ইরাকে নিযু্ক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত আব্দুল ফতেহ পাক সরকারের পক্ষ ত্যাগ করে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছিলেন ইংল্যান্ডে। এদিন পাকিস্তান ব্রিটিশ সরকারের কাছে আব্দুল ফতেহকে আশ্রয় দেয়ার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং চাপ দেয় তাকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্যে। পাকিস্তানিরা ব্রিটিশ সরকারের হাই কমিশনের ‘দেশদ্রোহী’ কর্মচারীকে আশ্রয় দেয়ার নীতিকে সমালোচনা করেন তীব্রভাবে।
এ সময় ওয়াশিংটন পোস্টের স্টিফেন ক্লাইডম্যান পরিবেশিত এক বিশেষ বিবরণে নিক্সন সরকারের অফিসিয়ালদের বরাত দিয়ে বলা হয়, ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তান রক্ষা করাই মার্কিন সরকারের নীতি।
২৫ আগস্ট টিক্কা খান সফর করেন পাবনা, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর এলাকা। এসব জায়গায় তিনি বক্তব্য রাখেন শান্তিকমিটির দালাল, রাজাকার ও সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে। এসব এলাকার জনগণের জীবন এ সময় একদিকে জালিম পাক সেনা অন্যদিকে বন্যার কারণে চরম সঙ্কটে পড়ে গিয়েছিল।
খেলাফতে রব্বানী পার্টির চেয়ারম্যান এসএম মোফাখখার এদিন অভিনন্দন জানায় মুসলিম লীগের একত্রীকরণের প্রচেষ্টাকে। সে পাকিস্তানের শত্রুদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্যে সম্মিলিতভাবে সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানায়। সে বলেছিল, দেশের এই সংঘর্ষে জামাত, নেজামে ইসলাম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম এবং পিডিপি’র মত দলের নেতাদের কাজ করা উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে।
এ সময় যশোর জেলার মনিরামপুর থানার রাজাকাররা ৩৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে অতর্কিতে আক্রমণ করে হত্যা করে এবং আটক করে অস্ত্রশস্ত্রসহ ৫ জনকে। এই তৎপরতা চালানো হয় মনিরামপুর শান্তিকমিটির চেয়ারম্যানের নির্দেশে। রাজাকাররা এ এলাকার চান্দিপুরে ২ জনকে খুন ও ১ জনকে আটক করে। মোহনপুরের কাপালিয়ায় ১৫ জনকে, জাম্পাতে ৩ জনকে হত্যা করা হয়, আটক করা হয় ৪ জনকে। রোহিতা ও ঢাকুরিয়াতে হত্যা করা হয় যথাক্রমে ৩ জন ও ১৬ জন মুক্তিযোদ্ধাকে।
[তথ্যসূত্র: দৈনিক পাকিস্তান, আজাদ, ২৫, ২৬, ২৭ আগস্ট, ১৯৭১ ঈসায়ী।]