ডিসক্লেইমার২- তাবৎ নতুন ব্লগারদের জন্য.......
আজকাল মৌলিক লেখা লিখার স্পৃহা পাইনা। তাই আবজাব বিষয় নিয়ে পুস্ট দেই।
সামু ব্লগে প্রচুর ব্লগার ব্লগিং করে, কিন্তু আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা বলতে যা বোঝায়, তা কজন হাসিল করতে পেরেছেন? অনেক নতুন ব্লগারের নিজেকে চেনাতেই বছর লেগে যায়। আর এমনও অনেক ব্লগার আছেন, যাদের বুড়ো(ব্লগিং এজ) হিসেবেই ধরা যায়, কিন্তু লাইম লাইটে আসতে পারেন নি। এ পর্যায়ে হয়তো অনেকেই দ্বিমত পোষন করবেন আমার সাথে। যে লাইম লাইটে আসার জন্য ব্লগিং করিনা, নিজের ভাবনাগুলোকে শেয়ার করার জন্যই ব্লগিং করি। মানি, কিন্তু বুকে হাত দিয়ে বলেন তো, আপনার থ্রো করা পোস্ট যদি মন্তব্যে ভরে না যায়, তাহলে কেমন লাগে??
এবার বলি সেইসব ব্লগারদের কথা, যারা জনপ্রিয় হতে হতে এমন এক উচ্চতায় উঠে গেছেন, নিচের দিকে তাকালে তারা প্রায়শই অনুভব করেন, আরে! আমি তো মাটি থেকে বেজায় উপরে!!
এদের নিকটি ব্লগারদের কাছে আইডলের মতোই(সব ব্লগারের কাছে নয়)। এরা হাচি কাশি দিলেও কি হলো কি হলো বলে সবাই সেই ব্লগে ভীড় জমান। সন্দেহ নেই, নিজস্বতায় এরা এমন এক ট্রেন্ড তৈরী করতে সমর্থ হয়েছেন। লেখার ভঙ্গি, মন্তব্যের মাঝে তীব্র সেন্স অফ হিউমার, লেখার মাঝে নিজের রুচিকে তুলে ধরতে পারা এবং সর্বোপরি মেধার সঠিক প্রয়োগ, আমার মনে হয় এসব গুনই সেইসব ব্লগারের জনপ্রিয়তার কারন।
শিরোনামে আমি আইডল শব্দটা ব্যবহার করেছি, কারো কারো দ্বিমত থাকতে পারে। তবে আমার ধারনা বেশির ভাগ ব্লগারের কাছে এরা আইডলই।
এবার চলুন দেখি সেরকম লিজেন্ড কয়েকজন ব্লগারের ব্লগ। আমি যাদের ভীষন পছন্দ করি, তাদেরকে তুলে ধরলাম। ভিন্ন মত থাকলে জানাতে পারেন।
চিকনমিয়া- আমি পুরান পাপী- - নামের মধ্যেই খুঁজে পাওয়া যায়, এই ব্লগারের রসবোধ। বোধকরি নামের চাইতে প্রেফাইল পিকেই তার সেন্স অফ হিউমারের সন্ধান পাওয়া যায়।
এক বছরের বেশি সময় ধরে ব্লগিং করলেও এখন অনিয়মিত। কিন্তু ডেইলি তার ব্লগ ভিজিট করছেন অনেকে। তাকে নিয়মিত হবার অনুরোধ জানিয়ে আসছেন। মাইনাস বয় হিসেবে খ্যাত এই ব্লগার জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থান করছেন। অথচ এতোদিনে তার পোস্ট সংখ্যা মাত্র দশ!! সবগুলো পোস্টই সুপার হিট। ফেব্রুয়ারিতে তার বছরপূর্তি পোস্ট এ দেখুন তার জনপ্রিয়তার নমুনা! পোস্টে অ্যাভারেজ মন্তব্যের সংখ্যা ৩০০ এর কাছাকাছি।
তার সবগুলো মন্তব্যই বেশ রসালো। তড়িঘড়ি করে খুঁজতে গিয়ে এটাই চোখে পড়লো-
রাফাত সাদাত বলেছেন: শইলডা ভালানি জ্যাডা?
