এধরনের পোষ্ট করব চিন্তা করে সামহোয়্যার জয়েন করিনি। কিন্তু করতে হচ্ছে নিজের ভিতরের ক্ষোভ, বিরক্তিগুলো বের করার জন্য। এন এ প্রোগ্রাম এ লেখা আছে শেয়ার করলে নাকি মন হালকা হয়ে যায়। একটু যাচাই করে দেখি।
"এইখান থেইকা শুদ্ধ ভাষার খেতা পুরলাম"
যদিও এই দেশের 'চুলের পরিশব্দের' রাজনীতি নিয়া আমি কখনোই মাথা ঘামাই না তারপরও কি কারনে জানি তত্তাবধায়কের আমল শুরু হওয়ার পর আর সব বান@#$%রা জেলে যাওয়ার পর কিল্লাইগা জানি মনে হইছিলো এইবার বুঝি কিছু একটা পজিটিভ হওয়ার চান্স আছে। না, আমি একদমই চিন্তা করি নাই যে জেলের সবগুলারে সরকার মাইরা ফালাইবো আর তাগো দূর্নীতির টাকা বাজেয়াপ্ত করবো আর আমরা এই দেশে স্বর্গবাস করা শুরু কইরা দিমু।
আপনাগো অনেকের মত আমারো একবার মনে প্রশ্ন জাগছিলো 'যদি ছাইরাই দিব আর কোনো পরিবর্তনই না করতে পারব তাইলে এত হাংগামা কইরা এইগিলারে ধরলই কে আর এত নাটকই বা করলো কে?' কেউ উত্তর দেয় নাই, উত্তরের দরকারও পরে নাই। আপনাআপনি বুইঝা লইছি।
তবে নতুন নতুন পাবলিক,দল,সংস্কারপন্থি, ধো$পন্থি এইসব দেইখা মনে করছিলাম আর কিছু হোক না হোক অন্তত কিছু নতুন চিন্তাধারার ভালো পোলাপাইন তো রাজনীতি জয়েন করার উৎসাহ/সুযোগ পাইবো। আমি আবার এই "স্লোগান" নিয়া চলতে খুব পছন্দ করি, **নতুন নতুনের দিকে নিয়া যায়, আর পুরাতন পুরাতনের দিকে নিয়া যায়**। খুবই সিম্পল স্লোগান, কোনো সাহিত্য/কবিতা না। নতুন পোলাপাইন যে শুধু জয়েন করতাছে তা না, সমানে জয়েন করতাছে। তাইলে আমি আশাবাদী না কেন?
আসেন দেখি কারা জয়েন করতাছে। আমি আমার নিজের এলাকা দিয়া বিচার করতাছি আপনে আপনেরটা দিয়া করেন। গতকালকেই আমার এলাকায় প্রথম সারির দলগুলা স্ব স্ব দলের এলাকাভিত্তিক সভাপতি নির্বাচিত করছে।
জাতীয় পার্টির সভাপতি : এলাকার সব ফাউল পোলাপাইনের মাইবাপ। প্রাথমিক বিদ্যালয় পাশ করে নাই, বয়স ৪০ হইয়া গেছে বিয়া হ্য় নাই, কেউ মেয়ে দেয় না, তার সবচাইতে কাছের বন্ধু পুলিশের গুল্লি খাইয়া ইন্তেকাল ফরমাইছে। নিজে গাজা খোর, পাশাপাশি এলাকার সব উঠতি বয়সের পোলাপাইনের নেশার হাতেখড়ির শিক্ষক। এই সব ছোটো পোলাপাইনগুলাই এলাকার "ব্ল্যাকলিস্টেড" চোর হিসেবে সুপরিচিত।
উপরিউক্ত ব্যক্তিটি এইবার প্রথম রাজনীতিতে যোগ দিছে বইলা তার পরিচিতি দিলাম। অন্য দুই দলের ঐ পদস্থানীয় মানুষগুলা পুরান পাপী বইলা তাগো পরিচিতি দেয়ার প্রয়োজন দেখলাম না।কিন্তু নতুন উদীয়মান ছাত্রনেতারটা দিলাম।
বি এন পি'র ছাত্রনেতা : আমার বাল্যকালের সহপাঠী। টাইনা টুইনা মেট্রিক পাশ। নামকরা হেরোইনচি হিসেবে স্কুল জীবনেই আত্যপ্রকাশ। এখন হেরোইন গ্রহন করেন না। মদ্যপান করেন আর নতুন নতুন মেয়েদের "ভার্জিনিটি" ধ্বংস কইরা সেই গল্প চরম মজা নিয়া সবার সাথে কইরা বেরান। খুবই মজাদার চরিত্র। "হার্ডকোর" কমেডিয়ান।
আওয়ামীলীগ এর সম্ভাব্য কমিশনার পদপ্রার্থী: গত কয়েক বছর চরম অধ্যাবসায় লাগায়া বড় বড় কুতুবদের চামচাগিরি করছেন আর জমি দখল, রিয়াল এস্টেট ইত্যাদিতে দুই নাম্বারি কইরা আর দুই নাম্বারি করাতে সাহায্য কইরা মাশাল্লা ভালো কামাই করছেন।
"আমার ভোট আমি দেবো, দেখে শুনে বুঝে দেব।" এইবারের নির্বাচন শ্লোগান। কারে দেখব,কারে শুনবো, কারে বুঝবো? নতুন কোনো সৎ যোগ্যবান মানুষ দাড়াইলে তো! বছরের পর বছর ধইরা তো ঐ একই $%@নির পুতেরা দাড়াইতাছে। ব্যাপারটা এইরকম যে আমার হাতে কেউ পিস্তল দিয়া বলল যে ভাই দেইখা শুইনা গুলি কইরেন আর আমি গুলি করতে গিয়া দেখি আমার বাপ আর মারে গুলি করতে দিছে। আর কোনো অপশন নাই। এরচে আগের শ্লোগান "আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো" ভালো ছিলো, এত চিন্তার কিছু নাই, জানিই তো সবই দুই নাম্বার, একজনরে ভোট দিলেই হইল।
কোরবানীর ঈদ গেলো,এইবার কোরবানী দিতে সময় মনে হইলো কোরবানীর গরুর নছিব আমগোরচে অনেক ভালো। গরুতো আল্লাহর জন্য কোরবান হইতাছে, আমরা প্রত্যেক নির্বাচনের সময় একবার কইরা এই দেশের রাজনীতির লাইগা কোরবান হইতাছি, আর একেক বার একেক দল আমাদের মাংস আর চামড়া ব্যাবহার করতাছে।
"আবার ভদ্র ভাষায় প্রবেশ"
পরিসমাপ্তি: মনে করেছিলাম শেয়ার করে হালকা বোধ করব, কিছুই হালকা হ্য়নি। আরো অনেক অনেক ক্ষোভ, বিরক্তি,অসহায় বোধ মনে জমছে। আবারো বলছি,এই পোস্টটি শুধুমাত্র আমার নিজের খারাপ লাগাগুলো শেয়ারিং করার জন্য। এটি কোনো অর্থেই একটি রাজনৈতিক পোস্ট নয়।
"আবার আমি আমার দেশের ৮০% মানুষের মত কাঠের চশমা পরলাম। এই চশমার সুবিধা হল এটা পড়লে এই পোস্টের কষ্টগুলো আর বোধ হ্য় না। এই চশমার বিশেষত্ব আমাদের চাইতে ভালো আর কোনো দেশের মানুষ জানে না। অনেক আরাম।"
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:৪৫