এটা আসল কোহিনূরের মুকুট এর ছবি। ছবি তোলা নিষেধ, বেশ অনেক গুলো ছবি তুলে ছিলাম কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে সিকিউরিটি পুলিশ এসে আমার ফোন নিয়ে সব ডিলেট করে দিয়েছিল পরে দেখি দুইটা রয়েই গেছে। তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
লন্ডনের প্রাণকেন্দ্রে টাওয়ার ব্রিজ এর পাশে অবস্থিত ব্রিটিশ রাজা রানীদের সাবেকী আমলের বাড়ি। যেটি এখন মিউজিয়াম। সেখানে সব রাজা রানী ও তাঁদের পরিবারের ব্যবহৃত অনেক রকমের জিনিস পত্র আছে। আরও আছে সেই মহা মূল্যবান রত্ন কোহিনূর যা রানীর মুকুটের উপর লাগান।
বর্তমানে প্রায় একশ’ মিলিয়ন ডলার মূল্যের এই হীরার খণ্ডটি ব্রিটিশ উপনিবেশ ভারতবর্ষ থেকেই ব্রিটেনে পাচার হয়ে গিয়েছিল। সেই কোহিনুর আবারও ফেরত চান ভারতীয়রা। হীরকখণ্ডটির নাম ‘কোহিনূর’ ইংরেজিতে অনুবাদ করলে অর্থ দাঁড়ায় ‘মাউন্টেন অব লাইট’, অর্থাৎ ‘আলোর পাহাড়’। ভারতীয়দের যে দলটি কোহিনূর দেশে ফিরিয়ে নেয়ার তোড়জোড় শুরু করেছেন, তারা নিজেদের দলের নামকরণ করেছেন ‘মাউন্টেন অব লাইট’ হিসেবে। দলটির ভাষ্য- ১০৫ ক্যারেট ওজনের হীরাটির আসল দেশ ভারত এবং ভারত থেকেই এটি চুরি হয়েছিল বলেই তারা এটি ফেরত চেয়ে দাবি জানাবেন ব্রিটিশ সরকারের কাছে।
মাউন্টেন অব লাইট’ দলের অন্যতম সদস্য বলিউড তারকা ভৌমিকা সিং বলেন, ‘কোহিনুর শুধু ১০৫ ক্যারেটের একটি হীরকখণ্ড-ই নয়, এটি আমাদের ইতিহাসের অংশ এবং অবশ্যই এটি ফিরিয়ে আনা উচিৎ।’
তবে বৃত্তাকার এই হীরাটি ফিরিয়ে আনতে তাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে সরকার। বলা হয়েছে, ১৮৫১ সালে সর্বশেষ শিখ নেতা দিলিপ সিং এটি রানী ভিক্টোরিয়াকে উপহার দিয়েছিলো। এটি ফিরিয়ে আনা হবে ভারতের জন্য জাতীয় অপমান।
*** এখানেও গলদ আছে সরকার বলছে উপহার দেওয়া হয়েছিল আর কোহিনূর ফিরিয়ে আনার পক্ষে কাজ করছে বিভিন্ন দল ও পণ্ডিতেরা বলেছেন চুরি বা পাচার হয়ে গেছে।***
১৯৫৩ সালে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এর আসন গ্রহণ এর ভিডিও
রানী এলিজাবেথ তো নেই। আছে তাঁর মুকুট। আর তার ওপরেই আছে ১০৫ ক্যারটের হীরে। ওই কোহিনূর ফেরত চেয়েই পাকিস্তানের এক আদালতে মামলা করলেন এক পাকিস্তানি আইনজীবী।
বিশেষজ্ঞদের মতে কোহিনূরের মালিকানা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়েছে। কখনও ওই হীরের মালিক ছিলেন মুঘল সম্রাটরা। কখনও পাঠানরা আবার কখনও তার মালিক হয়েছিলেন পাঞ্জাবের মহারাজারা। ভারতে ব্রিটিশ শাসন কায়েম হবার পর ওই রত্নের মালিকানা নেন ব্রিটিশরা। এরপর ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করার পর দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয় ব্রিটিশরা। কোম্পানি আমল থেকে অনেক কিছুই ভারতের সম্পদ পৌঁছে গিয়েছে ব্রিটেনে, তা আর কখনও ফেরেনি। কোহিনূরের সঙ্গেও তেমনটাই হয়। দেশ তো ছাড়ল ব্রিটিশরা সঙ্গে নিয়ে গেল কোহিনূর।
কোহিনূর ফেরত পেতে ব্রিটেনের রানীর উদ্দেশ্যে ৭৮৬টি চিঠি লিখেও যখন কোনও জবাব আসেনি তখন মামলা করতে বাধ্য হন ওই আইনজীবী।
উল্লেখ্য ২০১০-এ ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামরুন ভারতে এসেছিলেন। তখন কোহিনূর বিতর্ক উস্কে দিয়ে তাঁকে হীরে ফেরত দেওয়ার কথা বলা হলে তিনি তাতে কোনও রকম কর্ণপাতই করেননি।
মুকুটের উপরে লাল বৃত্তের মধ্যে সেই মুল্যবান হীরা কোহিনূর।
আমরা বাংলাদেশী একসময় ভারতীয় এবং পাকিস্তানী ছিলাম। কিন্তু বুঝতে পারছিনা আমাদের কি করা উচিৎ। তবে একটু আঁচ করা যে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা ভাল। কারণ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা ব্যর্থ হবে সত্যিই যদি ভারতীয় সরকার বলে থাকে কোহিনূর উপহার দেওয়া হয়েছিল যা ফিরিয়ে আনা হবে জাতীয় অপমান।
মিউজিয়ামের ভিতরে সাজানো কিছু যুদ্ধের অস্ত্র ও কামান
প্রসঙ্গত, মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের এমন আরেকটি উদাহরণ ‘এলগিন মার্বেলস’ মামলা। ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত প্রাচীন ভাষ্কর্যটি ফেরত চায় গ্রিস।
সময় পেলে আপনারা এখানে বেড়িয়ে যেতে পারেন। একেবারে টাওয়ার ব্রিজ এর সাথে আর একটু নিকটেই লন্ডন ব্রিজ সাথে আরও একটি মিউজিয়াম। বেশ কাছাকাছিই আছে সেন্ট পোল'স ক্যাথারডাল চার্চ।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৪:১৯