২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ রাত ৮:৩০
লেখক বলেছেন: ঠান্ডা লাগচে, বড়ই কষ্টে আচি
আমার ranking এ চিকনা জ্যাডা এক নম্বর। জ্যাডা ফিরা আহো!!
রাশেদ - ভালো পোলা আছিলাম, এখন আপাদমস্তক ভন্ড!-
আর এক জনপ্রিয় চরিত্র। যতোটা না পোস্টের জন্য, তারচে বেশি কমেন্ট এর জন্য। হেন পোস্ট ছিলোনা, যেথায় তাহার কলমধূলি(!!) পড়িতোনা
যাই পড়তেন, মন দিয়ে পড়তেন। অনেক নব্য লেখক তার কাছ থেকে আলোচনা সমলোচনায় নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পেরেছেন। এ অধমও তার ব্যতিক্রম নয়। কারো কাছে রাশেদ ভাই, কারো কাছে রাশু হিসেবে পরিচিত এই ব্লগার নিজের স্বকীয়তা সবসময় বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন। বহু বিতর্কিত পোস্টে আলোচনায় গিয়েছেন, কিন্তু কীবোর্ডে কখনও গালির তুবড়ি ছোটান নি। ২ বছর ৫ মাস ধরে ব্লগিং করছেন। ১৫০ টি পোস্ট করেছেন। প্রতিটি পোস্টই হিট। তার ব্লগের হিট দেখুন-ব্লগটি মোট ১৭৮০৪৯ বার দেখা হয়েছে!! অথচ এখন তিনি আসেন না বললেই চলে।
আর সবার মতো তিনিও আমার অনেক প্রিয় ব্লগার। উই মিস ইউ ডুড!!
তনুজা-পোস্ট বিরতি- এলাম, দেখলাম আর জয় করলাম। তনুজার বেলায় এই কথাটা খাটে। ব্লগিং এর শুরু থেকেই এমন খ্যাতি আর কোনো ব্লগারের ভাগ্যে জুটেছে কিনা আমার জানা নেই। ১ বছরের কাছাকাছি সময় ধরে ব্লগিং করছেন। পোস্টের সংখ্যঅ ৬০+। প্রতিটিই হিট। তবে কেন জানি এই ব্লগে আমি হতভাগা খুব কমই মন্তব্য করেছি। সন্দেহ নেই, তনুজা এক অনুকরনীয় ব্লগার।
তামিম ইরফান-নাম: অধ্যাপক গোলাবী হনুমান
পেশা: বান্দরামি
শখ: গাছের ডাইল ধইরা ঝুলন খাওয়া আর চান্স পাইলে মানুষের চুল ধইরা টানাটানি করা
প্রিয় খাদ্য: আইট্টা কলা ও উকুন
প্রোফাইল দেখলেই হাসতে হাসতে মরার দশা হয়। গুলাবী নামে খ্যাত এই ব্লগার বান্দরবেলা সিরিজ দিয়ে খ্যাতির তুঙ্গে উঠে যান। তবে তার অনেক আগে থেকেই তিনি জনপ্রিয়। ব্লগে হেন কেউ ছিলেনা যে কিনা গুলাবীর নাম শুনেনি। চাইলে তখনকার দিনে গুলাবী ফ্যান ক্লাব নামে একটা ক্লাব অনায়াসেই খোলা যেতো।
২ বছরের বেশি হলো ব্লগিংয়ে আছেন। সেঞ্চুরি মেরে দিয়েছেন। ব্লগটি মোট ১১০৭৫৭ বার দেখা হয়েছে!!!!
