আবার জ্বালাইতে আসছি হাহাহাহা। এবার শরতের শিউলী...... শরত আর হেমন্ত এই দুই ঋতুতেই শিউলী ফুটা প্রভাত। সবুজ ঘাসের উপর শিউলী আহা কি স্নিগ্ধতা। ভাবছিলাম এবার হয়তো শিউলীর দেখা পাব না। সেই যে ২০১৩ তে গেছিলাম পুনে। সেখানে শিউলীর প্রতিটি প্রভাত আমার ছিল (যতদিন ছিলাম) অন্ধকার থাকতেই আমি সেই শিউলীর তলায় চলে যেতাম । কত যে ছবি উঠাইছি। তবে এইবার ক্যামেরায় নয় মোবাইলে। স্যামসাং এ সেভেন। ডিয়েসেলার ওজনধার ক্যামেরা সব সময় সাথে রাখা যায় না। রোজ সকালে তা-মীমকে স্কুলে নিয়ে যাই ব্যাংক কলোনীতে। আমাদের ব্যাঙক কলোনীতে মোট ৪টা গাছ দেখলাম শিউলীর। আইজিগেইট কলোনীতেও ছিল কিন্তু সেখানে ফুল থাকতো না পুজার জন্য সবাই নিয়া যাইত। কিন্তু এখানে দেখলাম কেউই নেয় না। স্কুলে যখন যাই তখন প্রথমেই শিউলীর তলায় নজর যায়। সাদা ফুলে বিছানো যেনো। সবুজের মাঝে দুধসাদা ফুলগুলো ঝলমল করতে থাকে। মানুষের জন্য ছবি তোলা যায় না। কে কি মনে করে। আর আমি বুইড়া বেটি -সবাই কি ভাবে কে জানে হাহা। ভাবুক গা-ফুল দেখছি ছবি উঠামোই উঠামো ব্যস। মোবাইল ক্যামেরায় নিচের ছবিগুলো....তো দেখতে থাকুন-উপভোগ করতে শরতের শিউলীর স্নিগ্ধতা। হালকা ঘ্রাণে মাতাল হোন....
১। সেই আমাকে একা ফেলেই তুমি চলে যাও। সে আমি জানি বাপু। আমি যে কে তোমার সে তো বুঝি..... অবহেলার ক্ষণ পেরিয়ে আমি এখন একাই চলতে শিখেছি। একাই কুঁড়াই ভোরের স্নিগ্ধতা। আরে...... একটু আধটু পিছু ফিরে তাকাতেও তো পারো বদের হাঁড়ি বদ।
২। সবুজের বুকে দুধ সাদা শিউলী-আহা কতটা শুভ্রতা সে তুমি যদি বুঝতে। তোমার মনটা এমন কেনো। একটু নুয়ে পড়ো না শিউলীর শুভ্রতায়-উপরে চোখ রেখে শুধু ঝাঁঝা রোদ্দুরই কুঁড়ালে- অহহো সেজন্যই তো তোমা মুখ পানে চাওয়া যায় না-রক্তবর্ণ চোখই তা বলে দেয়-আচ্ছা এসোনা এমন একটা শিউলী ভোরে আমার হাত ধরে-কি আসবে?
৩। ঘাসের বুকে শিউলীরা দেখো কতো লুকোচুপি খেলা খেলে যাচ্ছে। আর তুমি তো আমাকে ছেড়ে সেই সাতসমুদ্দুর তের নদীর ওপারে থাকো। এক সমুদ্দুর ভালবাসা বুকে-কতো উপেক্ষাই না পেলাম। বুকে নিতে এতো দ্বিধা কেনো হৃদ রাজ্যের সম্রাট।
৪। কোন এক ভোরে.... দূর্বাঘাসের বুক হতেকুঁড়িয়ে নিয়ে এসেছিলাম কিছু শিউলী তোমার জন্য-অপেক্ষায় চলে গেলো কত প্রহর-শিউলী চুপসে গেছে-আরো কত ভোর শিউলীরা আমার অপেক্ষায় ছিল...... আমি আর সে পথে মা মাড়াইনি। কার জন্য তবে শিউলী কুঁড়াবো আর!
