somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দাজ্জাল কোথায় আছে, সে কী এখন জীবিত ! ?

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একদিন রাসূল (সাঃ) বললেন, “ আমি তোমাদেরকে জড়ো করেছি এ জন্য যে তামিম আদ দারি একজন খ্রিস্টান ছিল এবং একটু আগে আমার কাছে সে এসেছে এবং মুসলিম হয়েছে। আর সে আমার কাছে এমন একটা কাহিনী বর্ণণা করেছে, যা তোমাদের কাছে আমি দাজ্জালের ব্যাপারে যা বলেছিলাম তার সাথে মিল আছে” রাসূল (সাঃ) বললেন, লাখমান জুদাম নামক স্থান থেকে কিছু খ্রিস্টান আরব গোত্রের কিছু লোক তারা যখন জাহাজে করে যাচ্ছিল, বড় ঢেউ খেলে তাদের জাহাজ ওলটপালট হয়ে গেল, আর একটা অজানা দ্বীপে তরী ফেলার আগ পর্যন্ত তারা এক মাস ধরে দিকভ্রান্ত অবস্থায় ঘুরপাক খাচ্ছিল।

সেই দ্বীপের সন্ধান পেলে তারা নৌকায় করে সেই দ্বীপ অভিমুখে যাত্রা শুরু করল, এটা ছিল রাতের বেলা, তারা সকালে সেই দ্বীপে পৌছল। এরপর তারা একটা জন্তুকে দেখল, যেটার সারা শরীর ছিল পশমে ভর্তি, তাই সে জন্তুটির সামনের দিক পেছনের দিক থেকে আলাদা করা যাচ্ছিল না। তারা তাকে বলল, “ওহে, তুমি কে?”, জন্তুটি উত্তর দিল, “আমি জাসসাসা” তারা জিজ্ঞেস করল, “জাসসাসা কি” সে এই প্রশ্নের উপেক্ষা করে বলল, তোমরা আমার সাথে একটা আশ্রমে আস, সেখানে একটা লোক বসে আছে সে তোমাদের সাথে দেখা করতে চায়। তারা এটা বর্ণণা করছেন নিজের ভাষায়, সেটা শুনে আমরা কিছুটা সংশয়ে পড়ে গেলাম, আমাদের কাছে মনে হল সে বিপদজনক কিছু হতে পারে। আমরা ভেতরে গেলাম, তাকে দেখলাম, সে অতিকায় এক লোক, এমন অতিকায় কাউকে আমরা কখনও আগে দেখি নি। লোকটিকে তার হাঁটু থেকে গোড়ালি পর্যন্ত লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। আমরা বললাম, “ওহে, তুমি কে?” সে বলল, “তোমরা তো আমাকে দেখলে, তোমরা কারা সে সম্বন্ধে আমাকে কিছু বল” তো এরপর তারা বলল, “আমরা আরব, আমরা সাগরে পথ হারিয়েছি এরপর এই দ্বীপে এসে পৌছেছি” লোকটি অতঃপর বলল, “আমাকে বাইসান নামক স্থানের তালগাছ সম্পর্কে কিছু বল” বাইসান হচ্ছে আশ-শামের একটি অঞ্চল। তারা বলল, “বাইসানের তালগাছ সম্পর্কে তুমি কি জানতে চাও?”, সে বলল, “সেগুলোতে কি ফল ধরে?”, তারা বলল, “হ্যাঁ, ধরে” এরপর লোকটি বলল, “এমন একটা সময়ের আগমন হবে যখন সেই গাছে আর ফল ধরবে না। সে বলল, “আমাকে তাবারিয়াতে যে একটা হ্রদ আছে না, সেটা নিয়ে কিছু বল, সেই হ্রদে কি এখন পানি আছে?”।. তাবারিয়া ফিলিস্তিনের একটি হ্রদ। তারা উত্তর দিল, “হ্যাঁ”, লোকটি তখন বলল, “এমন একটা সময়ের আগমন হবে যখন সেই পানি শুকিয়ে যাবে”।. আল্লাহু আলম, ইহুদীরাই এ হ্রদ শুকিয়ে ফেলবে। এরপর সে তাদের কাছে জানতে চাইল, জুগারে বসন্ত কালে কি পানি থাকে কিনা, তারা উত্তর দিল, থাকে। সে বলল, “লোকেরা কি সেই পানিকে সেচকাজে ব্যবহার করে, তারা বলল, হ্যাঁ করে, আর সেখানে অনেক পানি আছে, লোকে সেগুলো কৃষিকাজে ব্যবহার করে। সে জবাবে আর কিছু বলল না। তারপর সে বলল, “সেই নিরক্ষর নবী সম্পর্কে আমাকে কিছু বল”।. এই নিরক্ষর নবী হচ্ছে নবী মুহাম্মদ (সাঃ)। তারা বলল, “তিনি মক্কা ছেড়ে গিয়েছেন আর এখন মদীনায় আছেন”।. সে জিজ্ঞেস করল, “আরবরা কি তার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে?”, তারা বলল, “হ্যাঁ”।. সে জিজ্ঞেস করল, “উনি তাদের সাথে কেমন আচরণ করছেন? তার সাথে আরবদের যুদ্ধে কে জিতেছে?”, তারা উত্তর দিল, “তিনি জয়লাভ করেছেন আর এখন তারা তার অনুগত। তাদের জন্য এটাই কল্যাণকর যে তারা তাকে মেনে নেবে”।. এবার লোকটির পরিচয় দেবার পালা। সে বলল, “আমি হচ্ছি মসীহ। এটা সময়ের ব্যাপার যে আমাকে মুক্ত করে দেয়া হবে আর আমি সারা বিশ্ব ভ্রমণ করব, এবং আমি ৪০ দিনের মধ্যে প্রতিটি শহর এবং গ্রামে প্রবেশ করব, মক্কা এবং তাইয়্যেবা-এ দুটো শহর ছাড়া, তাইয়্যেবা হচ্ছে মদীনা। আমাকে সেখানে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। আমি যখনই সেখানে ঢুকতে যাব, সেখানে কিছু ফেরেশতা থাকবে, তারা মক্কা এবং মদীনার প্রতিটি প্রবেশপথে পাহারা দেবে। এতটুকু বলে, রাসূল (সাঃ) তার হাতের লাঠি দিয়ে মিম্বরে আঘাত করে ৩ বার বললেন, “এটাই হল তাইয়্যেবা”।. তারপর তিনি বললেন, “আমি কি তোমাদেরকে আগে এমনটি বলি নি?”, লোকে উত্তর দিল, “হ্যাঁ বলেছেন”, তিনি বললেন, “আমি তোমাদেরকে তামিমের গল্পটি শোনাতে চেয়েছি কারণ সে যা বলেছে আর আমি তোমাদের আগে যা বলেছি তার মধ্যে মিল আছে”।. এরপর রাসূল (সাঃ) বললেন, “সে এখন আশ-শামের সাগরে অবস্থান করছে”। আশ-শামের সাগর হচ্ছে ভূমধ্যসাগর, অথবা ইয়েমেনের সাগর। আর ইয়েমেনের সাগর হচ্ছে লোহিত সাগর কিংবা আরবসাগর। তারপর রাসূল (সাঃ) বললেন, “না”, তিনি পূর্বদিক নির্দেশ করে ৩ বার বললেন, “সে পূর্ব দিকে আছে”।. এর মানে আমরা বুঝতে পারলাম, দাজ্জালের অবস্থান মদীনার পূর্বে, কিন্তু পূর্বের ঠিক কোথায় আছে, তা কেবল আল্লাহই জানেন। এই হাদীস থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে, এর মধ্যে একটা হচ্ছে, আদ-দাজ্জাল এখন জীবিত অবস্থায় আছে এবং তামিম আদ দারি তাকে দেখেছিলেন। রাসূল (সাঃ) তার বক্তব্যকে অনুমোদন দিয়েছিলেন এবং আমরা এও জানি যে দাজ্জাল ৪০ দিনে সারা দুনিয়া ভ্রমণ করবে এবং সে মক্কা, মদীনা শহর ছাড়া পুরো বিশ্বে অবস্থান করবে।

