(অন্য ব্লগে আগে প্রকাশিত)
গত বছর ভাইয়ের বিয়েতে গিয়েছিলাম । বাচ্চা দুটো আগেই চলে আসছিল ঢাকা । অলস সময় গুলো দুই জায়গায় ঘুরে শেষ করেছি.......
চা বাগানও ঘুরে এসেছিলাম এর আগের দিন । । অনেক দিন হতেই বণ্য প্রাণীর অভয়ারণ্যে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল । অনেক আগে একবার গিয়েছিলাম তখন রাস্তাঘাট তেমন ভাল ছিল না । তেমন ঘুরাও হয়নি ।
এবার আমরা ভাইবোনেরা মিলে একটা সিএনজি নিয়ে রওয়ানা হলাম সকাল ১০ টার দিকে । অবশ্য যে সময়ে গেছি সে সময়ে পশু পাখি দেখার সময় ছিল না । যেহেতু রাস্তাঘাট খারাপ তাই আর বিকেল করিনি যাতে দিনে দিনে ফিরে আসতে পারি তারই ব্যবস্থা হিসাবে সকালে রওয়ানা দেই । ......... সিএনজি যোগে বিসমিল্লাহ বলে রওয়ানা হলাম অবশেষে ....
প্রায় ঘন্টা খানেক লাগল পৌঁছতে ........ চারপাশ অপূর্ব সবুজে সবুজ...... অসহ্য সুন্দর আর ভাল লাগা নিয়ে দেখছিলাম আর ছবি তুলছিলাম । যেহেতু বৃষ্টির দিন ছিল তাই সবই বৃষ্টির সবুজ আল্লাহর অশেষ রহমত ছিল ।
সেদিন অবশ্য বৃষ্টি ছিল না বা আকাশে মেঘ ছিল না । দুপুরের খাঁ খাঁ ঝাঁ ঝাঁ রোদ্দুর ........ পাকা রাস্তা পার হয়ে শেষ পর্যন্ত আর পাকা রাস্তা ছিল না । সিএনজি অনেক কষ্টে সৃষ্টে ঠেলা ধাক্কাইয়া জায়গামত পৌছাইছে.......... কতটুক হেটে কতটুকু আবার সিএনজিতে এভাবেই গিয়ে পৌছেছিলাম রেমা কালেঙ্গা অভয়ারণ্যে........
১। এই যে রাস্তা শুরু ........ ২০ টাকা টিকেট দিয়ে অভয়ারণ্যে ঢুকতে হয় ....... । ঢুকলাম কিন্তু অনেক হাটতে হয়েছে ..... অনেক অনেক পায়ে হাটার পথ । উচু নিচু পাহাড়ী রাস্তা ....... টিলা বেয়ে বেয়ে উঠতে হয়েছে ।
২। সদয় অবগতি দর্শকদের জন্য ......
৩। নিয়মনীতি লেখা আছে এখানে.........
৪ । রেমা কালেঙ্গা অভয়ারণ্যের গেইট......
৫। ভিতরে যেতেই দেখি শিউলী ঝরে পড়ে আছে গাছের তলায়
৭। উচু নিচু রাস্তার শুরু এখান থেকেই
৮। অনেক পুরনো সেগুন বাগান ........ অনেক অনেক সেগুন চারপাশ জুড়ে ......
৯। সীমান্ত ফাঁড়ি......... সীমান্ত রক্ষায় প্রহরা দেয় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডরা । উপরে ছবি তোলা নিষেধ ।
১০। সবুজ ঝোপ ঝাড় অভূতপূর্ব ......... অসাম সুন্দর । পায়ের হাটার কষ্ট এসব দেখেই ভুলা যায় । যে পানি দেখতেছেন সেগুলো অটো পানি ....... পাহাড়ের পানি । এখানে যে কোন জায়গায় কিছু গর্ত করলেই অটো পানি আসে ......
১১। একটু দুরেই মাটির তৈরী মক্তব ঘর । তার পাশে কাঠগোলাপ গাছ । গাছের নিচে অসংখ্য ফুল পড়ে আছে । আমরা সবাই কতগুলো কুড়িয়ে নিয়েছি মাথায়ও গুজে দিয়েছিলাম ।
১২। মাটির মক্তব ঘরটি
১৩। দুর্গম এলাকার ভিতরেই ছোট একটি দোকান ঘর । এখান থেকে চকলেট কিনে নিয়েছি সবাই ......