৫। আমি এমুখো তুমি ওমুখো-আর কত কাল থাকবে শুনি মুখ ফিরিয়ে- সবুজ চাদরে দেহ মোড়ে সেই ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিলে-বহু সময়। আচ্ছা তোমার কি বাইরে আসতে মন চায় না। তোমার কি একটি প্রভাত খালি পায়ে দূর্বাঘাসের উপর হাঁটতে ইচ্ছে হয় না। তুমি কি প্রকৃতির স্পর্শ চাও না। ----- প্রকৃতি ছাড়া আর কে এমন স্নিগ্ধ স্পর্শ দিবে তোমায়-এমন আনন্দ আর কোথায় পাবে শুনি-হাতে নিয়ে দেখো কোমল শিউলীদের পাপড়ি-আমি নিশ্চিত তুমি ডুবে যাবে প্রেমে-এবং সে ফুল তুমি আমার খোঁপায় দিবে ঝুলিয়ে-শুনো আর কুমায় থেকো না-
৬। হেমন্তের কুয়াশার চাদরে মুড়ানো প্রভাত আসে যেনো আমার তরেই। অসংখ্য মানুষ শিউলীর পথ মাড়িয়ে হেঁটে যায় । কই কখনো তাদেরকে মুগ্ধতা কুঁড়াতে দেখি না। আচ্ছা তোমরা সবাই এত ব্যস্ত কেনো জীবন নিয়ে। আরে দুএকটা প্রহর কাটিয়ে দাও বাপু নিজেদের মতো করে। কই আমার সাথে শিউলীদের ছুঁয়ে দিবে তা না-আমায় দেখে ঠোঁট উল্টিয়ে হাসো আবার হাহাহা।
৭। সবুজের পাতায় পাতায় শিউলীরা বসে থাকে নিশ্চুপ -শরত হেমন্তের প্রতিটা ভোরে। ওদের তরুন যৌবনকাল কেটে যায় আঁধারে। অথচ জরাজীর্ণকে গলে জড়াতে ওরা ঝরে পড়ে -অগোচরে। একটু পরেই ঝাঁঝাঁ রোদ ওদের পুড়িয়ে দিবে। আমিও তবে এমন প্রহরে যাবো-কেউ নেই আশেপাশে একাকি প্রহর। আমিও একদিন হবো ঝরে পড়া শিউলী।
৮। এখানে আজো রোদ উঠেনি। আকাশ মেঘলা-তবে হাওয়া বইছে দমকা। চারিদিকে বিষন্নতা তবুও ভাল লাগে। ভালবাসাময় অনন্য পৃথিবী। কয়েকদিন যাব ভেজা পাতার স্পর্শে আমার এমনিতেই ভাল হয়ে আছে। ছোট কামিনী গাছের শুভ্র ফুলের ঘ্রাণ এখনো যেনো গায়ে মেখে আছি। প্রতিদিনই শিউলীর পথ মাড়িয়ে হাঁটি।
৯। শিউলীরা যেনো আমার অপেক্ষাতেই প্রহর গোনে। আমি ফুলগুলো সন্তর্পনে সরিয়ে রাখি রাস্তা হতে। ফুল কুঁড়াতে গেলে আমার হাঁটার সময় থাকবে না । তবে দু একটা ক্লিক হয়ে যায় মোবাইলে-কত শত শিউলীর ফটো মেমরী কার্ডে জমা হয়ে আছে। আচ্ছা তুমি কি কামিনী ফুল পছন্দ করো? না শিউলী-একদিন বলে দিয়ো ।
১০। এত কথা বলো কিন্তু ফুলের প্রতি ভালবাসা তোমার-সে দেখিনা কেনো? তুমি কি ফুল ভালবাসোনা আশ্চর্য্য । তাহলে ফুল দেখলেই তোমাকে ভাবি কেনো-হুদাই কামে। শুনো আমি তোমার কাছে ফুল ছাড়া আর কিছুই চাইনা। সে তুমি দিছো-আজাইরা অপেক্ষা-আমড়া।
১১। পুরো সকালটা বৃষ্টিস্নাত। সকালে উঠেই স্কুলে গেলাম। ঝিরিঝিরি বৃষ্টির আবেশটাই অন্য রকম। আর এমন দিনে বাইরে বেরোলে খুব ভাল লাগে। পরিবেশটাই মনোমুগ্ধকর।ভেজা ঘাস, ভেজা পাতা, ভেজা অনুভুতি উফ দারুন সকাল আজকের ভেজা শিউলী।
১২। একটা ছোট কামিনী গাছে অসংখ্য ফুল, ভেজা ভেজা শুভ্রতা, এসবের ছবি কি না উঠিয়ে থাকা যায়... এক ছাত্রি বলতেছে তার বান্ধবিরে এই দেখ দেখ কি সুন্দর বেলি ফুটে আছে হা হা হা আমি বললাম মারে এগুলো ত কামিনী . এত সুঘ্রাণ খুব কম ফুলেরই হয়। আর শিউলীরা তেমনই নিশ্চুপ বসেছিল গাছের ডগায়। শিউলীদের ছবি উঠিয়েছি তোমায় দেব বলে। আচ্ছা তুমি কি দেখবে?
