নির্মলেন্দু গুণ-এর কবিতা
কবির পুকুর
পুকুর কেটে বসে আছি শান-বাঁধানো ঘাটে।
পাতাল ফুঁড়ে, ও জল, কখন উঠবে তুমি?
জলের জন্য পুকুর ঘাটে কত লোকের ভিড়।
পাতাল ফুঁড়ে, ও জল, কখন উঠবে তুমি?
জলস্তর যে মাটির নিচে এতই গেছে নেমেÑ
জানা গেল প্রায় দশ ফুট মাটি কাটার পর।
জল ছাড়া পুকুরÑ, সে তো মানুষ ছাড়া ঘর।
কোথায় জল? কোথায় জল, আন্না তড়খর?
পাড় ঘেঁষে যে-পথ গিয়েছে তমালতলী হাটেÑ
সে-পথ দিয়ে যাচ্ছে যারা, Ñবলছে তারা,
‘এমন অলক্ষুণে পুকুর নেই এ-তল্লাটে’।
কেউ বলছেন -‘পুজো করো, সঙ্গে পাঁঠাবলিÑ;
গঙ্গাদেবী রক্ত চাইছেন, Ñপ্রাণের অঞ্জলি।’
কেউ বলছেন, ‘খরচ একটু পড়বে, পড়–কÑ
পাতালজল দিয়েও তুমি পুকুর ভরতে পারো।’
কেউ বলছেন, ‘রজঃস্বলা কুমারীর লালসালু
মাঝপুকুরে উড়িয়ে দাও বাঁশের মাথায় বেঁধে।
দেখবে কেমন খলবলিয়ে উঠে আসছে জলÑ,
আয়নাজলে ভরবে পুকুর, আনন্দে টলমল।’
পাঁচজনের পাঁচ কথা শুনে শয্যা গেলাম রাতে।
রামসুন্দর পাঠাগারের চাল থেকে এক পেঁচা
উড়ে এসে কানে কানে বললো আমায়Ñ‘কবি,
আর ক’টা দিন সবুর করো, গ্রীষ্মটা যাক চলে।
ঘনকালোপুঞ্জমেঘে পূর্ণ হলে আষাঢ় আকাশ,