somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হ্যারিটেজ পার্ক ভ্রমণ.......

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কয়েকদিন আগে ঘুরে এলাম ফ্যান্টাসি কিংডম, হ্যারিটেজ পার্ক আর ওয়াটার কিংডম। বাচ্চাদের নিয়ে এই প্রথম বেড়ালাম ফ্যান্টাসিতে। সকালে রওয়ানা দেই সিএনজি যোগে। বেলা প্রায় একটার দিকে গিয়ে পৌঁছি সেখানে। টিকেট কেটে ঢুকি। প্রথমেই সবাই মিলে পুরো ফ্যান্টাসি এলাকা ঘুরলাম।



তারপর ট্রেনে চড়লাম সবাই মিলে । ফ্যান্টাসিতে বড়দের রাইডই বেশী। বাচ্চারা এসবে উঠতে ভয় পাবে তাই আর কোন রাইডেই চড়া হয়ে উঠেনি।



কিছুক্ষণ ঘুরে একটা রেস্তোরাতে চারজন মিলে দুপুরের খাবার সেড়ে নিলাম। কড়া রোদ থাকাতে বেশ কষ্ট হয়েছে। বিকেলে গেলে হয়তো মজা একটু বেশী হতো। কিন্তু আমরা দুরের যাত্রি তাই সকালে রওয়ানা হয়ে যাতে সন্ধ্যার আগে বাসায় আসতে পারি সে চিন্তা ছিল মাথায়।



ফ্যান্টাসি ঘুরাঘুরি শেষে গিয়ে ঢুকলাম ওয়াটার কিংডমে। সেখানে গিয়ে তো দেখি এলাহি কান্ড। হিন্দি গানের সাথে পানির মাঝে থেকেই ছেলেমেয়েরা ডান্স করছে। যদিও আরামদায়ক জায়গা কিন্তু বেশ লজ্জাজনকও বটে। সেখানে ছেলে মেয়েরা উচ্ছৃঙ্খলতা চরম পর্যায়ে ছিল। যাইহোক সে বিষয়ে আর গেলাম না। আমাদের মা বাবারা অত্যাধুনিক তো তাই হয়তো সন্তানদেরকে ছেড়ে দিয়েছেন সে পথে, যে পথে আছে কাটা বিছানো।

ওয়াটার কিংডম ঘুরা শেষে চলে গেলাম হ্যারিটেজ পার্কে। সেখানে গিয়েই বেশী ভাল লাগছে। সুন্দর পরিবেশ। যেমন আছে বাচ্চাদের রাইড তেমনি বড়দেরও । একসাথে চড়া যায় সব রাইডগুলোতেই। ঘুরতে গিয়ে আমি চমকে উঠি। আরে একি! এখানে দেখি সব ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। একটা একটা করে দেখতে লাগলাম । একদম হুবুহু কার্বন কপি। তবে ছোট ছোট যার ভিতের প্রবেশ করা যাবে না। সংসদ ভবন, স্মৃতিসৌধ, আহসান মঞ্জিল, ষাট গম্বুজ মসজিদ এগুলো দেখে মনটা যারপর নাই আনন্দে ভরে গেল।



ভ্রমন পর্বটি মূলত হ্যারিটেজ পার্ককেই ঘিরে............
তাহলে জেনে নেই হ্যারিটেজ পার্কের কিছু ইতিহাসবৃত্তান্ত:
আমাদের দেশ গৌরবময় ইতিহাস ঐতিহ্য সমৃদ্ধ দেশ।


আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ, পাহাড়, নদী, উপত্যকা ও সমতল, শহর ও গ্রামাঞ্চল জীবনশৈলী, লোকপ্রথা, প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তু এবং পুরো দেশ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হস্তনির্মিত ঐতিহাসিক নির্দশন। আর এসব ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নির্দশন আমাদের দেশে অবস্থিত, যা পেয়ে সত্যিই আমরা গর্বিত ।



এসব ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে জানা, চোখে দেখা আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।



আর এসবের কথা মাথায় রেখে আশুলিয়ার হ্যারিটেজ পার্ক কনকর্ডের পক্ষ হতে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরতে একটি সুন্দর প্রচেষ্টা চালিয়েছে। এখানে নির্মাণ করা হয়েছে কিছু স্থাপত্য ও প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তু এর এক একটি স্থাপনা হুবুহ নকল।


