অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা আছে যে বাসর রাতে বিড়াল মারা মানে সে রাতে কামলীলা সাঙ্গ করা। এটা আসলে ভুল। আমাদের দেশীয় আবহে চলুন জেনে আসি এর ইতিহাস-
গ্রামের নাম মহব্বতপুর। এই গ্রামে বাস করত দুই চাচাত ভাই। একজনের নাম দরু এবং আরেকজনের নাম ঝড়ু। তারা দু’জন ভালো বন্ধুও ছিল। তাঁদের বন্ধুত্ব এমনি ছিল যে, একজন আরেকজনকে রেখে কিছু করতে পারতো না। ঝড়ু ছিল বোকা কিছিমের আর দরু ছিল চালাক। ঝড়ু মেয়েদের দেখে ভয় পেত। মেয়েদের সামনে গেলে তার হাত-পা কাঁপত। আর দরুর এই সমস্যা ছিল না। সে উল্টো সুন্দরী মেয়ে দেখলে ঝড়ুকে দেখিয়ে বলত-‘দেখ, দেখ কত সুন্দর মেয়ে , চল গিয়ে কথা বলি?’ এটা শুনেই ঝড়ুর হাত-পা কাঁপা শুরু করত। একদিন দরু বলে-‘চল বিয়ে করে ফেলি, তাহলে তোর আর মেয়েদের দেখে ভয় লাগবে না।’ঝড়ু কি চিন্তা করে এ কথায় রাজি হয়ে গেলো। যেই ভাবা সেই কাজ। তারা বিয়ে করে বউ নিয়ে আসলো। দরু বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথে বাসর ঘরে ঢুকলো। সে তার নতুন বউ এর ঘোমটা খুলে ফেললো আর বউ তাকে ধরাম করে একটি চড় বসিয়ে দিল। তার বউ বলল-‘তুমি কেমন পুরুষ, অনুমতি ছাড়া বউ এর ঘোমটায় হাত দিলে যে?’ দরু তো একদম থ! রাগে অভিমানে কথাটি না বলে খাটের একপাশে শুয়ে পড়লো।
অন্যদিকে ঝড়ু বেশ ভয়ে ভয়ে বাসর ঘরে ঢুকলো। সে তার বউ এর ঘোমটা খুলতে যাবে এমন সময় ম্যাও বলে আওয়াজ শুনলো। সে দেখলো যে একটা বিড়াল ঘরে ঢুকেছে। সে বিড়ালকে একদমই সহ্য করত না। বিড়াল দেখে তার মেজাজ বিগঢ়ে গেল। সে পিড়ি দিয়ে বিড়ালের দিকে ছুঁড়ে মারলো। পিড়ির আঘাতে বিড়ালটি গেল মরে! এটা দেখে ঝড়ুর বউ তো সেই ভয় পেল।
এক দিন দু'জন গল্প করছে।ঝড়ু বলছে, সে এখন আর মেয়েদেরকে ভয় পায় না। তার বউ তার সব কথা শুনে। সব শুনে দরু অবাক! সে বিড়াল মারার কাহিনী শুনলো অার খুব আফসোস করতে লাগলো। সে ভাবলো সেও একটা বিড়াল মারবে। সেদিন রাতে সে পোষা বিড়ালটা ধরে তার বউ এর সামনে মারতে উদ্যত হল। সেটা দেখে দরুর বউ একটা দা নিয়ে দাবড়াতে আসলো। তার বউ বলে- ‘তোমার কোন মায়া দয়া নেই, অবলা জীবকে মারতে আসছো?!!!
অাফসোস! বিড়ালটা যদি সেই বাসর রাতেই মারত সে!!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০১৬ রাত ১১:৩৩