somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাতীয় কবি স্মরনে।।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানবতা ও
সাম্যের কবি,প্রেম ও
বিদ্রোহের কাজী নজরুল
ইসলামের ৩৯তম
মহাপ্রয়াণের দিবস আজ।
কবি নজরুল যখন জন্ম
নিয়েছিলেন তখন এই
ভারতীয় উপমহাদেশ
ব্রিটিশদের নিকট
পরাধীনতার
শৃঙ্খলে আবদ্ধ। জন্মের পরই
তিনি
মুখোমুখি হয়েছেন বিক্ষুব্ধ
এক স্বদেশের। পারিবারিক
অভাব-অনটনে বড় হয়েছেন।
বেঁচে থাকার
তাগিদে মসজিদের
মুয়াজ্জিন, লেটোর
গায়ক, চায়ের দোকানের
কর্মচারী থেকে শুরু করে
অনেক কিছু করেছেন, এমনকি
সেনাবাহিনীতেও যোগ
দিতে হয়েছিল তাঁকে।
তাঁর এই বৈচিত্র্যময় জীবন
সংগ্রামই তাঁকে একজন
খাঁটি মানুষ ও কবিতে
পরিণত করেছিল।
শুধু যে বৈরী পরিবেশে
জীবন কাটিয়েছেন তা নয়
তাঁকে সাহিত্যসাধনাও
করতে হয়েছে এক বিপুল
প্রতিভার সর্বপ্লাবী সময়ে।
নজরুল যখন শুরু করছেন তখন
বাংলা সাহিত্যজগতে
রাজকীয়ভাবে অবস্থান
করছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর।
গান-কবিতা-উপন্যাস-
ছোটগল্প-নাটক অর্থাৎ
বাংলা সাহিত্যের
সবকিছুই তখন রবীন্দ্রনাথের
স্পর্শে বিচ্ছুরিত। তাঁর
সমসাময়িক প্রায় সকলেই যখন
কোনো না কোনোভাবে
তাঁর দ্বারা প্রভাবিত, ঠিক
সেই সময়ে নজরুলের
আবির্ভাব ঘটে অনন্য
মাত্রা ও বার্তা নিয়ে।
তিনি রবীন্দ্রধারার সম্পূর্ণ
বিপরীতে এক নতুন ধারার
আরম্ভ করেন। তাঁর লেখায়
উঠে আসে বঞ্চিত-
নিপীড়িত-লাঞ্ছিত
মানুষের প্রতিবাদের কথা।
তিনি মানুষের মুক্তির কথা
বলতে চেয়েছেন। শাসন-
শোষণ ও ধর্মীয় গোঁড়ামির
বিরুদ্ধে অকপট ও সোচ্চার
থেকেছেন অবিচলভাবে।
"মানুষের চেয়ে বড় কিছু
নাই,
নহে কিছু মহীয়ান"
বলে মানুষ ও মানবতার
জয়গান
গেয়েছেন। মানুষকে
অবস্থান দিয়েছেন সকল
কিছুর ঊর্ধ্বে। তিনি
একদিকে যেমন বিদ্রোহের
কথা বলেছেন তার
পাশাপাশি প্রেম ও
ভালোবাসার কথাও
উচ্চারণ করেছেন উচ্চকণ্ঠে।
এজন্য তাকে বহুবার জেল
খাটতে হয়েছিল। মতামত
প্রকাশের স্বাধীনতা না
পাওয়ায় তার নির্ভয় উচ্চারণ
ছিল,"কারার ঐ লৌহকপাট,
ভেঙে ফেল কররে লোপাট।
"
নিজেকে নিয়েই তিনি
বলেছেন, "মম একহাতে
বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর
হাতে রণতূর্য।"
বাঁশরী ও রণতূর্যের কবি
যথার্থভাবেই
তার সংগীতে এই দুয়ের
মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন অত্যন্ত
সুচারুভাবে। তাঁর রচিত
সংগীত বাংলা
সংগীতজগতের এক অনন্য
সম্পদ। তাঁর গানের কথা ও সুর
আজও শ্রোতাকে মোহিত
করে অপার আনন্দে। বহুমুখী