নিচের ছবিটা কপি করা সংসদ ভবনের চত্বরে । বাচ্চাটি পানি দিয়ে খেলছে



এখানে গেলে আপনি দর্শন করতে পারবেন আহসান মঞ্জিল, গ্রিক মেমোরিয়াল, কান্তজীর মন্দির, লালবাগ কেল্লা, জাতীয় সংসদ ভবন, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, পাহাড়পুর বিহার, পুথিয়া প্রাসাদ, ষাট গম্বুজ মসজিদ, সিতাকট বিহার ।



আহসান মঞ্জিল হুবুহু নকল এবং অন্যান্য স্থাপত্য ঐতিহ্যও যেন অন্যটির কাপল হিসাবে এই পার্কে নির্মাণ করা হয়েছে।


বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের (অনুমোদনক্রমে) কাঠামোকে বহাল রেখে গুরুত্বতার ভিত্তিতে নির্বাচিত করা হয় হেরিটেজ পার্কের প্রতিটি মডেল।



বাস্তব কাঠামো অনুরূপ ইট দ্বারা, প্রতিটি ইট এবং রং পুরো কাটামোটির স্পর্শে ছিল ঠিক একই মনোযোগ।


স্থাপনার প্রতিটি ফাটল, সুনিদিষ্ট অবস্থান ইত্যাদিতে পাওয়া গেছে পরিপক্কতার ছোঁয়া।



এই পার্কের উল্লেখ্যযোগ্য বৈশিষ্ট্য মিনি হেরিটেজ ঐতিহ্য যাদুঘর, একটি মিনি শৈল্পিক গ্রাম, স্পোর্টস জোন বাচ্চাদের জন্য, , ফ্যামিলি রাইড, রেষ্টুরেন্ট, দোকান এবং শিশুদের জন্য রয়েছে একটি ফটো গ্যালারী।





হ্যারিটেজের বাচ্চাদের নিয়ে কয়েকটা রাইডে চড়লাম ।



বাচ্চারা বেশ খুশি ছিল উঠতে পেরে। হ্যারিটেজ থেকে বের হয়েই দেখি একজায়গায় যাদু শেখানো হচ্ছে। বড় ছেলে তা-সীন তো যাদু একটা শিখবেই এবং যাদু দেখানোর জিনিসগুলোও সে কিনবে। অগত্যা ওদের বাবা যাদু শেখানোর জন্য নিয়ে গেল।



লোকটি চোখের পলকে কি করে না করে তাজ্জব বনে গেলাম। অনেকগুলো যাদু ফ্রিতেই দেখালো। শেষে কাগজের পাইপ দিয়ে ফুলের তোড়া বের করার যাদুটি আমার ছেলে তা-সীন শিখে নিল। এবং শেষে উপকরণটিও কিনে নিয়ে আসলাম। বাচ্চাদের আনন্দতেই আমাদের আনন্দ। সুন্দর এবং আনন্দময় একটি দিন পার করেছিলাম সেদিন। আল্লাহর কাছে শুকর আলহামদুলিল্লাহ।

একটি দিন হতে পারে আপনার পরিবারের জন্য বিশৃঙ্খলা এবং শহরের কালো ধোঁয়ামুক্ত দুরে কোথাও এমন পরিবেশে নির্মল বিনোদন। পার্কের ঐতিহ্যমন্ডিত স্থাপনাগুলো আপনাকে করে দিবে নস্টালজিক। সুন্দর পরিবেশে বেশ খানিকটা সময় কাটাতে পারেন পুরো পরিবার নিয়ে। একবার ঘুরে আসুন আশুলিয়ার হ্যারিটেজ পার্কে। আপনার বাস্তব নির্মল আনন্দের অভিজ্ঞতা আপনার আশেপাশের মানুষগুলোকে ভ্রমণের জন্য অনুপ্রাণিত করতে পারেন।

আল্লাহ হাফেজ.......... সুন্দর থাকুন,ভাল থাকুন এবং সর্বাবস্থায় নিরাপদে আর সুস্থ থাকুন........ কষ্ট করে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×