১৪। এত হাঁটার পরও বলে আরো আধাঘন্টা পায়ে হাটার পথ ই ই ই ..... যেখানে যাব আমরা সেখানে অনেক উচ টাওয়ার আছে যার উপরে উঠে বণ্য প্রাণী দেখা যাবে । তাই বলা আছে যে মোবাইল গান সব বন্ধ করে দিতে । চুপচাপ শুধু দেখে যাব ।
১৫। মাটির রাস্তা দিয়ে দৌড়ায়ে দৌড়ায়ে যাই সবাই । খুব মজা লাগছিল ।
১৬। নিয়ম নীতিগুলো
১৭। ঐ
১৮। পৌছাইয়া গেছি । উপরে উঠতেছি । টাওয়ার দেখে নিচে থেকে ছবি তুলতেই ভুলে গেছি ।উপর থেকেতোলা
১৯। সবুজ কাহাকে বলে এটা দেখলেই বুঝতে পারবেন দুর দূরান্ত সবুজ আর সবুজ পাহাড়ের বেষ্টনি । কি যেতে ইচ্ছে করছে না সেখানে? ........... এত ভাল লাগছিল কি আর বলব ভাই বোনেরা । পারলে কয়দিন পরপরই যেতাম কিন্তু সে সুযোগ নাই
২০। উপর থেকে তোলা ......... প্রাকৃতিক বিল/ঝিল ......... এই ঝিলটি অনেক লম্বা অনেকটা জায়গা জুড়ে বিস্তৃত । ... ভাবতেছি কেন সেখানে নৌকা বা স্পিড বোর্ড রাখে নি । এপ্রশ্নের জবাবে গাইড চাচা বললেন এতদিন রাস্তা খারাপ ছিল তাই এসব করা হয়ে উঠেনি । আস্তে আস্তে সবই করা হবে । এই ঝিলে নাকি ১ মণ ওজনেরও মাছ আছে । এখানে মাছ মারা অনেক কষ্ট নাকি....
২১। ঘন জংগল কি ভয়ানক গেলে বুঝতে পারতেন .......
২২। সবুজ পাহাড়ের দেশ আমার সিলেট
২৩। সবুজ পাহাড়ড়ড়ড়ড়ড়ড়ড়ড়ড়ড়
২৪। উপর্ থেকে ঝিল
২৫। টাওয়ারের ফাক দিয়ে তোলা ছবি
২৬। পিপড়ার ঢোল
২৭। ঝিলের পাশে রেষ্ট নেয়ার জায়গা
২৮। গাইড চাচা উনি......
২৯। ঝিল
৩০। নিজ থেকে সবুজ পাহাড়ের ছবি
৩১। মাঝে মাঝে ধানক্ষেত ......... চমৎকার সুন্দর জায়গা ........ জনবসতি নাই
৩২। ধানক্ষেত
৩৩। ঝিলের ছবি ..... অন্য পাশ হতে
৩৪। ঝিল
আমরা যখন হেটে হেটে দেখছি প্রাকৃতিক সুন্দর দৃশ্যগুলো তখনই দুইটা ছেলে আমাদেরকে দেখে গান গাওয়া শুরু করছে মানে টিটকারী যাহাকে বলে । অথবা আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যও হতে পারে । এর মাত্র যখন বেড়ে যাচ্ছে তখন আমি একটু জুড়ে হেঁটে তাদের কাছে গেলাম । বললাম-ভাইয়া তোমরা কি এখানে বেড়াতে আসছ আমাদের মত । তারা থতমত খেয়ে গেল
বলল হ্যাঁ । আমি বললাম তোমাদের বাড়ি কই? একজন বলল স্থানীয় আর একজন চুনারুঘাট থেকে আসছে । আমি তখন আমাদের বাড়ির পরিচয় দিয়ে বললাম আমরাও বেড়াতে আসছি এখানে আমরা সবাই ঢাকা থাকি । তো একজন বলল আমি ঢাকায় গামের্ণ্টসে জব করি । এখন ছুটিতে আসছি আর বেড়াতে এখানে আসা ...... কথা বলার পর তারা আমাদেরকে অনেক সম্মান করল । জায়গা ঘুরে ঘুরে দেখাল ....... আমার ভাই বলে ওদের সাথে কথা কইও না । আমি বললাম কথা না কইলে বরং এরা দুষ্টামী করতেই থাকবে ...... কথা বলার পর ফ্রিলি চলাফেরা করা যাবে । ............
ওদের নিয়ে ঘুরতেছি তো বলল আপু আপনারা বেড়াতে আসছেন আপনাদেরকে এখন আমরা নাচ দেখাব । আমি বললাম আচ্ছা ঠিকাছে শুরু করেন । কারো মোবাইলেই ভাল গান ছিল না তবুও যা ছিল তা দিয়ে চালিয়ে নিয়েছি । ভিডিও করেছি আর ছবি তুলেছি মাত্র একটা । বেটারা সুন্দরই নাচছিল গানের সাথে .......... একটা আসর বসে গিয়েছিল । আমাদের সিএনজি ড্রাইভারও নাচে যোগ দিল ......... হাটার কষ্ট আবারো গায়েব হয়ে গেল সবাই ।
৩৫। নাচ দেখুন
৩৬। একটু আসতেই দেখি পাহাড় থেকে কলার ছড়ি নামাইয়া রাখছে কিসুন্দর সবুজ দেখেন ....
তারপর ফেরার পালা .......... সিএনজিতে উঠতেই ওরা বলল আপনার আমাদের এখানে বেড়াতে আসছেন কিছুই তো আপ্যায়ন করতে পারলাম না । আপা আপনাদের জন্য এই বিস্কিটের প্যাকেট সবাই মিলে খেতে খেতে বাড়ি যান ।
আসল কথা হলো ওদের সাথে কথা না বললেও পারতাম বা এড়িয়ে যেতে পারতাম । মানুষ ব্যবহারের কাছে হার মানে এবং কতটা আন্তরিকতার সাথে ব্যবহার করেছিল পরবর্তীতে । এখান থেকে তারা ভবিষ্যতে কিছু শিখতেও পারল । আমার মনে হয় না তারা এরকম ব্যবহার আর সচরাচর করবে ।
আরো এত্ত এত্ত সুন্দর ছবি তুলছি ..... পরে ছবিগুলো আপলোপড করব ।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১:০১