●●● ‘মৃত্যুর সওদাগর’ ডিউক ●●●
সাদা রং। লম্বায় তিন ইঞ্চি। দেখতে সুন্দর, পরিপাটি। জিনিসটির নাম সিগারেট। সভ্যতার ইতিহাসের ভয়ংকরতম উদ্ভাবন এটি। বিংশ শতাব্দীতে প্রায় ১০ কোটি মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী এই ঘাতক ‘পণ্য’।
কিন্তু আধুনিক সিগারেটের যিনি উদ্ভাবক, সেই জেমস বুকানন ডিউক কি জানতেন এর ধ্বংসাত্মক ক্ষমতার কথা? এত মৃত্যুর দায় থেকে কি তাঁকে রেহাই দেওয়া যায়?
এই মার্কিন নাগরিক ১৯০২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন তামাক বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি)। সিগারেটের অব্যাহত বিশ্বায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে বিএটি। তাই ডিউককে ‘মৃত্যুর সওদাগর’ বলেন অনেকেই।
তবে টোবাকো কন্ট্রোল সাময়িকীতে সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে কেবল ডিউককে নয়, সিগারেট উৎপাদনে যুক্ত সবাইকেই দায়ী করা হয়েছে। ভালো কাজেও অনেক খরচ করেছেন ডিউক। ডারহামের ট্রিনিট্রি কলেজকে তিনি ১০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ দিয়েছিলেন। তাঁর নামানুসারে ১৯২৪ সালে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ হয় ডিউক ইউনিভার্সিটি।
ইতিহাসবিদ জর্ডান গুডম্যান বলেন, ডিউককে নায়ক ও খলনায়ক উভয় বিশেষণই দেওয়া যেতে পারে। ব্যবসায় ব্যাপক সাফল্য বিবেচনায় তাঁকে নায়ক বলা যেতেই পারে। আর ধূমপানকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়ে বড় সমস্যা তিনিই তৈরি করেছেন।
ভয়াবহ পরিণতি বিবেচনায় ডিউককে তুলনা করা যেতে পারে মারণাস্ত্র একে-৪৭ আবিষ্কারক কালাশনিকভ, পারমাণবিক বোমার আবিষ্কারক জে রবার্ট ওপেনহাইমার ও ডিনামাইটের আবিষ্কারক আলফ্রেড নোবেলের সঙ্গে। যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রবার্ট প্রক্টর বলেন, ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর উদ্ভাবন সিগারেট।
ডিউক ১৮৮০ সালে ২৪ বছর বয়সে তামাকের ব্যবসা শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার ডারহামে। যন্ত্রের সাহায্যে নিখুঁতভাবে উৎপাদিত আধুনিক সিগারেটকে জনপ্রিয় করে তুলতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। জেমস বনস্যাক নামের একজন প্রকৌশলীর উদ্ভাবিত যন্ত্র সিগারেট উৎপাদনে বিপ্লব এনেছিল। এই যন্ত্র উদ্ভাবনের আগে চুরুট ও পাইপ ব্যবহার করে তামাক সেবন করা হতো। চিবিয়েও খাওয়া হতো তামাক।
মূল লেখা > ( Prothom-Alo )