সারা দেশব্যাপি আজ একটি ধ্বনি উঠেছে সেই ধ্বনিটির নাম ৩৫। আজ পাশের বাসার শিশুটিও জিজ্ঞাসা করে ভাইয়া ৩৫ কি? উত্তরে আমি তাকে বলি ৩৫ হচ্ছে আমাদের মুক্তির আন্দোলন। বাংলাদেশের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের মু্ক্তির আন্দোলন।লক্ষ বাবা-মা এর মুখে হাসি ফোটাবার আন্দোলন।
গতকাল ও একজন হতদরিদ্র রিক্সাচালক বাবা তার অশ্রুসজল চোখ নিয়ে আমাকে তার কষ্টের টাকায় কিভাবে তার সন্তানকে তিনি পোষ্ট গ্র্রাজুয়েট পাশ করিয়েছেন তার বর্ণনা দিচ্ছিলেন। তার প্রতিটি আর্তনাদ যেন মুছে দিচ্ছিল তার সন্তানকে নিয়ে ৩০ বছর ধরে বয়ে বেড়ানো এক একটি স্বপ্ন। এমনি ভাবে প্রতিটা দিনই মুছে যাচ্ছে হাজার হাজার বাবা-মা এর স্বপ্ন। মুছে যাচ্ছে ৩০ টি বছর ধরে বয়ে বেড়ানো একজন ছাত্রের স্বপ্ন। যে স্বপ্নে সে দেখেছিল, লেখাপড়া শেষ করে নিজের রোজগারের টাকায় তার মায়ের মুখে নিজ হাতে দু-মুঠো ভাত তুলে দিবে। অসুস্থ বাবাকে বলবে " বাবা আমি তোমাকে আজ একজন ভাল ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো"। কিন্তু, হাইরে কপাল, অসুস্থ বাবাটি বিছানায় শুয়ে ভাবছে বঙ্গবন্ধু-র সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন এই বুঝি সত্যিকার রুপলাভ করলো, এই বুঝি তার সন্তান দৌড়ে এসে হাসি-মুখে বলল " বাবা আমি চাকরি পেয়েছি"। এদিকে তার সন্তান চাকরির জন্য ছুটতে না ছুটতেই ৩০ নামক একটি বাঁধা তার সমস্ত স্বপ্ন হতাশায় পরিণত করলো। ধীরে ধীরে সে ডুবে যাচ্ছে অন্ধকারে। বুকটা ফেটে যাচ্ছে তার। কি করবে সে? কার কাছে গেলে মিলবে সমাধান? রাষ্ট্রের যত কর্তা-ব্যক্তি সবার দ্বারে দ্বারে ঘোরে সে। সবাই তাকে শান্তনা দেয় আর বিখ্যাত পরিচালক আমির খানের "PK" সিনেমার মত বলে সৃষ্টিকর্তাকে ডাক, তিনিই সমাধান দিতে পারবেন। সে চিৎকার করে সৃষ্টিকর্তাকে ডাকতে থাকে। সেই আওয়াজে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘর থেকে বের হয়ে আসে তারই মতো হাজার হাজার বেকার ও অসহায় ছাত্র-ছাত্রী। সেই বেকার ও অসহায় ছাত্রের আর্তনাদ সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয় শুনেছেন বলে আমার বিশ্বাস। আর তাই আজ আমরা লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী একত্রিত হতে পেরেছি।
এখন আমাদের দাবী শুধু একজনের কাছে। আর তিনি হলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। অনেক বড় বড় সমস্যার সমাধান আপনি করেছেন, আপনার সাহসী সিন্ধান্ত দিয়ে। আজ আরো একটা সমস্যার সমাধান আপনাকেই করতে হবে।বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের ইতিহাস যদি আপনি ভুলে গিয়ে না থাকেন, স্বাধীনতা আন্দোলনে, ভাষা আন্দোলনে, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সর্বশেষ আপনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে আন্দোলন, সেই আন্দোলনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা যদি আপনি ভুলে গিয়ে না থাকেন তাহলে, আমাদের ছোট্ট এই দাবিটি মেনে নিন।
বাংলাদেশ ছাত্র সমাজ আপনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ইতিহাসের সাক্ষ্যি হয়ে থাকবে। সাক্ষ্যি হয়ে থাকবে আপনার বলিষ্ঠ ভাবে নেওয়া প্রতিটি ভূমিকার। আপনার আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা সাথে থাকতে চাই। আমাদেরকে এই হতাশার অন্ধকার থেকে দয়া করে মুক্তি দিন, মু্ক্তি দিন, মু্ক্তি দিন.........।