অনেক দিন হইলো, পুস্ট দ্যান ভাই
মানুষ-খারাপ ছেলে- এই ব্লগারের সম্পদ হলো তীব্র সেন্স অফ হিউমার। যেকোন সিরিয়াস বিষয়ের মাঝ থেকেও রম্য খুঁজে নিতে পারার অদ্ভুত এক দক্ষতা আছে তার। রবীন্দ্রনাথের ছুটি গল্পটি কালজয়ী গল্প। আমাদের রমজান মিঞা সেই গম্ভীর লেখাটিকে ব্যবচ্ছেদ করেছেন কমেডি রুপে। ব্লগে সর্বকালের সেরা রম্য গল্প বলতে আমি সেই গল্পটিকেই বুঝি। দুঃখ হলো, গল্পটির লিংক দিতে পারছিনা। কারন, রমজান মিঞা তার পোস্ট সরিয়ে ফেলেছেন মডুদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরুপ। তবে তার রসবোধের ছোট্ট একটা নমুনা দেখতে পারেন এই পোস্টে।
২ নং মন্তব্যটিতে চোখ বুলান। কি বুঝলেন?? এই সিরিয়াস পোস্টের বারোটা বাজানোর জন্য ওই একটি মন্তব্যই যথেষ্ঠ!!
মানুকে অনুরোধ, সব পোস্ট ডাস্টবিনে ফালায়া দ্যান, কিন্তু ছুটি গল্পটি ফেরত আনেন। নতুন ব্লগারদের ওই গল্পটি পড়ার প্রয়োজন আছে। মানুর ব্লগ
মানবী- ব্লগ এখন শিরোনামহীন- তখনকার দিনে মানবী আপুর পোস্ট মানেই স্টিকি। তার লেখার বিষয়বস্তু মানবতা। তথাকিথত নারীবাদ নয়, যেখানেই অত্যাচার নিপীড়ন হয়েছে, ব্লগারদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন এই ব্লগার। তুলে ধরেছেন সেইসব কাহিনী। যেগুলো প্রচন্ড ব্যস্ততার কারনে অগোচরে রয়ে যায়। এখন কম আসেন, আদর্শ ব্লগার বলতে যা বোঝায় তিনি তাই। আমি তাকে মিস করি। মানবীর ব্লগ
নাফিস ইফতেখার-অন্তহীন অপেক্ষা........ - নাফিস ইফতেখার খুব মেধাবী একজন ব্লগার। টেকি পোস্ট, খেলার পোস্ট, গ্রাফিক্স নিয়ে অসাধারন কাজ এবং অসাধারন রসবোধ তাকে জনপ্রিয় চরিত্রে পরিনত করেছে। দেড় বছরে ট্রিপল সেঞ্চুরির মালিক হয়েছেন। ম্যারাথন ব্লগিং যাকে বলে। ব্লগটি মোট ৪৬৮১১০ বার দেখা হয়েছে!!!!!!!!!!
জেরী-পৃথিবীর সব ভাল-মন্দের ভীড়ে---এই আমি--জেরী- মেয়ে ব্লগাররা এই ব্লগের প্রান। আর জেরী নামের ইঁদুরটি তো এই ব্লগের শোভা বললেই চলে।(লুলীয় স্টাইলে বললেও, আমি কিন্তু লুল নই) জেরী নামটার মধ্যেই বিটলা একটা ভাব আছে। জনপ্রিয় কার্টূন চরিত্র টম এন্ড জেরীর জেরী নামের ইঁদুরটির কীর্তিকলাপের কথা সবারই জানা। জেরীও সেই ভেক ধরে বাজিমাত করেছেন। এই পোস্টে নিজেকে ঢংঙ্গী হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।
জেরীর পিকে নতুন সংযোজন বাংলার পতাকা। জবরদস্ত!!
