মিশারী রাশিদ আলাফাসি, আপনার তাকে অনেকেই হয়তো চিনে থাকবেন। তার কুরআন তিলাওয়াত অতি সুমধুর যা অন্তরকে আলোরিত করে। উনার অনেকগুলো ভিডিও ইউ টিউবে আছে, সেগুলোর মধ্যে আমার কাছে এই ভিডিওটা এত ভাল লাগল, যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। সত্যি বলতে যখন আমি প্রথম ভিডিওটা দেখি চোখের পানি ধরে রাখতে পারি নি। আশাকরি আপনাদেরও ভাল লাগবে। আপনাদের সুবিধার্থে নীচে আমি তিলাওয়াতকৃত অর্থগুলো দিয়ে দিচ্ছি। আর দেখুন তারা কত আবেগ নিয়ে সালাত(নামাজ) পড়ে, আর আমরাও পড়ি কিন্তু আমাদের মন হাটে-মাঠে-ঘাঠে ঘুরে বেড়ায়। মহান আল্লাহ আমাদের সালাতে মনোযোগ বৃদ্ধি করে দিন এবং আমরা যেন এটুকু অন্তত বুঝতে পারি যে, সালাতে আমরা কি পড়ছি। আমীন।
ভিডিওটি ৮মিনিট ১৪সেকেন্ড মাত্র। অনুরোধ রইল সম্পূর্নটুকু দেখার তাহলেই বুঝতে পারবেন আমি কেন মর্মস্পর্শী বলেছি।
এখানে ক্লিক করুন
৪১ নং সূরা ফুসিলাত (হা-মীম সিজদাহ) আয়াত (১৯-৩৬):
১৯. আর সে সময়ের কথা একটু খেয়াল কর, যখান আল্লাহর এই দুশমনদেরকে দোযখের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিবেষ্টন করা হবে, তাদের অগ্রবতীদিগকে পশ্চাতবর্তীদের আগমন পর্যন্ত আটক করে রাখা হবে।
২০. পরে সকলেই যখন সেখানে উপস্থিত হবে, তখন তাদের কান, তাদের চোখ এবং তাদের দেহের চামড়া সাক্ষ্য দিবে তারা দুনিয়ায় কি কি করতেছিল।
২১. তারা তাদের দেহের চামড়াকে বলবে: "তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য কেন দিলে?" তারা জবাবে বলবে: আমাদেরকে সেই আল্লাহ কথা বলার শক্তি দিয়েছেন, যিনি সবকিছুকেই বাকশক্তি দান করেছেন। তিনিই তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলেন এবং এখন তাঁরই দিকে তোমাদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
২২. দুনিয়ার অপরাধ করার সময় যখন তোমরা লুকাচ্ছিলে, তখন তো তোমাদের এই চিন্তাই ছিল না যে, কোন এক সময় তোমাদের নিজেদের কান, তোমাদের চোখ এবং তোমাদের দেহের চামড়া তোমাদেরই বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে। তোমরা বরং তো মনে করেছিলে যে, তোমাদের অনেক কাজকর্ম সম্পর্কে আল্লাহও খবর রাখেন না!
