©কাজী ফাতেমা ছবি
প্রতিদিনই আমার আশার সলিল সমাধি হতে দেখি দু'চোখ দিয়ে
প্রতিবার ভেবে নেই,নিজের সব শ্রম,ঘাম,কষ্ট উজার করে দিয়ে
দিয়েছি আশার ক্ষেতে,এবার হয়তো খুব ভাল হবে আশার ফলন;
জমানো সকল অর্থ, বৈভব, ভালবাসা সঁপে দিয়ে নিজে থাকি কাঙ্গাল...
ভাবি,দিয়েছি সকল,তাতে কি,অজায়গায় ফেলিনি তো! আশার জমি তো
আমার তাই কার্পণ্য করিনি কখনো এতটুকু!
জমিয়েছি যা-ই কিছু তিল তিল বিনা দ্বিধায় ছড়িয়েছি আশার ক্ষেতে...
আবার জমিয়েছি যা থলে উল্টে ক্ষুদ্র কণাটুকুও ঢেলে দিয়ে দিয়েছি...
বিনিময়ে ফুটো থালা হাতে করুণার ভিখারী হয়ে মনের চৌরাস্তার
মুড়ে দাঁড়িয়ে থেকেছি...বার বার।
এইতো প্রথমবার উপলব্ধি করতে পারছি, যা পাওয়ার নয়কো,
অথবা যা অনুভব করার নয় বা যা স্পর্শের যোগ্য নয়...একেবারে
হাজার মন নিংড়িয়ে দিলেও লাভ নেই, অনুর্বর সে আশার ক্ষেতটি
উর্বর হবে না জানি কষ্মিনকালেও।
এর জমিনটা ইট কনক্রিটের,আগাছায় মুড়িয়েছে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ
ইট কংক্রিট উঁকুন বাছা করে বাছাই সম্ভব নয় আমি বুঝে গেছি
দ্রুত আগাছা নিধন অত্যাবশ্যক ;কিন্তু কিভাবে?
অপেক্ষায়! আর কত?
কত বসন্তই এলো গেলো আশার গাছে ফুটেনিতো বাসন্তি রঙা ফুল,
পাতাই তো নেই,কুঁড়ি নেই শাখে শাখে,ফুটেনি,পলাশ শিমুল,অশোক।
খরতাপের নিদাঘ প্রহর কেটে যাচ্ছে তৃষ্ণায়,বর্ষার অঝোরধারা
বয়ে গেল,ভেসে গেলো আশার জমিন।
শরতের শুভ্র নীল মেঘেরা ভাসিয়ে নিয়ে গেলো জমিনের উর্বরতা
আমার আশার বীজ থেকে উৎপন্ন হয়নি আজো মুগ্ধ'র সবুজ কুঁড়ি...
হেমন্তের কুয়াশারা এসে বসেনিকো আশার ক্ষেতের ঘাসের ডগায়;
শীতের বিবর্ণ রঙ,এলোমেলো ধুলো আমার জমিনে চাদর বিছিয়ে
দেয় প্রতি ঋতুতেই।
আর আমি সেই আছি গ্রীষ্মের নিদাঘ তাপ অথবা বর্ষার ঝুম বৃষ্টি,
শরতের পেঁজাতুলো নীল অভ্র অথবা কাশফুলের নরম ছোঁয়ায়,
ছাতিমের দুধ সাদা ফুলে হেমন্তের শিউলির মাতাল ঘ্রাণ নিয়েই।
শীতের মিঠে রোদ্দুর উমে বসে থাকি আরেকটি বসন্তের অপেক্ষায়...
তবে জমিনে ফসল ফলুক না ফলুক আমি বিলিয়ে যাব অকাতরে;
আর কত নিলে তুমি, হে আশার জমিন ফসল ফলাবে আমার জন্য,
ক্ষীণ আশাটাই শেষে আশার ক্ষেতে জলাঞ্জলী দিয়ে গালে হাতটা দিয়ে...
বিষন্ন দৃষ্টি নিয়েই বসে থাকি আমরণ।
১৪/৮/১৪
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৪