মানুষ স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে। একজন মানুষ যখন পৃথিবীকে বুঝতে শিখে, আস্তে আস্তে ভাবতে শুরু করে, কল্পনা করতে থাকে চারপাশের বাইরে, তখনই বিচিত্র স্বপ্নের মায়াজালে মানুষ নিজের পছন্দ অপছন্দ খুঁজে বেড়ায়। ছোটবেলায় আমরা কেউ রবীন্দ্রনাথ হতে চাই, কেউ চাই ডেল কার্নেগীর মতো বক্তা হতে, কেউ চাই পাবলো পিকাসোর মতো ছবিতে মহাকাব্য রচনা করি, কেউ আইনস্টাইনের মতো বিজ্ঞানের অদ্ভুত রহস্য উদ্ঘাটন করতে চাই। আমাদের কল্পনা যত বড়, স্বপ্নদেখা তত বড়। ছোটবেলায় স্বপ্নদেখার সাথে সাথে আমরা আরো একটা কাজ করি, আর তা হচ্ছে পৃথিবীর বিখ্যাত সব মনীষীদের জীবনী পড়ি। বিখ্যাত মানুষের জীবনী পড়তে পড়তে অবাক লাগে তারা কিভাবে সফল হলেন। ছোটবেলায় এমনসব জীবনী পড়তে আমরা আরও একটি বই পড়ি 'ইউ ক্যান উইন তুমিও জিতবে'। শিব খেরার লেখা সেই বইটি পড়ে আমরা জানতে পারি বিখ্যাত মনীষীরা কতবার ব্যর্থ হয়েছেন, তাদের সফলতার পিছনে কত বাঁধা এসেছে। তবুও তারা যে সফলতার বীজ হৃদয়ে বুনেছেন, সেটি বাস্তবে রূপ দিয়ে আমাদের কাছে অমর হয়ে আছেন। শিব খেরার তুমিও জিতবে পড়ে পড়ে আমরাও আমাদের স্বপ্নকে শুধু স্বপ্নে রাখিনি, চোখের সামনে দেখতে পেতাম বাস্তবে সে স্বপ্ন হাঁটছে, খেলছে, চূড়ায় বিজয়োল্লাস করছে। কালে কালে দেশ, সমাজ, পরিস্থিতি এমনকি স্বপ্ন ও বাস্তবতার পারদ যোজন যোজন ভিন্নতা পেয়েছে। শিব খেরার অনুপ্রেরণামূলক সেসব লেখা হয়তো এখনো প্রাসঙ্গিক তবে বর্তমান সময়ে বিচিত্র সমস্যা আরো প্রকট ও দুর্বিষহ হয়ে আমাদের মনোজগতে প্রতি নিয়ত হতাশ করে। হতাশার বিষে কত স্বপ্ন অকালে ঝরে পড়ে মাঝপথে, কত উদ্যােক্ত খেই হারিয়ে পেলে, কতজন ধূর, হবে না বলে ছেড়ে দেয় নিজের প্রতি সীমাহীন বিশ্বাস। মানুষের জীবনটা অদ্ভূত। শুধু টাকা পয়সা কিংবা ভোগ বিলাসে সুখ পায় পায় না। পাহাড় পরিমাণ সম্পদ থাকার পরেও কারো কারো কাছে জীবনটাকে ফানসে মনে হয়, মনে হয় এই বেঁচে থাকাটাই অর্থহীন। আবার অনেক দূর এগিয়ে এসে মনে হয়, ক্লান্ত! আর পারছি না কিংবা আমার দ্বারা কিচ্ছু হবে না। তখন সবার প্রয়োজন পড়ে একটুখানি অনুপ্রেরণা। এটা সত্য যে পরিবারের চেয়ে এ পৃথিবীতে অনুপ্রেরণা আর দ্বিতীয় কেউ হতে পারেন না। কিন্তু সমাজ বলতে আমরা এখন সোশ্যাল মিডিয়াকে বুঝি, ফ্রেন্ড বলতে ফেসবুক ফ্রেন্ড আর পরিবার বলতে অন্তর্জালের কাছের সব মানুষ। বিংশ শতাব্দী যদি সাইকেলের গতিতে পাল্টাতে থাকে তবে একবিংশ শতাব্দী উড়োজাহাজের মতো পাল্টে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত মানুষের সমস্যা, সম্ভাবনা,চাহিদা ও চারপাশ বদলে যাচ্ছে। মানুষের এসব সমস্যা বুঝে অনুপ্রাণিত করতে পারার মানুষটাকে আমরা বুকে টেনে নিই খুব সহজে।
বর্তমান ছাত্র ও তরুণ বিশেষ করে চাকুরী প্রত্যাশী হতাশ তরুণ ও বেকারদের বেঁচে থাকার ডাক্তার হিসেবে যে নামটি সবার পরিচিত তা হচ্ছে রোড টু সাকসেস বইয়ের লেখক সত্যজিৎ চক্রবত্তী। শুধু অনুপ্রেরণামূলক লেখার কারণে তিনি দিনে দিনে হয়ে ওঠছেন মানুষের আস্থা ও ভালোবাসার নাম। বিভিন্ন সেমিনার, ওয়ার্কশপ, বক্তৃতা মঞ্চে তিনি স্বপ্ন দেখাচ্ছেন, ভালোবাসার কাজটি করতে উৎসাহিত করছেন। দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন মানুষকে অনুপ্রাণিত করতে, এটা বুঝাতে ভালোবাসা নিয়ে চেষ্টা করলে কোন কিছুই বিফল হয় না। সত্যজিৎ চক্রবর্ত্তী আমাদের শিব খেরা, যে শিব খেরা পড়ে আমরা স্বপ্ন দেখেছি, সে স্বপ্ন পূরণে অনুপ্রাণিত করে যাচ্ছেন বর্তমানে তরুণদের আইকন এই লেখক। ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০০