এখানে ক্লিক করুন
"আপনার একটি খুবই সুন্দর নিখুঁত দেহ রয়েছে। আপনি আপনার হাত দ্বারা যে কোন জিনিস খুবই সাবধানতার সাথে ধরতে পারেন যা আধুনিক অনেক উন্নত মেশিনও পারে না। আপনি আপনার পায়ের দ্বারা দৌড়াতে পারেন। আপনার রয়েছে নিখুঁত চোখের দৃষ্টি যা অনেক উন্নত গুণসম্পন্ন ক্যামেরা থেকে অধিকগুণে ভাল। কান দিয়ে আপনি যখন শব্দ শোনেন তখন আপনি কোন হিসিং শব্দ শুনতে পান না, একদম ক্রিস্টাল ক্লিয়ার শব্দ শুনতে পান যা অনেক হাই-ফাই সাউন্ড সিস্টেমও তৈরী করতে পারে না। অনেক অঙ্গ রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আপনার কোন ধারণাই নেই কিন্তু ঐসকল অঙ্গগুলো একত্রে কাজ করে আপনাকে বাঁচিয়ে রেখেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আপনার হার্ট, কিডনী, লিভার এগুলোর উপর আপনার কোন কন্ট্রোলই নেই কিন্তু তবুও তারা নিখুঁতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আজকে হাজার হাজার বিজ্ঞানী এবং ইঞ্জিনিয়াররা অবিরামভাবে একত্রে কাজ করে যাচ্ছে ঐ অঙ্গগুলোর মত অঙ্গ বানাতে। কিন্তু তাদের এত পরিশ্রমের ফলাফল শূন্য এবং তারা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। সেইজন্য বলা যায়, আপনি একটি নিখুঁত সৃষ্টি কারণ যে অঙ্গগুলো মানুষও বানাতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
আধুনিক প্রযুক্তির তৈরী খুবই হাইটেক সম্পন্ন একটি হাত মানুষের হাতের তুলনায় একেবারেই নস্যি কারণ এই হাত রুক্ষ বা হাতের মতো মোলায়েম নয়। মহান আল্লাহ মানুষকে খুবই নিখুঁত করে সৃষ্টি করেছেন এবং এতই নিখুঁত যে তাতে কোন প্রকার অপূর্ণতা নেই।
আমাদের চোখ দিয়ে আমরা খুব পরিস্কার ভাবে দেখতে পারি যা খুবই সেনসেটিভ সম্পন্ন একটি ক্যামেরা দিয়ে দেখা সম্ভব নয়, আমাদের কান দিয়ে আমরা এতই পরিস্কার ভাবে শুনতে পারি যে আজকের আধুনিক সভ্যতার তৈরী মাইক্রোফোন এবং স্টেরিও সিস্টেম দিতে ব্যর্থ। এখানে সন্দেহ করার অবকাশ নেই যে এইসব নিখুঁত গুণসম্পন্ন দেহের অঙ্গগুলো স্বতস্ফুর্তভাবে সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের দেহের সকল নিখুঁত এবং সঠিক গুণাগূণ সম্পন্ন অঙ্গগুলো মহান আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন।
একটি অতি সাধারণ যন্ত্রেরও একজন ডিজাইনার থাকে সেখানে মানুষের মত একটি জাটিল সিস্টেমের প্রাণী আকস্মিক ঘটনার থেকে কিভাবে অস্তিত্বলাভ করতে পারে? এখানে কোন সন্দেহ নাই যে, মহান আল্লাহই সর্বপ্রথম মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। মহান আল্লাহই প্রথম মানুষের দেহে এমন ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছিলেন যে যেখান থেকে তাদের সন্তান জন্ম লাভ করেছিল এবং পরবর্তীতে সাফল্যের সাথে বংশ পরম্পরায় তা বলবৎ থাকে। মহান আল্লাহ মানুষের কোষের মাঝে এমন নিশ্চিত ব্যবস্থা করে দিয়েছেন যাতে মানুষের এই বংশ পরম্পরা অব্যাহত থাকে। মহান আল্লাহকে অসংখ্য ধন্যবাদ যে আমরাও এই নিশ্চিত ব্যবস্থার মাধ্যমে পৃথিবীতে এসেছি এবং এই নিশ্চিত ব্যবস্থার মাধ্যমেই মানুসের বংশ ধারা অব্যাহত থাকবে।
