এখানে আমার ৪০০ তম পোষ্ট
========================
(একটি কাল্পনিক চিঠি)
শরতের অভ্র,
শুরুতে প্রীতি ও শুভেচ্ছা। আশা ও বিশ্বাস ভাল আছো খুব। অনেক আশা নিয়ে উত্তর পাবার আশায় লিখেছিলাম ছোট একটি চিঠি। তোমার মত সুন্দর বা গুছিয়ে লিখতে পারিনি হয়তো। তবে চিঠির শব্দে শব্দে ভরা ছিল আবেগ। বাক্যে বাক্যে ছিল ভালবাসার সুরের অনুরণন। তুমি কি সে সুর অনুভব করতে পারোনি!! অনুভূতি জেগে উঠেনি একবারো!! এতটা তুচ্ছ আমি!! তুমি তো শরত আকাশের নীল অভ্র, রোদ্দুর তোমাকে ছুঁতে পারে না ! তুমি ভেসে বেড়াস রোদ্দুরের মন আকাশে পেঁজাতুলো অভ্র। তাই হয়তো চিঠির উত্তর দাওনি। রাগে অনুরাগে আবারো বসলাম চিঠি লিখতে।
হাড় কাঁপানো শীতের রাতে লিখতে গিয়ে কেঁপে উঠেছি বারবার। তবুও কলম আমার থামেনি। কত অপেক্ষা!! হায়!! মিথ্যেই কিছু লিখে ভাসিয়ে দিতে জলে.. ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভেসে আসত জলে ভিজে চুপসে যাওয়া চিঠিখানি আমার মনের ঘাটে। না হয় মনের আগুনে শুকিয়ে নীল কালিতে লেখা চিঠিটি মুছে যাওয়া আধো আধো শব্দের বাক্যগুলো স্বস্তি নিয়ে পড়ে ফেলতাম এক নি:শ্বাসে।
তোমার কাছে আমার চাওয়ার কিছুই নেই অভ্র। আমার জীবনের বেলা ফুরিয়ে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। আর তোমার জীবন নব আলো ফোটা ভোর। আমি শুকনো পাতা কিংবা ঝরা পাতার গল্প। লাল কমলা পাতা হয়ে ঝরে পড়ব অবিরাম। পথিক আমার উপর দিয়ে মর্মর সুর তোলে গান গাইতে গাইতে যাবে। আর তুমি হেমন্তের শিশির ভেজা দূর্বাঘাস হতে কুঁড়াবে শরতের শিউলি। মালা গাঁথবে হয়ত প্রিয়ার জন্য অথবা তাকে উদ্দেশ্য করে শিউলির মালা ভাসিয়ে দিবে উছলে উঠা ঢেউয়ের মাঝে।
গোঁধূলির আবিরে আমি মিশে যেতে যেতে আঁধার আসবে নেমে। মিইয়ে যাব আমি নিকষ কালোতে। হাত বাড়িয়ে স্পর্শ করতে চাইলেও পাবে না আর খুঁজে এ আমায়!! তুমি ঘুড়ি হয়ে উড়ে উড়ে ছুঁতে চাইবে আমায় কিন্তু তখন দুনিয়া আঁধারে গেছে ছেয়ে। কি করবে তখন তুমি?? রঙিন সূতো ছিঁড়ে তো আর তুমি চাইবে না যেতে আমায় পেতে এ আমি ঢের জানি। আমি পুরাতন জড়াজীর্ণ,শুধু মন আর ভালবাসা ছাড়া আর কি দিতে পারি বলো!!কেনোইবা তুমি আমায় খুঁজে ফিরবে পাওয়ার জন্য। তোমার শুরু,আমার শেষ।
কেনো-যে তোমার জন্য মনে এত ভালবাসা জমা হচ্ছে ধীরে ধীরে। তোমার আঙ্গুল স্পর্শ করতে বড্ড ইচ্ছে হয়। তোমার স্পর্শে শিহরিত ইচ্ছে হয়। জানি এসব আকাশ কুসুম কল্পনা। তোমার মোহ ক্রমেই তোমার দিকে টানছে। ভাবতে কষ্ট হচ্ছে, নিজের উপর নিজেরই লজ্জা হয় খুব। ক্ষমা করো অভ্র আমায়। উত্তর দিবে না,জেনেও লিখছি। লিখে যাচ্ছি। আবেগ ধরে রাখতে পারছি না,বুকের অথৈ-এ চিনচিন ব্যথা করছে অভ্র,সেতো তোমার জন্যই।
তুমিই বলেছিলে আবেগ অভিমান প্রকাশ করতে হয় ভালবাসা প্রকাশ করতে হয়। তাই প্রকাশ না করে থাকতে পারছি না আর।তুমি আমাকে বেহায়া ভাবতে পারো। ভ্রু কুঁচকিয়ে অবজ্ঞা ভরে চিঠিটি পড়বে কি পড়বে না বসে আগে ভেবে নিবে। আমি ত আর গুরুত্বপুর্ণ কেউ না। লিখতে গেলে লিখা শেষ হবে না অভ্র। লিখব না লিখব না বলে অনেক লম্বা করে লিখে ফেললাম প্লিজ বিরক্ত হয়ো না। উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম কিন্তু।
ইতি-রোদ্দুর
বি:দ্র- চিঠি পড়ে ছিঁড়ে জলে ভাসিয়ে দিয়ো প্লিজ। যদি পার উত্তর দিয়ো। অভ্র ভালবাসার কথা বলতে হয় না বুঝে নিতে হয়। আমি ভেবে রেখেছি আমি আর তোমার আশে পাশে আসব না। কষ্ট পেতেই দূরে চলে যাব। তুমি কষ্ট পাও এমন কোনো কাজই করবো না। এই যে বললাম তোমার শুরু আমার সারা গানটা শুনেছ নিশ্চয়ই.. তোমার হলো শুরু আমার হলো সারা তোমার আমার জীবন এমনি দিশেহারা। ভাল থেকো অভ্র। অনেক ভাল থেকো। সম্মুখ জীবন তোমার আলোকিত হউক। আমি ফিরে গেলাম তোমা হতে, অথবা ভেবে নাও হারিয়ে গেলাম, খুঁজতে যেয়োনা আর আমায়... শুনো অভ্র আমি হলাম ঝরা পাতার কাব্য আর তুমি শরতের আকাশে একটুকরো শুভ্র অভ্র।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:২৭