একরামুল হক শামীম-রূপালী আলোর পথে- ব্লগিং জীবনের শুর থেকে এ পর্যন্ত প্রচুর ব্লগারদের সাথে ভার্চূয়ালি এবং সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন শামীম ভাই। ব্লগ নিয়ে তার মতো মাথা ঘামায় খুব অল্প কজন ব্লগার। সবার কাছে নিজের ক্লিন ইমেজটা ধরে রাখতে অনেকটাই সমর্থ হয়েছেন তিনি। তবে ইদানিং ফিউশন ফাইভের সাথে তার নাম জড়াচ্ছেন অনেকে। এবং সেটা যারপরনাই মিথ্যা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যূতে তার পোস্টগুলো প্রামান্য দলিলের মতোই।
একটা সময় তিনি খেকু ছাইমা হিসেবে পরিচিত ছিলেন বন্ধুদের কাছে। সেসব এখন অতীত।
২০০৭ এর মার্চ মাসে প্রথম পোস্ট দ্যান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুতে। সেই থেকে এখনো লিখেই চলেছেনে। রেডিও ফূর্তি তাকে বেতন কি কামে দ্যায় কে জানে!!
আইরিন সুলতানা-অন্তরালে ...- কবি, গল্পকার, ভ্রমন কাহিনী লিখিয়ে, প্রাবন্ধিক ইত্যাদি পরিচয়ে পরিচিত এই ব্লগারের আরো একটি প্রশংসাযোগ্য কাজ হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যূতে জনসচেতনতা সৃষ্টির নিরলস প্রয়াস। তার নিপাট লেখক ইমেজে একটুখানি আঁচড় মনে হয় এই ইস্যুটি।
বিষাক্ত মানুষ- ♫ ♫ ♫ ♫ ♫ | psychovocxএটyahooডটcom- ম্যান অফ লিরিকস নামে অভিহিত করি তাকে আমি। বাবুয়া নামের এক গৃহপালিত জন্তুর কারনে ব্লগে আসা ছেড়ে দেন তিনি। চাইলে এখানে দেখতে পারেন। কিন্তু এখনো নিয়মিতই তার ব্লগ ভিজিট করছেন অনেকে। বিমা ভাইয়েরও সেন্স অফ হিউমারের তুলনা নাই। গানের লিরিকস নিয়ে পোস্ট দিলেও এর বাইরে তার আরো একটি পোস্ট আছে যেটি অসাধারন বললেও কম বলা হয়।
গান নিয়ে তার ঐতিহাসিক!! পুস্ট এইডা। না দেখলে জীবন বৃথা। বিমা ভাইরে মিস্করি।
ফিউশন ফাইভ- নিঃসঙ্গ শেরপা- সবশেষে ওয়ান ম্যান আর্মি!! সন্দেহ নেই, অসাধারন মেধাবী এবং চালু একজন ব্লগার। হেন বিষয় নেই ,যা নিয়ে তিনি পোস্ট দ্যাননি। ব্লগ ঝিমাচ্ছে, নো প্রব; ফিফা এলো বলে!! এ পর্যন্ত তাকে নিয়ে যতো চর্চা সামু ব্লগে হয়েছে, আর কাউকে নিয়ে হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। অনেকের কাছে তিনি রেসিডেন্ট। আমি সে তর্কে যেতে চাইনা। তার ঝুলিতে ব্লগ বিষয়ক সমস্ত কিছুই পাবেন। ব্লগসাইকোপিডিয়া বললেও কম বলা হবে তাকে। এতো সময় পান কি করে সেটাই একটা প্রশ্ন। হতে পারে তার কাজই এই!! একদা তিনি লোকালটক নামে পরিচিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তার করা সংকলনটার জন্য লোকে এখনো তাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে। তবে তার হামবড়া ভাবের কারনে ব্যাক্তিগত ভাবে তাকে আইডল হিসেবে মানতে পারিনা। কিন্তু ফিউশন ফাইভের মেধা নিয়ে তার শত্রুও দ্বিমত পোষন করবেন বলে মনে হয়না।
ফিফার ব্লগ
এছাড়া রাগ ইমন
চান্কু ভাইয়া
শরফু
নুশেরা
ফারহান ভাই।
রাতমজুর
নরাধম
এরাও বেশ জনপ্রিয় ব্লগার।
ম্যাভেরিক, অপ্সরা, বিডি আইডল, ইমন জুবায়ের, মেহরাব শাহরিয়ার, কাঁকন সহ যাদের নাম আসেনি, তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। সময় পেলে তাদের নিয়ে আর একটা পোস্ট দেয়ার চেষ্টা করবো।