতের আঙ্গুলে চাবির রিং ঘোরানো সেই দৃশ্য এখনও চোখে ভাসে!
সত্যি হুমায়ুন আহমেদ একজন সৃষ্টিশীল মানুষ ছিলেন। উনার গল্প উপন্যাসে একেক টি চরিত্রকে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেন যেন মনে হয় জীবন্ত সামনে দাড়িয়ে আছে, কথা বলছে।
স্যারের নামকরা চরিত্র হিমু এখনও আমার কাছে একটা বিষ্ময়। একটা লোক হলুদ পান্জাবী পরে থাকে সারাক্ষন যাযাবরের মতন ঘুরে বেড়ায়, তবে হিমু একজন অসাধারন চরিত্র, হিমুর কোন লোভ লালসা নেই, একজনের কথা আরেকজনের কাছে বলেও বেড়ায় না; সত্যি অসাধারন!! ছোট বেলায় হুমায়ুন আহমেদের লেখা একটা বই পড়তাম " কালো জাদুকর " তখন ক্লাস ফোরে পড়ি। পড়তাম আর ভাবতাম এই লোকটা কি কোন ভীনগ্রহের মানুষ নাকি এই ঘটনা গুলো সত্য!! আমার এক বন্ধু সবসময় উনাকে নিয়ে একটা কথা বলতো, " হুমায়ুন আহমেদ শুধু একজন লেখক নয়, উনি একজন ক্রিয়েটর " লেখার অসীম ভান্ডার ছিলো উনার কাছে। একেকটি চরিত্রকে জীবন্ত ফুটিয়ে তোলার অসীম ক্ষমতা উনার ছিলো। কলমের জাদুকর। হুমায়ুন আহমেদ একটি নাম। একটি উদাহরন। বাংলাদেশে হুমায়ুন আহমেদ কে নিয়ে অনেকে অনেক মন্তব্য করে কিন্তু তা আমি কানে নেই না! একটা ব্যপার সত্য যারা নিত্য পাঠক নন অর্থ্যাৎ পাঠ্যপুস্তক বা নোট বইয়ের বাইরে কোন বই পড়েন না তারাও স্যারের বই কিনেছেন । আমার সৌভাগ্য আমার মাতৃভাষা বাংলা, আর হুমায়ুন আহমেদ স্যারেরও। এবং উনার লেখাও বাংলা ভাষায় লেখা। গর্বিত আমি। স্যার মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক লেখা লিখেছেন। জোছনা ও জননীর গল্প অনন্য সাধারন একটি গল্প। আরও অনেক গল্প যা বলে অনুভূতি গুলো সম্পূর্ন প্রকাশ করা যাবে না।
সত্যি আমার সৌভাগ্য বাংলা পড়তে পারি। আর স্যারও বাংলাতেই লিখতেন। এ ছোট জীবনটা এরকম ভাবে উপভোগ করা যেত না যদি বাংলা পড়তে পারতাম।
স্যার যেখানেই থাকুন শান্তিতে থাকুন খুব শান্তিতে ঘুমান। আপনার জন্য আমার অসীম ভালোবাসা ও দোয়া রইলো সবসময়।।
...শুভ জন্মদিন স্যার...
লেখায় অনেক ভূল হতে পারে আসলে এত বড় গুণী একজন মানুষকে নিয়ে লিখে বিশ্লেষন করার মতসাহস আমমার নেই। তবুও একটু। লেখার প্রয়াস করলাম...
হুমায়ুন আহমেদ স্যারের কিছু তথ্য ( উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহীত )...
হুমায়ূন আহমেদ (ইংরেজি: Humayun Ahmed, ১৩ নভেম্বর, ১৯৪৮ – ১৯ জুলাই, ২০১২) বিংশ শতাব্দীর বাঙালি জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক গণ্য করা হয়। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার। বলা হয় আধুনিক বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের তিনি পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। সত্তর দশকের শেষভাগে থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি তিনি ছিলেন বাংলা গল্প-উপন্যাসের অপ্রতিদ্বন্দ্বী কারিগর। এই কালপর্বে তাঁর গল্প-উপন্যাসের জনপ্রিয়তা ছিল তুলনারহিত। তাঁর সৃষ্ট হিমু এবং মিসির আলি ও শুভ্র চরিত্রগুলি বাংলাদেশের যুবকশ্রেণীকে গভীরভাবে উদ্বেলিত করেছে। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীও তাঁর সৃষ্টিকর্মের অন্তর্গত। ধরা হয় বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর জনপ্রিয়তা তিনি শুরু করেন। তাঁর রচিত প্রথম সায়েন্স ফিকশন "তোমাদের জন্য ভালোবাসা" তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্রসমূহ পেয়েছে অসামান্য দর্শকপ্রিয়তা। তবে তাঁর টেলিভিশন নাটকগুলি ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয়। সংখ্যায় বেশী না হলেও তাঁর রচিত গানগুলোও সবিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাঁর অন্যতম উপন্যাস হলো নন্দিত নরকে, মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, মাতাল হাওয়া ইত্যাদি। তাঁর নির্মিত কয়েকটি চলচ্চিত্র হলো দুই দুয়ারী, শ্রাবণ মেঘের দিন, ঘেঁটুপুত্র কমলা ইত্যাদি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে দীর্ঘকাল কর্মরত ছিলেন। লেখালিখি এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বার্থে তিনি অধ্যাপনা ছেড়ে দেন। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী তাঁকে আটক করে এবং নির্যাতনের পর হত্যার জন্য গুলি চালায়। তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে যান।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৫৬