somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এলোমেলো

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"মুক্তমন" - এটা আসলে কি? বেশ অনেকদিন ভেবেছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত কখনোই উপসংহারে পৌঁছাতে পারিনি। আর আজকাল অনলাইনে (বিশেষ করে ফেসবুকে) বিভিন্ন লিখা দেখে বরং আরও বেশি বিভ্রান্ত হই। আমার নিজস্ব ধারণার সাথে অনলাইন বেশিরভাগ ধারণার আকাশ-পাতাল তফাৎ! এবং সেই তফাৎ থাকাটাই স্বাভাবিক।

২৪ বছর হয়ে যাচ্ছে। একটা বিষয়ে "উপসংহারে" পৌঁছাতে না পারি,নিজস্ব একটা মতামত থাকা উচিৎ বলে মনে করি। আমারও একটা মতামত আছে এবং হয়তো হাস্যকর কিন্তু সেই মতামতের পিছনে কাল্পনিক চরিত্রের অবদান বেশি।

আমরা ছোটবেলা থেকে একটা "সিলেবাস" নিয়ে বড় হই। সেই সিলেবাসে কিছু কনটেন্ট থাকে। সেইসব কনটেন্ট অনেক সীমাবদ্ধ জ্ঞানের। সিলেবাসের কভার শুরু হয় ফ্যামিলি থেকে,তারপর সমাজ-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যাদের/যেসবের ভূমিকা আছে।

আমাদের শিখানো হয়,"এইটা" ঠিক কাজ,"ওইটা" ভুল কাজ। উদাহরণস্বরূপ,আমি মুসলমান পরিবারের সন্তান,আমাকে শিখানো হয়েছে - "ইসলাম সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম,বাকি ধর্মগুলো ভুল"। ফলস্বরূপ দেখা যেতো,আমি অন্য ধর্মের ভালো দিকেরও বদনাম করতাম। মুসলমান হিসেবে নিজেকে "সবসময় ঠিক" ভাবার একটা প্রবৃত্তি কাজ করতো। এখানে বলে নিচ্ছি,আমি ধর্ম নিয়ে বিতর্ক করতে আসিনি। আমি ধর্ম পালন করিনা কিন্তু নাস্তিক ও না। বিন্দুমাত্র কেয়ার করিনা এসব ব্যাপারে। এটা শুধুমাত্র আমি উদাহরণ হিসেবে আনতে চেয়েছি।

আমি মনে করে থাকি আমরা আমাদের সেই সিলেবাসের কনটেন্ট অনুযায়ী নিজেদের একটা পৃথিবী গড়ে নেই। সেই পৃথিবীতে "ভুল" আর "ঠিক" এর সংজ্ঞা আমরা নিজেরা ঠিক করি। সেই "ঠিক" আর "ভুল" এর সংজ্ঞা অনুযায়ী সবাইকে জাজ করি। ভুলে যাই,যে মানুষটাকে জাজ করছি তারও আমার মতো "নিজস্ব একটা পৃথিবী" আছে "ঠিক আর ভুল" এর।

আমার এক বন্ধু CSE পড়ে। সারাদিন ঘরেই থাকে,সরকারী ক্যাম্পাস হওয়ায় ক্লাস মিস দিলেও প্রব্লেম কম করে। ওর বাবা নেই কিন্তু দুই বড় ভাই আছে যারা সংসার চালায়,তার ভাবীও কাজ করে। তো ওর ভাইরা প্রায়ই ওকে বলে,"অনেককেই দেখি ছাত্রবস্থায় কাজ করে,তুমি কিছু করো না কেন?"। ওর আবার ফ্রিল্যান্সিং ভালো লাগেনা,মাঝে মাঝে নিজের কোনও খরচ এক্সট্রা লাগলে টুকটাক কাজ করে চালিয়ে নেয় তবে এছাড়া আর করেনা। তো ভাইদের ইচ্ছা সে কিছু করুক এখন থেকেই কিন্তু তার "ভালো লাগেনা" - এই বলে সরে যায়। বন্ধুদের সাথে রেগুলার আড্ডা,আত্মীয়ের বাসা যাওয়া কোনও কিছুতেই সে থাকেনা দেখে ভাইদের থেকে বিরক্তিই পায় বেশিরভাগ সময়,"অসামাজিক" বলে।

একদিন আমার বাসায় একটা ফ্রেন্ডদের পার্টি ছিল,ও আসে। তো রাতে ছাদে বসে আমি আর ও ড্রিঙ্ক করতেছিলাম,হয়তো এর প্রভাবে ও কিছুটা বলা শুরু করে-"আমার মা অনেক অসুস্থ,সে কাউকে তেমন বলেনা কিন্তু আমি জানি। একদিন তাকে বিছানায় পড়ে কাতরাতে দেখেছি,কিছুই করতে পারতেছিল না। ভাই-ভাবী কেউ বাসায় থাকেনা,ভাতিজি ছোট। আমিও যদি কাজ নিয়ে বাইরেই থাকি আম্মুর সিরিয়াস কিছু হলে অনেক সমস্যা হবে। আর কিছু না পারি,অন্তত হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারবো। তারউপর বছরখানেক পর আমি বাইরে চলে যাবো,মার পাশে কিছুদিন ভালোভাবে থেকে যাই। আর আমি যেতে যেতে ভাতিজি কিছুটা বড় হয়ে যাবে,ও খেয়াল রাখতে পারবে।" আমি বললাম,"তোর ফ্যামিলির ভুল ধারণা ভেঙ্গে দে?"। ও মুচকি হেসে বলে,"রাশির দোষ"।

অনেককেই বলতে শুনি,প্রত্যেক মানুষ আলাদা এবং সবাইকে তার মতো করেই একসেপ্ট করে নেয়া উচিৎ। কিন্তু আমি জানিনা,আমরা কয়জন সে কাজটা পারি। কারো একটা সিদ্ধান্ত আমাদের পছন্দ না হলে ঝগড়া করি,দূরে সরে যাই তাকে "ভুল" ভেবে। একসময় রাগ হয়তো চলে যায়,কিন্তু অহমিকার কারণে সেই দূরত্ব আর কখনো পাড়ি দেয়া হয়না।

নাস্তিকদের খুন করা,সেই খুনের দায় সব মুসলমানদের উপর দেয়া,দেশের কোটি কোটি টাকা চলে যাওয়া,সেই টাকার ঘটনা ধামাচাপা দিতে "তনু" হত্যার মতো কিছু চাঞ্চল্যকর ঘটনা তৈরি করা-এসবের মধ্যেই হয়তো আমরা পথ হারাবো।

আমিও পথ হারাতে চাই। একসময় না একসময় আমার ভালোলাগার পথ খুঁজে পাবো। সেই পথ আরেকজনের কাছে "ভুল" পথ হলেও আপত্তি নেই।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৫৮
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন পড়বেন, ফিকাহ জানবেন ও মানবেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:০০



সূরাঃ ৯৬ আলাক, ১ নং থেকে ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। পাঠ কর, তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন
২।সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ হতে
৩। পাঠ কর, তোমার রব মহামহিমাম্বিত
৪। যিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×