-সহিহ মুসলিম, বই নং- ৪১, হাদিস নং- ৭০২৮
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩৩
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সেকালের গ্রামের বিয়ের বর দেখা

লিখেছেন প্রামানিক, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৩


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

একদিন পরেই শুক্রবার। সকালেই বাবাকে ঐ বাড়ির ঘরবর (অর্থাৎ বর দেখা অনুষ্ঠানকে আঞ্চলিক ভাষায় ঘরবর বলে) উপলক্ষে ডাকা হয়েছে। বাবা সকালে গিয়ে বর দেখা উপলক্ষ্যে কি কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওবায়েদুল কাদের কি মির্জা ফখরুলের বাসায় আছেন?

লিখেছেন রাজীব, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮

"পালাবো না, পালিয়ে কোথায় যাবো? দরকার হলে মির্জা ফখরুলের বাসায় আশ্রয় নেবো। কি ফখরুল সাহেব, আশ্রয় দেবেন না?" ওবায়েদুল কাদের একটি জনসভায় এই কথাগুলো বলেছিলেন। ৫ই আগষ্টের পরে উনি মির্জা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যোগ্য কে???

লিখেছেন জটিল ভাই, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪১

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)




(সকল... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণতান্ত্রিকভাবে লীগকে ক্ষমতার বাহিরে রাখা যাবে আজীবন।

লিখেছেন শাহিন-৯৯, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:১৩



লীগ সদ্য বিতাড়িত কিন্তু তাদের সাংগঠিক কাঠামো এখনো পূর্বের মতই শক্তিশালী শুধু ছোবল দিতে পারছে না, স্থানীয় নেতারা বিএনপির নেতাদের বড় অংকের টাকার বিনিময়ে ইতিমধ্যে এলাকায় প্রবেশ করছে তবে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেললেন মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৪১


মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী লম্বা রেইসের ঘোড়া মনে হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া হতে বেডরুমে যার নিয়োগ নিয়ে অস্বস্তি আছে তিনি খুব দ্রুত শিখে গেলেন কিভাবে মানুষের মাথা ঠান্ডা করতে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×