আপনি যদি বর্তমান সিরিয়া
পরিস্থিতির দিকে তাকান, তবে
যে বিষয়টি স্পষ্ট দেখতে পাবেন,
একটা মুসলিম দেশকে নিয়ে খেলছে
দুটি অমুসলিম দেশ। একপাশে
আমেরিকা অন্যপাশে রাশিয়া।
মাঝখান দিয়ে বলির পাঠা হচ্ছে
সাধারণ মুসলিমরা।
যদি আপনি ইরাকের দিকে তাকান,
যদি আপনি আফগানিস্তানের
দিকে তাকান
যদি আপনি পাকিস্তানী
সীমান্তবর্তী অঞ্চলের দিকে
তাকান
তবে কিন্তু সেই একই বিষয় দেখতে
পাবেন, অমুসলিমরা খেলছে
মুসলিমদের নিয়ে।
মিডিয়া মুঘল রুপার্ট মারডকসহ তাবৎ
জায়ানিস্ট মিডিয়া প্রতিনিয়ত
প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে যাচ্ছে অমুক
দেশে সন্ত্রাসী আছে, অমুক দেশে
জঙ্গী আছে।
ব্যস আমেরিকা সেখানে হামলা
চালানোর বৈধতা পেয়ে যাচ্ছে।
তবে এ কথা যদি আপনি কোন
অমুসলিমকে বোঝানোর চেষ্টা
করেন, তবে সে সহজে মেনে নেবে
না। সে হয়ত বলবে- মুসলমানরা এত
বেকুব হবে কেন ?
কেউ তাদের বিরুদ্ধে মিডিয়া
প্রোপাগান্ডা ছড়াবে, তারা
সেটা এমনি এমনি মেনে কেন ?
আমিও বলবো, দোষটা কিন্তু
মুসলমানদেরই। তারাই তাদের মুখ বন্ধ
করে দিয়ে, অপরকে সুযোগ করে
দিয়েছে। তারা নিজেরাই
নিজেদের ধর্মের অপব্যাখ্যা করে
নিজেদের ধর্মকে খোড়া করে
দিয়েছে, আর এ কারণেই অমুসলিমরা
সেই সুযোগটা নিচ্ছে।
একটু ব্যাখ্যা করলে বুঝতে সহজ হবে-
ধরুন একটি দেশে পার্ক আছে, মাঠ
আছে, নদীর তীর আছে, রেস্তোরা,
বাসাবাড়ি আছে, মানুষ আছে ।
আবার ঐ দেশে কিন্তু পুলিশ আছে,
আর্মি-নেভি-এয়ার
ফোর্স আছে।
এখন কেউ যদি বলে, “বাসাবাড়ি,
মানুষ, পার্ক, মাঠ, রেস্তোরা এগুলো
মানুষকে আনন্দ দেয়, এগুলো শান্তির
প্রতীক। কিন্তু পুলিশ-আর্মি-নেভি-
এয়ারফোর্স এগুলো মারামারি
শেখায়, যুদ্ধ শেখায় এগুলো
অশান্তির প্রতিক, এগুলো বাদ
দেওয়া উচিত।”
তবে কি হবে ??
যে এ ধরনের ব্যাখ্যা দিবে, সে
কিন্তু ভুল করবে। একটি পূর্ণাঙ্গ
ব্যবস্থায় যেমন শান্তির দরকার আছে,
তেমনি কেউ যদি অশাস্তি করতে
চায় তবে তার দমনের ব্যবস্থাও আছে।
এক্ষেত্রে পুলিশ নেভী এয়ারফোর্স,
আর্মি কিন্তু অশান্তির প্রতীক নয়,
বরং শান্তি রক্ষার প্রতীক।
আমি এই কথাগুলো বললাম এই কারণে,
ইসলামকে অনেক মুসলমান দাবি
করে- ‘ইসলাম ইজ এ কমপ্লিট কোড অব
লাইফ।’ আবার এটাও বলে-
‘ইসলাম হচ্ছে শান্তির ধর্ম’। কিন্তু
সেই শান্তি রক্ষার জন্য বাকি যে
অংশটা দরকার সেটা তারা
এভোয়েড করে যায়।
আজকাল মডারেট মুসলিমরা
ইসলামের বেছে বেছে অংশ
আলোচনা করে
কিন্তু ইসলামের প্রাথমিক যুগে যে
সামরিক ইতিহাস, যুদ্ধ কৌশল,
অমুসলিম শত্রুদের বিরুদ্ধে
ধর্মীয়গ্রন্থগুলোতে ব্যাপক
আলোচনা তার প্রায় সবগুলো
কৌশলে এরিয়ে যায়।
বলে- ‘না, ইসলাম শান্তির ধর্ম,
এখানে অমুসলিমদের বিরুদ্ধে বলতে
নিষেধ করা হয়েছে।’
