# মানুষ মানুষের প্রেমে কেন পড়ে?
→ এক কথায় বলা যেতে পারে সাহায্যের জন্য।
# কি রকম সাহায্য?
→ অনেক রকমের হতে পারে। যেমন, সাজেশন দেয়ার মাধ্যমে সাহায্য, হাসানো বা কাঁদানোর জন্য সাহায্য আবার হতে পারে জৈবিক কাজ করে দেয়ার মাধ্যমে সাহায্য অথবা হতে পারে দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজন মিটানোর মাধ্যমে সাহায্য।
# আচ্ছা, এই সকল কাজই যদি কোনো একটা যন্ত্র করে দেয়, তাহলে কি মানুষ যন্ত্রের প্রেমে পড়বে? এই যেমন ধরেন, এখন ঘূর্ণিঝড় আসবে, আপনার কি করণীয় তা গুগল করার মাধ্যমে আপনি কিন্তু সাজেশন পেয়ে গেলেন। আবার ইন্টারনেট এ একটা জোক্স পড়ে আপনি হাসলে আবার ট্রাজেডিধর্মী কোনো গল্প পড়ে আপনি কাঁদলেন। আবার জৈবিক কাজ করে দেয়ার জন্যও কিন্তু যান্ত্রিক যন্ত্র আপনি পাবেন। আবার কিছু রোবট আছে যা দিয়ে আপনি আপনার দৈনন্দিন কাজকর্মগুলোও করিয়ে নিতে পারবেন। আবার হয়তো এমন কোনো রোবট আপনি পাবেন যার ভিতর এর সব গুনই আছে একসাথে। তাহলে কি আপনি সেই যন্ত্রের প্রেমে পড়বেন?
→ হা হা হা। পড়ব। তবে সাময়িকের জন্য।
#সাময়িকের জন্য কেন? মানুষ মানুষের প্রেমে যেরকম পড়ে সেরকমভাবে নয় কেন?
→কারণ, রোবটটা তো মানুষেরই বানানো।
# তাতে কি সমস্যা? মানুষও তো আল্লাহর বানানো!
→তাতে সমস্যা আছে। কারণ, রোবট আপনার দেয়া তথ্য দেয়া ছাড়া একটুও এদিক সেদিক নড়তে পারে না। যেমন ধরুন, আপনি জ্বরে আক্রান্ত, আপনাকে কিন্তু এই জ্বর নিয়েও গুগল করতে হবে জ্বর হলে কি করণীয়, সেই যন্ত্র কিন্তু আপনার কমান্ড ছাড়া কোনো কাজ করতে পারবে না। জোক্স শুনার জন্যও কিন্তু আপনাকে এমনিতেই একটা জোক্স শুনাবে না।
তারমানে তারকাছ থেকে কিছু পেতে হলে, অবশ্যই আপনাকে আগে কিছু কমান্ড সেট আপ করে দিতে হবে।
# আচ্ছা আপনি আপনার ভালবাসার মানুষের কাছ থেকে কখন এইসব সুবিধাগুলো পান? নিশ্চই তার আগে আপনাকে আপনার ভালবাসার মানুষের জন্য কিছু কষ্ট করতে হয়। যেমন ধরুন, একটুখানি দেখা করার জন্য অনেক্ষণ অপেক্ষা বা তার মুখে একটুখানি হাসি ফুটানোর জন্য কত প্রচেষ্টা। এর মাধ্যমেই আপনি কি আপনার ভালবাসার মানুষের কাছ থেকে আপনার জন্য একটু সিমপ্যাথি আদায় করে নিলেন না? এই কাজগুলো আগে থেকেই করার ফলেই কিন্তু আপনি তার কাছ থেকে সিমপ্যাথি পেলেন যার কারণে পরবর্তীতে সেও আপনার জন্য একই কাজগুলো করবে বা জ্বর হলে আপনার কি করতে হবে সেগুলো সে আপনাকে করে দিবে বা কি করতে হবে তা আপনাকে ফোনে বলে দিবে। এগুলোই একধরণের কমান্ড নয় কি?
→ জটিল প্রশ্ন! তবে হ্যাঁ, পরোক্ষভাবে বললে এগুলাও একধরণের কমান্ডই। যেহেতু জটিল প্রশ্ন, তাহলে চলেন একটু জটিলভাবে চিন্তা করি। দেখুন আল্লাহ মানুষ তৈরী করছে আর তার ভিতর কমান্ডও দিছে উনিই, আবার মানুষ রোবট বানায় আবার রোবটের কমান্ডও কিন্তু মানুষই সেট আপ করে। এখানে ব্যপারটা হচ্ছে আপনি যার কমান্ড সেট আপ করে দিলেন তার প্রেমে আপনি পড়বেন না, আপনি পড়বেন আপনার সমসাময়িকের। যেমন ধরুন, রোবট যদি আরেকটা জিনিষ নিজ থেকেই বানাইতো, তাহলে রোবট কিন্তু সেই জিনিষটার প্রেমে পড়ত না, রোবট তখন রোবটেরই প্রেমে পড়ত। তবে হ্যাঁ, আপনি যেই যন্ত্র বানাইছেন তার প্রতি আপনার একটা টান থাকতেই পারে, হতে পারে সেটা অভ্যেসের কারণে, টাকার কারণে অথবা অন্য কিছুর, তবে সেটাকে অবশ্যই ভালবাসা বলা যাবে না। যেমন, আপনার হাতে এখন অনেক কষ্টের কিনা যেই মোবাইলটা আছে, সেটার প্রতি কিন্তু আপনার একটা টান আছে। কিন্তু বাজারে এই ফোনেরই যদি একটা আপগ্রেড ভার্সন আসে আর আপনার যদি তা কিনার সামর্থ্য থাকে তাহলে আপনি বিন্দুমাত্র দেরী না করে সেই ফোনটাই কিন্তু কিনবেন। আগের ফোনটাকে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র ভালবাসার কারণে আগলে রেখে নতুন ফোন কিনা থেকে বিরত থাকবেন না।
# আচ্ছা, কিছু মানুষ যে কিছুদিন পরপরই তাদের ভালবাসার মানুষ বদলায়, আর বেটার অপশন খুঁজে, তাহলে কি তখন তারা তাদের ভালবাসার মানুষটিকে একটা যন্ত্রের মত ভাবে, যেটা কিনা তার দৈনন্দিন জীবনের কিছু প্রয়োজনই শুধু মিটাবে??? আপগ্রেডেড কেউ আসলেই, পুরাতন ভার্সনের জনকে ফেলে দিয়ে নতুনকে বরণ করবে??
(উত্তরদাতা আর উত্তর দিতে পারছে না। আপনি কি পারবেন সেই উত্তর দিতে?)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৬ রাত ২:৩১