somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবনের প্রতিটি দিনই এক একটা উপন্যাস -৫(আজ রোদ্দুরের মন খারাপ)

০৭ ই মে, ২০১৬ দুপুর ১২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
মিনি-অনু উপন্যাস-৫



রোদ্দুর হতাশ হলো হঠাৎ। কিছুই ভাল লাগছিল না তার। ইঁতিউঁতি মনের কোণে কত রকমের ঝড় এসে হানা দেয়। দিনভর ব্যস্ত না থেকেও ব্যস্ত থাকার ভান...... এটা সেটাতে মন দেয়ার চেষ্টা। তবুও কি রোদ্দুর ঝলকে উঠে। নেতিয়ে পড়ে গোধূলীর অস্তে যাওয়া সূর্যের মতো।

মন ভুলানো কোনো কথাই রোদ্দুরের মন ভরে না। দীর্ঘশ্বাস জমতে জমতে বুকের বামের পাঁজরে ব্যথা অনুভূত হয় তার। শেষে নি:শ্বাস টেনে জুড়ে ছেড়ে দেয়. তাও কি দীর্ঘশ্বাস বের হতে চায় । হতচ্ছাড়া দীর্ঘশ্বাসগুলো পাঁজরের হাড়ের সাথে সেঁটে রয়েছে যেনো।

রোদ্দুর চোখ বন্ধ করে প্রহর গোনে কখন পাঁজরের বাতায়ন খুলবে.......সাঁই সাঁই উড়ে যাবে সকল দীর্ঘশ্বাস ডানা মেলে। কই! না, সেতো হবার নয় । রোদ্দুর আবারও হতাশ হয়। তৃষ্ণায় আকণ্ঠ ডুবে বসে থাকে রোদ্দুর হতাশার নদীতে। দিনের আলো তীক্ষ্ণ হয়, সূর্য তখন মধ্যাকাশে। রোদ্দুর ভাবে, এই বুঝি শেষ হলো হতাশার প্রহর। কানে ভেসে আসেনা সুখের রুনুঝুনু সুর। কোনকিছুতেই যখন মন তার উঠছিল না তখন সে সঙ্গীতের সুরে ব্যস্ত হতে ছুটে যায়।

"সকাল আমার গেল মিছে, বিকেল যে যায় তারি পিছে গো-
রেখো না আর, বেঁধো না আর কূলের কাছাকাছি ।।
ঢেউগুলো যে আমায় নিয়ে করে কেবল খেলা ।
ঝড়কে আমি করব মিতে, ডরব না তার ভ্রুকুটিতে-
দাও ছেড়ে দাও, ওগো, আমি তুফান পেলে বাঁচি ।।"

রোদ্দুর সুরে সুরে হারায়। মত্ত হয়ে যায় গানের রাজ্যে। একই গান রিপ্লে হতে থাকে বারবার।তৃষ্ণা যেনো মিটে না। সব কিছুরই অন্তিম আছে। গানের মুহুর্তও অন্তিমে এসে গেলো। ফের সেই হতাশা পেয়ে বসল আবার রোদ্দুরের মনে। একি! কিসের তরে এমন হতাশা। কারণ খুঁজে না পাওয়া রোদ্দুর ডুকরে কেঁদে উঠে নিরবে। অস্ফুট স্বরে কিছু বলতে গিয়েও থেমে যায় তার কণ্ঠ।

দুপুর গড়ায় বিকেলের আলো রোদ্দুরের চোখে এসে পড়ে। রোদ্দুর ঠাঁয় বসে থাকা স্থান ছেড়ে উঠে যায় হতাশা কাটানোর উদ্দেশ্যে। টেলিফোনের কাছে বসে যখন রোদ্দুর ১ ২ ৩ ৪ স্পর্শ করলো নাম্বারগুলো এলোমেলো হয়ে রং নাম্বারের রিংটোন এসে কানে ধাক্কা লাগায় রোদ্দুরের। আবার আরেকটা হতাশা। কল যেতেই লাগল যেতেই লাগল ........ উল্টো রথে চড়ে কেউ টেলিফোনের এসে বসেনি ........ কেউ ধরলো অথবা ধরল না....... কেউ কেটে দিল বা দিল না। উল্টো হতে শুধু হতাশার ধ্বনি বাজতে লাগল সুর অনুরণনে। কানে ধরাল বিষের জ্বালা........ খটাস করে রিসিভার রেখে রোদ্দুর দখিনের বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়.......