২৩. তোমরা তোমাদের রব্ব সম্পর্কে এই যে ধারণা করেছিলে ইহাই তোমাদের ডুবিয়েছে আর ইহার জন্যই তোমরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছ।
২৪. এইরুপ অবস্থায় তারা ধৈর্য ধারণ করুক (আর না-ই করুক), আগুনই হবে তাদের ঠিকানা। আর যদি অনুতাপ অনুশোচনা করতে ইচ্ছা করে, তবে তার কোন সুযোগ তাদেরকে দেওয়া হবে না।
২৫. আমরা তাদের উপর এমন সব সঙ্গী-সাথী চাপিয়ে দিয়েছিলাম যারা তাদেরকে পিছনের ও সামনের প্রত্যেকটি জিনিসকে চাকচিক্যময় বানিয়ে দেখিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তাদের উপরও তেমনি আযাবের ফয়সালা কার্যকর হল যা তাদের পূর্বেকার জ্বিন ও মানব দলসমূহের উপর কার্যকর হয়েছিল। তারা বস্তুতই ধ্বংসের মধ্যে নিমজ্জিত হওয়ার যোগ্য ছিল।
২৬. সত্যের এই অমান্যকারীরা বলে: 'তোমরা এই কুরআন কক্ষণই শুনবে না। আর ইহা যখন শোনানো হবে, তখন সেখানে গন্ডগোল সৃষ্টি করবে; সম্ভবত এইভাবেই তোমরা বিজয়ী হবে।
২৭. .........এই কাফিরদেরকে আমরা কঠোর আযাবের স্বাদ আস্বাদন করাব এবং এরা যেরুপ নিকৃষ্টতম কাজ-কর্ম করতেছিল, তার পুরোপুরি প্রতিফল তাদেরকে দিব।
২৮. আল্লাহর দুশমনদিগকে প্রতিফল হিসাবে এই জাহান্নামই দেওয়া হবে। সেখানেই তাদের চিরকালের বসতি হবে। তারা আমাদের আয়তসমূহকে যে অমান্য করতেছিল এটাই হল সেই অপরাধের শাস্তি।
২৯. সেখানে এই কাফিররা বলবে: 'হে আমাদের রব্ব! আমাদেরকে একটু দেখিয়ে দিন সেই জ্বিন ও মানুষগুলোকে, যারা আমাদেরকে গুমরাহ করেছিল। আমরা তাদেরকে পায়ের তলায় রেখে নিষ্টেষিত করব, যেন এরা ভলোমত অপমানিত ও লান্ছিত হয়।
৩০. যেসব লোক ঘোষণা করেছে যে, আল্লাহ আমাদের রব্ব অতপর এর উপর অটল ও অবিচল হয়ে থেকেছে, নিঃসন্দেহে তাদের জন্য ফেরেশতা নাযিল হয়ে থাকে এবং তাদেরকে বলতে থাকে যেঃ ভয় পেয়ো না, চিন্তা করো না। বরং সেই জান্নাতের সুসংবাদ পেয়ে সন্তুষ্ট হও যার ওয়াদা তোমাদের নিকট করা হয়েছিল। (আরবী রব্ব শব্দের তিনটি অর্থ রয়েছে: ক. মালিক, মনিব খ. মুরব্বী, প্রতিপালক, পর্যবেক্ষক ও সংরক্ষণকারী গ. শাসক, আইন-দাতা, পরিচালক ও ব্যবস্থাপক)
৩১. আমরা এই দুনিয়ার জীবনেও তোমাদের সঙ্গী-সাথী আর পরকালেও। সেখানে তোমরা যা কিছু চাবে তাই পাবে। আর যে জিনিসের আকাংক্ষা তোমরা করবে, তাই তোমরা লাভ করবে।
৩২. এটিই হল মেহমানদারীর সামগ্রী সেই মহান আল্লাহর তরফ হতে যিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও দয়াবান।
৩৩. আর সেই ব্যাক্তির কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার হতে হবে, যে ব্যাক্তি আল্লাহর দিকে ডাকে, নেক আমল করে এবং বলে: 'আমি মুসলমান'।
৩৪. আর হে নবী! ভালো কাজ ও মন্দ কাজ সমান নয়। তোমরা অন্যায় ও মন্দ কাজকে দূর কর সেই ভালো কাজ দ্বারা যা অতীব উত্তম। তাহলে তোমরা দেখতে পাবে যে, তোমাদরে সাথে যাদের শত্রুতা ছিল তারা প্রাণের বন্ধু হয়ে গিয়েছে।
৩৫. এই গুণ কেবল তাদের ভাগ্যেই জুটে থাকে যারা ধৈর্য ধারণ করে। আর এই মর্যাদা লাভ করতে পারে কেবল তারাই যারা বড়ই ভাগ্যবান।
৩৬. তোমরা যদি শয়তানের পক্ষ হতে কোনরুপ প্ররোচনা অনুভব করতে পার, তাহলে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা কর। তিনি সব কিছু শোনেন ও জানেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:৩৩