তখন কুয়েটে পড়ি, ফাইনাল ইয়ার।সারা সেমিষ্টার তো লেখাপড়ার ধার দিয়েও যেতাম না,সুতরাং পরীক্ষার দুইদিন আগে কি অবস্থা তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা নিশ্চয়।যাই হোক, সারারাত পড়ে ভোর পাঁচটায় একাই বেড়িয়ে পড়লাম খিচুরি খাওয়ার জন্য।(রেলগেটের হোটেলগুলো সারারাতই খোলা থাকতো)খাওয়া দাওয়া সেরে ঢুকলাম নুর ইসলাম ভাই'র চায়ের দোকানে।ভোর সাড়ে চারটায় নুর ভাই'র বৃদ্ধ বাবা দোকান খুলতো।নুর ভাই দোকানে আসতো দশটার দিকে।(এটাই তো নিয়ম,তাইনা?যৌবনেরই বিশ্রাম দরকার,তাকে যেতে হবে বহুদূর। বার্ধক্যেরতো কেবলই ছুটির অপেক্ষা।)চা টা ভালো করে খাওয়া হোলোনা আমার।বহুদিন পর মাথায় একটা কবিতা এসেছে।প্রায় দৌড়ে হলে এসে লিখে ফেললাম।আমার জীবনের মাত্র দ্বিতীয় কবিতা।কবিতাটি শেয়ার করছি আপনাদের সাথে। জীবনের দ্বিতীয় হলেও এই ব্লগে এটাই আমার প্রথম কবিতা।
নাম নেই
রেলগেটের চায়ের দোকান
তার নাম নেই কোন,
জুবুথুবু বৃদ্ধ্ব দোকানী
দোকানের মতই, তারও কোন নাম নেই।
অথবা ছিল, হয়ত কোন একদিন
জৈষ্ঠের খরতাপে দূর্বা ঘাস পায়ে দলে
ছুটে চলা সেই দিনে।
নামের প্রয়োজন ফুরিয়েছে আজ
বসন্ত বাতাসে কচি বাঁশপাতার মত
হাত কাঁপে তার।
পারকিনসন্স ডিজিজ? নাকি মৃত্যুভয়?
অথবা সেদিনের ছুটে চলার ক্লান্তি?
"কোনদিন কর্মহীন পূর্ণ অবকাশে
বসন্ত বাতাসে অতীতের তীর হতে "
ভেসে আসে কোন দীর্ঘশ্বাস......
কোন গতজনমে, ফুলশয্যা রাতে
লজ্জ্বানতা বধুর হাতে হাত রেখে
কী যেন বলেছিল সে
স্মৃতি কবেই অস্ত গেছে যৌবনের নদীপারে
শুধু মনে পড়ে
সেদিনও এমনি হাত কেঁপেছিল,
কচি বাঁশপাতার মত।