চুপ কেন বিশ্ব মোড়লেরা ?? 12 Dec, 2016
বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক
গণমাধ্যমগুলোয় ৫ ডিসেম্বর স্থান পায়
কয়েকটি নিষ্পাপ রোহিঙ্গা শিশুর
নির্মমভাবে হত্যার চিত্র। http://facebook.com/babulbadsha.bd এ চিত্র
দেখে মানুষের মনে ভেসে ওঠে
সিরিয়া থেকে আশ্রয়ের জন্য পালিয়ে
যাওয়া শিশু আয়লান কুর্দির মুখ। ২০১৫
সালে ২ নভেম্বর ভূমধ্যসাগর তীরে উপুড়
হয়ে পড়েছিল শিশু আয়লানের মৃতদেহ।
তেমনিভাবে মায়ানমার
সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে প্রাণ
বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে
আসতে যাওয়া বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা
শিশুকে জীবন দিতে হয় মায়ানমার
সীমান্তরক্ষী পুলিশের গুলিতে। এসব
শিশুর লাশ নাফ নদীর তীরে
কাদামাটিতে ঠিক আয়লান কুর্দির
মতো উপুড় হয়ে পড়েছিল। গণমাধ্যমে
প্রকাশিত এসব চিত্র আবারো নাড়া
দেয় বিশ্ব বিবেক। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও
রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ করতে
রাখাইন প্রদেশে দেশটির
প্রধানমন্ত্রী আং সান সূচিকে
পরিদর্শনের তাগিদ দেয় জাতিসংঘ।
তবে জাতিসংঘের এমন আহ্বানে সাড়া
দেননি সূচি, উল্টো রোহিঙ্গা
নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করে
যাচ্ছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এ
নেত্রী।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের
ওপর চালানো সেনাবাহিনীর
নির্যাতনে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘিত
হচ্ছে। আর এমন মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরও
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলো নিশ্চুপ
থাকাটা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
বাংলাদেশের মানবাধিকার
সংশ্লিষ্টরা বলছেন যেসব বিশ্ব
‘মোড়লেরা’ কথায় কথায়
মানবাধিকারের কথা বলেন তারা
কেন চুপ করে আছেন?
রোববার বিশ্ব মানবাধিকার দিবস
উদযাপিত হয়েছে। মানবাধিকার
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমন একটা সময়ে
মানবাধিকার দিবস উদযাপিত হচ্ছে
যখন মধ্য প্রাচ্যসহ সারাবিশ্বেই
নানাভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত
হচ্ছে। তবে চলতি বছর সমস্ত বিশ্ব যখন
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হাতে
চরমভাবে নির্যাতিত রোহিঙ্গা
মুসলিমদের নিয়ে উদ্বিগ্ন তখন যুক্তরাষ্ট্র,
যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের অনেক দেশের
নেতাই চুপ রয়েছেন।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস ও
রোহিঙ্গা নির্যাতন প্রসঙ্গে সুশাসনের
জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম
মজুমদার পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, 'আসলে
সারা বিশ্বে মানবাধিকার দিবস
প্রতীকী অর্থে উদযাপিত হয়। মুখে মুখে
অনেকেই মানবাধিকারের কথা বলে
কিন্তু বাস্তবে কেউই মানবাধিকার
সমুন্নত রাখতে কাজ করছে না। আমাদের
দেশেও নানাভাবে মানধিকার লঙ্ঘিত
হচ্ছে। কিন্তু এ বছর সব কিছুকে ছাপিয়ে
গেছে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের
ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর
নির্যাতনের ঘটনা। অবাক করা বিষয়
দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অং সান
সু চি গণতন্ত্র, মানবাধিকারের একজন
রক্ষক হিসেবে শান্তিতে নোবেল
পাওয়া বিশ্বনেতা। কিন্তু তার
শাসনামলে এমন মানবাধিকার লঙ্ঘন
আমাদের হতাশ করেছে। অন্যদিকে
বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টও (বারাক
ওবামা) শান্তিতে নোবেল পাওয়া
একজন বিশ্বনেতা, রোহিঙ্গা ইস্যুতে
তার চুপচাপ বিশেষ করে মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের চুপচাপ থাকাটা মানুষের
মনে প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে।'
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি
মানবাধিকার রক্ষার অজুহাতে
যুক্তরাষ্ট্র ও তার বন্ধু রাষ্ট্রগুলো ইরাক,
আফগানিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন
সময় সহযোগিতার নামে যুদ্ধ করে
বেড়িয়েছে। কিন্তু এখন কেনো তারা
চুপ করে আছে। তারা তো
মানবাধিকার রক্ষার বিশ্ব মোড়ল।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৩৬