বিকেলের মিষ্টি তীক্ষ্ণ রোদ সভ্যতার গ্লাসের রিফ্লেকশনে রোদ্দুরের চোখ জ্বালিয়ে দেয়। রোদ্দুর তবুও নির্বাক নির্নিমিখ দৃষ্টিতে দেখে যাচ্ছে....... মিথ্যার বেসাতী, হতাশার বেসাতী....... লেনদেনের পাল্লায় ভুলের বাটখারা। উঁচু নিচু হয়ে ঝুলতে থাকে মুখাভিনয়......... মুখোশ পড়া যত্তসব নিত্যসামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসে আছে ফুটপাত অলিগলিতে.........। বিতৃষ্ণায় রোদ্দুরে বুকটা আবার ভরে যায়। রোদ্দুর ঠাঁয় দাঁড়িয়ে বারান্দার রেলিংয়ে ধরে।

রোদ্দুরের মনে উঠোনের রোদ নিভে যাচ্ছে ক্রমশ: হতাশারা বার বার ভীড় বাড়াচ্ছে। মনের আনাছে কানাছে কাঁটাতারের বেড়া যেনো। এদিক সেদিক নড়লেই লেগে যাচ্ছে অঙ্গে। ব্যথায় কুকড়ে রোদ্দুর মন নিয়ে যায় শাপলার ঘূর্ণাবর্তে....... যানজটের মুর্হুমুহু যন্ত্রের ধ্বনী আর ধোঁয়ায় বিষাক্ত করে দিচ্ছে বিকেলের মিষ্টি রোদ্দুর প্রহর। যাচ্ছে আসছে মানুষগুলো। কে জানে কার ঠিকানা কোথায়। অথবা কার মনে রোদ্দুরের মনের মতই হতাশা ভীড় করে আছে!! রোদ্দুর দেখে আকাশে দৃষ্টি দিয়ে । শুভ্র অভ্ররা ভেসে বেড়াচ্ছে........ সাথে উড়ছে নীল মোহ'রা......... মোহ টানছে চুম্বকের টানে। রোদ্দুর ভেসে যাচ্ছে ক্রমশ: নীলে নীলিন হয়ে মোহের ঘুড়িতে সওয়ার হয়ে।

ধরা হতে কেউ টেনে ধর..... রোদ্দুর চলে যাচ্ছে অন্তিমে অথবা ভালবাসাদের সীমান্ত ছেড়ে। প্রবোধের আশ্রয়ে নিতে চাইলে রোদ্দুর হাতের মুঠোয় আসবে না। রোদ্দুরও এক মোহময়ী আলো........ অনুভব করা যায়, ছোঁয়া যায় না। কেনো রোদ্দুরকে হতাশার জালে আটকাতে চাও তোমরা???????

রোদ্দুরের উত্তাপ তীব্র হতে হতে গলে পড়ছে মাটিতে........ আবার হতাশা ধ্যত্তেরি ছাই!!!!!!!!

রোদ্দুর প্রভাতের সোনা ঝরার আলোর সূতো দিয়ে বোনা হলুদ লাল কমলা সোনালী আভার শাড়ী পড়েছিল আজ। দিন গড়াতেই দেখা গেলো রোদ্দুরের রঙধনু রঙা শাড়ীর রঙ বিবর্ণ হয়ে ছাই রঙ ধারণ করেছে...........

আচ্ছা!!!!! রোদ্দুর কি কারো অপেক্ষায় ছিলো? আপনারা জানেন কেউ??? :)

সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০১৬ দুপুর ১২:০৬
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিলে সহসা=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫০



কার্তিকের সকাল, হিমাবেশ, ঘুমে বেঘোর
নিস্তব্ধ পরিবেশ, এই কাক ডাকা ভোর,
দখিন বারান্দার পর্দা দিলে সহসা খুলে,
দিলে তো বাপু ঘুম থেকে তুলে!
এবার চা করো দেখি!

ছুটির আরাম চোখের পাতায়, আমি নিঝুম পুরীতে
ঘুমের বাজালে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণপরিষদের সাথে বিএনপির সখ্যতার কারণ কি ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭


বিএনপির নেতাদের সাথে গণপরিষদের নেতাদের ঘন ঘন সাক্ষাতের বিষয়টি মিডিয়াতে প্রচারিত হচ্ছে।বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে যখন বিএনপি হাই কমান্ড থেকে পটুয়াখালী -৩(দশমিনা-গলাচিপা) আসনের নেতাকর্মীদের কাছে চিঠি দেয়া হয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কি অন্ধকার?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫২



সুকান্তর একটা কবিতা আছে, দুর্মর।
"সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়:, জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়।" মানুষের ভবিষ্যৎ বলা সহজ কিন্তু একটি দেশের ভবিষ্যৎ কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×