১৩। তারপর হাঁটতে গিয়ে ভেজা পাতাদের ছুঁয়ে দেখলাম, ছবি উঠালাম। ভেজা রাস্তায় শিউলীরা শুয়ে আছে আর পথচারিদের পায়ের তলায় পিষ্ট হচ্ছে দেখে খুব খারাপ লাগছিল। আমি কখনো ফুলের উপর মা মাড়িয়ে হাঁটি না, ফুল বাঁচিয়ে হাটি। পুরো কলোনীতে হাঁটলাম ফুরফুরে মন নিয়ে। ভাল লাগার মুহুর্তগুলো এভাবে আমার কাছে ধরা দেয় শোকর আলহামদুলিল্লাহ। তুমি থাকলে ভালই হত। দুজনে কথা বলে বলে হাঁটতাম আর ছবি তুলতাম। সেই তুমি কিনা ঘুমেই কাটিয়ে দিলে অফুরন্ত সময়।
১৪।
একটা দুইটা হাজার কটা
শিউলী দেবে এনে
এসো ব্ন্ধু নিয়ে যাবো
শিউলীর তলায় টেনে।
আজকে তুমি শিউলি নিবে
হাতের মুঠোয় করে
মালা গেঁথে দাও পরিয়ে
চুলের খোঁপার পরে।
১৫। সবুজ ঘাসে নিচে শিউলীরা একটু পরেই তলিয়ে যাবে। চুপসে যাবে শুভ্রতা-ঠিক যেনো আমার মতোই। আমিও হারিয়ে যাবো । মাটিতে মিশে যাবো -তুমি আর খুঁজলেও পাবা না কয়ে দিলুম।
১৬। লুকোচুরি খেলা ঘাসের সাথে শিউলীর
আমার সাথে তোমার প্রেমের খেলা তবে কবে থেকে শুনি
সেই যে হারিয়ে গেলে-বসন্ত আসার আগেই।
১৭। শিউলীর মালা গেঁথে রাখছি
বন্ধুরে তোর জন্য
একটা মালা হাতে নিয়ে
করিস আমায় ধন্য।
১৮। আমি একা থাকতেই ভালবাসি। সবাই চলে যাক যে যার পথে। ওরা তো বাস্তবে বসবাস করে আর আমি কল্পনায়। আমি কল্পবাসি-ভালবাসি একাকিত্ব। কুঁড়াই মুগ্ধতা দু চোখ ভরে। আমি স্রষ্টার সব কিছুকে ভালবাসি। অনুভব করি মন দিয়ে। আর তুমি যদি আমায় ভাল বাস তবে ফিরে এসো এখানেই।
১৯। সবুজ সাদায় মাখামাখি বেলা। কতটা স্নিগ্ধ সে তুমি যদি এসে দেখতে। দূর্বার গালিচায় শুয়ে থাকে শিউলীরা- কলকল হাসি সে শুধু আমি শুনতে পাই। ওরা অনন্ত চলে যাওয়ার আগেও হেসে উঠে কিলকিলিয়ে।
২০। একটু পড়েই পথচারীরা ওদের পা মাড়িয়েচলে যাবে। তবু ওরা মুগ্ধতা বিলিয়ে অনন্তের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়। বৃষ্টিস্নাত বেলায় ওদের সাথে দেখা হয়েছিল আমার।
২১। এবার তো তুমি বিশ্বাস করবে । দেখো না মুঠোয় পুরেছি কত শিউলী। মালা গাথব আর ভাসিয়ে দিবো তোমার উদ্দেশ্যে তুমি ঘাটে বসে থেকো। আমার হাতের ছোঁয়া যদি তুমি ছুঁতে চাও তবে-শিউলীর অপেক্ষায় একটি ভোর তুমি কাটিয়ে দিয়ো
২২। তোমার বিরহে আমি এমনভাবে চুপসে থাকি দিবারাতি। তুমি একবারও খবর নাও না। এত চিঠি লিখলাম একটার উত্তরও দিলে না। আশ্চর্য্য
২৩। এই এই করছো কি-এভাবে ঝাপটে ধরে আছো ক্যান শুনি-ভালবাসা আহা ভালবাসা। আচ্ছা এমন শুভ্র একটা শাড়ি কিনে দিবে। শিউলী রঙা? দিবে নাকি
২৪। হেমন্তের প্রভাত মানেই শিউলীর প্রহর। এক নয় দুই নয় প্রতিটি সকালই হয় আমার শিউলী ভোর। আমি মুগ্ধতা কুড়াই এভাবেই
২৫। শুধু ঘাস নয় ওরা কালো মার্বেল পাথরেরও স্বাধ নিতে চায় । দেখো কিভাবে ঝরে পড়ে আছে
২৬। ওরা ঘুমে বেঘোর। চোখ খুলে যখন দেখবে তখন ওরা ভূতলে গড়িয়ে পড়েছে। ওদের শেষ নি:শ্বাস ওরা এভাবেই ত্যাগ করে থাকে।
২৭। চলো বসি একটু শিউলীর পাশে-দেখো ঘাসের গালিচাকতটা নরম তুলতুলে। এই এক কাপ চা খাবে শিউলীদের সাথে?
২৮। কিছু চুপসে গেছে আর কিছু শিউলী হেসে গড়াগড়ি। এরা আমার মতো বয়সের ভারে নুয়ে পড়েও ওরা হাসতে জানে হাহাহা।
২৯। আহা কতটা স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে আছে বৃষ্টি স্নাত পথে। তুমি আর আমি এই পথ ধরে একদিন হাঁটব তুমি যদি রাজী হও। কি আসবে তো হাত ধরে হাঁটতে। সব কয়টি শিউলী তোমায় দিলাম হৃদ রাজ্যের সম্রাট।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১০