একটি উদাহরণঃ আপনাদের নিশ্চয়ই ধারণা আছে যে কিভাবে একটি কম্পিউটার অপারেট বা পরিচালিত হয়। একজন প্রোগ্রামার কম্পিউটারটির ডিজাইন করে থাকেন। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে বিশেষজ্ঞরা ফ্যাক্টরী বা কারখানাতে কম্পিউটারের বিভিন্ন জটিল যন্ত্রগুলো বানিয়ে থাকেন যেমনঃ মাইক্রোপ্রসেসর, মনিটর, কী-বোর্ড, সিডি, লাউড স্পিকার এবং এরকম আরো অনেক যন্ত্রাংশ। এখন ধরুন, আপনার একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার আছে যা দিয়ে আপনি অনেক কাজ সম্পন্ন করে থাকেন। কিন্তু এই কাজ গুলো করার জন্য সফটওয়ারের প্রয়োজন হয়ে থাকে যাকে ''প্রোগ্রাম" বলা হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞদের তৈরী করা এই প্রোগ্রামগুলো ছাড়া আপনি কম্পিউটার চালাতে সক্ষম হবেন না।
কম্পিউটার পরিচালনা বা অপারেট করার সফটওয়ারগুলোকে প্রোগ্রাম বলা হয় যা কম্পিউটার অপারেট করার জন্য অত্যাবশ্যকীয়। মহান আল্রাহকে ধন্যবাদ কারণ তিনি আমাদের জ্বিনের ভিতর ঠিক এই রকম তথ্য সম্বলিত প্রোগ্রাম স্থাপিত করে দিয়েছেন যার ফলে আমাদের দেহের অঙ্গগুলো নিখুঁতভাবে আমাদের অজান্তে কাজ করে যাচ্ছে।
মানবদেহের এই স্বয়ংক্রিয় প্রোগ্রাম একটি কম্পিউটারের চাইতে অনেক অনকে জটিল। কম্পিউটারের ক্ষেত্রে কেও বলছে না যে কোন এক আকস্মিক ঘটনায় কম্পিউটারটি অস্তিত্ব লাভ করেছে কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে কেউ কেউ বলছে মানবদেহের এই জটিল প্রোগ্রাম আকস্মিক ঘটনার ফলে অস্তিত্ব লাভ করেছে।
আমরা আরও জানি সকল প্রোগ্রামই আবার সকল প্রকারের কম্পিউটারের জন্য প্রযোজ্য নয়, এর জন্য একজন প্রোগ্রামারকে জানতে হয় কম্পিউটারটি কেমন এবং তার জন্য কোন ধরনের সফটওয়ার লাগবে। সুতরাং আমরা বুঝতে পারলাম, কম্পিউটার চালাতে হলে তার যন্ত্রাংশের সাথে সমাঞ্জস্যশীল প্রোগ্রাম লাগবে। এখানে একটি মজার বিষয় লক্ষ্য করুন, যদি কেউই এই যন্ত্রাংশগুলো এবং প্রোগ্রামগুলো না বানাতো তাহলে আমরা কম্পিউটার চালানো তো দূরের কথা কম্পিউটার কি তাই জানতাম না। মাবনদেহও ঠিক একই এই কম্পিউটারের মত। আমাদের দেহের কোষের ভিতর জ্বিনের মাঝে প্রোগ্রামগুলো ঠিকমতো দেওয়া আছে যার কারণে আমরা অস্তিত্ব লাভ করেছি। এখন প্রশ্ন হল, কে মানবদেহে এই প্রোগ্রামটি অস্তিত্ব স্থাপন করে দিয়েছিল? উত্তরটি সবারই জানা - সর্বাশক্তিমান আল্লাহ।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:২৪