আমি বলবো, মডারেট নামধারী এ
কথিত মুসলিমরা ইসলামের আরো বড়
শত্রু। কারণ এরা মুসলিম জাতিকে
পুরোপুরি খোড়া বাড়িয়ে
ছেড়েছে।
এরা আমেরিকা, ন্যাটো,
ইসরাইলের যুদ্ধকৌশল নিয়ে খুব
প্রশংসা করবে, কিন্তু মুসলমানদের
বেলায় এসে বলবে- “ইসলাম মানে
শান্তি, কিছু করা যাবে না, চুপ
থাকতে হবে”।
ইসলাম সম্পর্কে আমার স্ট্যাডিও কম
নয়। মুসলমানদের শেষ নবী
অমুসলিমদের প্রতি অবিচার করেননি
এটা যেমন সত্য, তেমনি কোন
অমুসলিম যদি মুসলিম জাতিকে যুলুম
করতে চেয়েছে তার প্রতুত্তর
দিতেও তিনি পিছু হটেননি। এর
প্রমাণ ২৩ বছরে তিনি নিজেই ২৭টি
যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। এ সম্পর্কে
কুরআন ও হাদীসে অসংখ্য বানী ও
দিকনির্দেশনাও আছে। এখন কেউ
যদি ঐ অংশটি বাদ দিয়ে চায়, তবে
আমার কিছু বলার নেই।
মডাটের মুসলিমদের দাবি- ‘না ঐ
অংশটি আলোচনা করা যাবে না,
করলে ইসলামের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে’,
‘ইসলামকে কেউ শান্তির ধর্ম
হিসেবে মানবে না’ ইত্যাদি
ইত্যাদি। তবে আমি বলবো- এ দাবি
সম্পূর্ণ ভুল। শান্তি প্রচারের যেমন
দরকার আছে, তেমনি যারা
অশান্তি তৈরী করে তাদের দমন
করারও জ্ঞান ও আলোচনা দরকার
আছে, প্র্যাকটিসের দরকার আছে,
এটাও শান্তি প্রতিষ্ঠারই অংশ।
যারা এগুলোর সমালোচনা করবে,
অশান্তির কারণ মনে করবে, এটা
নিতান্তই শিশু। দেখবেন- একটা
খুনিকে যখন আপনি ফাসি দিতে
যাবেন, তখন অনেকেই ঐ খুনির জন্য
মায়াকান্না কাদবে। এরা
নিতান্তই শিশু, এই শিশুদের
মায়াকান্নার জন্য তো আপনি খুনির
মৃত্যুদণ্ড বন্ধ করতে পারবেন না। কারণ
খুনিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ায়
নির্যাতিত’র জন্য মায়া প্রদর্শন।
আর একটি কথা না বললেই নয়, আপনি
যাদের (পশ্চিমাদের) সামানে
ভালো সাজতে গিয়ে নিজের
ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাদ
দিয়ে যাচ্ছেন, সে কি আপনাকে
সত্যিই ভালো হিসেবে মেনে
নিয়েছে ? আমারিকায় মুসলিম
বালক আহমেদ মুহম্মদ ঘড়ি বানাতে
গেলে তাকে বোমা বানিয়েছে
বলে এফবিআই আটক করে, সন্ত্রাসী
খেতাব দেয়। অথচ আমেরিকার শিশু
কিশোরদের হাতে থাকে ভয়ঙ্কর সব
আগ্নয়াস্ত্র, প্রত্যেকের হাতে
থাকে ২-৩ তিনটি করে বন্দুক। এগুলোর
যথেচ্ছ ব্যবহারে প্রতিদিন
আমেরিকায় স্কুল কলেজগুলোতে
গোলাগুলি করে মারা যায় প্রায়
১০০ জন, বছরে মারা যায় প্রায় ৩৩
হাজার। আহত হয় ৮০ হাজার
( http://goo.gl/eu4myu )।
অথচ দেখুন এই ছাত্র-ছাত্রীদের কে
কিন্তু সন্ত্রাসী বলে প্রচার করছে
না আমেরিকা। কিন্তু আহমেদ মুহম্মদ
একটা ঘড়ি বানিয়েছে, তাতেই
সন্ত্রাসবাদের গন্ধ পেয়েছে
তারা।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:১৪