প্রতিভার অধিকারী নজরুল
বহু ইসলামী গানও রচনা
করেছেন (বলা হয়ে থাকে
তিনিই বাংলায় প্রথম গজল
রচনা করেন) এবং তার
পাশাপাশি তাঁর রচিত
শ্যামাসংগীতও(হি
ন্দুধর্মাবলম্বীদের
প্রার্থনাসঙ্গীত) আজও এক
অমূল্য
সম্পদহিসেবেই পরিগণিত
এখনও।
নজরুলআজীবন সংগ্রাম
করেছেন তাঁর লেখনির
মাধ্যমে সমাজের সকল
অন্যায়-অনাচার ও ধর্মীয়
গোঁড়ামির বিরুদ্ধে।
বিশেষ করে তৎকালীন
পশ্চাদপদ মুসলিম সমাজকে
জাগিয়ে তুলতে,
গোঁড়ামিমুক্ত করতে তাঁর
ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। তিনি
আঘাত করেছিলেন ধর্মান্ধ,
কূপমণ্ডুকতার গোড়ায়। যে
কারণে তাঁকে বারবার
ধর্মান্ধদের আক্রমণের
শিকার হতে হয়েছে। এমনকি
তাঁকে কাফের ফতোয়া
পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তুু নির্ভীক নজরুল নীতি,
আদর্শ ও মানবতার প্রতি তাঁর
অকুণ্ঠ অবস্থান থেকে একচুলও
বিচ্যুত হননি। এখনও মানবতার
অপমানে, লাঞ্ছিতের
আর্তনাদে, বঞ্চিতের
হাহাকারে নজরুল ইসলাম এক
উজ্জ্বল প্রেরণা। যেখানে
ধর্মান্ধতা, যেখানে
কূপমণ্ডুকতা, সেখানে
নজরুলের গান ও কবিতা
মুক্তির বার্তা নিয়ে
উপস্থিত হয়।
তিনি বাংলা তথা
তৎকালীন দুর্যোগপূর্ণ
উপমহাদেশের চলমান হিন্দু-
মুসলিম দাঙ্গার সময় তার
ঘোর বিরোধী ছিলেন।
"হিন্দু না মুসলিম?
ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?
কান্ডারী, বলো কাঁদিছে
মানুষ, সন্তান মোর-মার।"
আজও তার সাম্যবাদী মনের
অমর বাণী আমাদের
উজ্জীবিত করে,"
মহাবিদ্রোহী রণক্লান্ত,
আমি সেদিন হব শান্ত,
যেদিন উৎপীড়িতের ক্রন্দন
ধ্বনি আকাশে বাতাসে
ধ্বনিবে না,
যেদিন অত্যাচারীর কৃপাণ
ভীম ভূমে রণিবে না।"
জীবিত থাকতে তিনি
যথাযোগ্য মর্যাদা পাননি।
শুধুমাত্র আমাদের জাতীয়
কবির মর্যাদা পাওয়া
ছাড়া।
নজরুল চলে গিয়েছেন
পরপারে,কিন্তু তার
মানবতাবাদী
আদর্শ,সাহিত্য,অন্যায়ের
প্রতিবাদ করার সৎসাহস
আমাদের মাঝে রেখে
গিয়েছেন।
তার বিদেহী আত্মার
সদ্গতি প্রার্থনা করি।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন পড়বেন, ফিকাহ জানবেন ও মানবেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:০০



সূরাঃ ৯৬ আলাক, ১ নং থেকে ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। পাঠ কর, তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন
২।সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ হতে
৩। পাঠ কর, তোমার রব মহামহিমাম্বিত
৪। যিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×