জলদস্যুদের জীবন কি আসলেই রঙিন আর প্রাণবন্ত ছিল? গল্প-কাহিনী কি আমাদের সবটা সত্যি বলে এসেছে এতদিন? নাকি এর আড়ালে রয়েছে ভিন্ন কোনো গল্প? চলুন তবে, আপনাদের দেখিয়ে আনি 'জলদস্যুদের স্বর্ণযুগ'-এর সময়ে তাদের জাহাজের দৈনন্দিন জীবন ঠিক কেমন ছিল। যা জানার পর হয়তো আপনি জলদস্যু হওয়ার চিন্তা এখনই বাতিল করে দেবেন!
খাওয়াদাওয়া
খাবার দিয়েই শুরু করা যাক। জলদস্যুরা সাধারণত মাসের পর মাস সমুদ্রে থাকত। সেসময় রেফ্রিজারেটর বা খাবার সংরক্ষণ করে রাখতে পারে এমন কিছু ছিল না। ফলে খাবার নষ্ট হয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। তাই তাদেরকে এমন খাবার নিতে হতো যা অনেকদিন টিকতে পারে। তাদের সেই খাবারের তালিকায় থাকত লবণযুক্ত মাংস, সবজি, বোন স্যুপ, ব্রেড ইত্যাদি। তবু প্রায়ই খাবার নষ্ট বা দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে যেত আর তাদের সেগুলোই খেতে হতো।
জাহাজের পরিবেশ
সাধারণত জলদস্যুরা যেসকল জাহাজ ব্যবহার করতো সেগুলো অতটা আরামদায়ক ছিল না। সেখানে ছিল না কোনো ভালো ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা। জাহাজের গায়ে বড় বড় ছিদ্রগুলো ব্যবহৃত হতো কামানের মুখ বের করে রাখার জন্য। সারাদিন প্রখর রৌদ্রে আবদ্ধ জাহাজে গুমোট পরিবেশ বিরাজ করত। এছাড়া জাহাজের এখানে-সেখানে সবসময়ই বিকট দুর্গন্ধ পাওয়া যেত। বিশেষ করে জাহাজের তলায়, যেখানে সবসময়ই পানি জমে থাকত। জাহাজের গায়ে ক্ষুদ্র কোনো ছিদ্র দিয়ে আসা পানি বা বৃষ্টির পানি ছিল এর উৎস। তেল, ময়লা, ধূলোবালি ইত্যাদি মিশে সেই পানিতে ভয়ানক দুর্গন্ধ হতো। এছাড়া প্রায়ই সী-সিকনেসের জন্য কেউ কেউ জাহাজে বমি করলে সেগুলো ধোয়ার পরে এখানে এসে তা যুক্ত হতো।
ঘুমানোর জায়গা
শুধুমাত্র জাহাজের ক্যাপ্টেন বা উচ্চপদস্থ কেউই কেবিন পেত। বাকিদের জাহাজের ডেকে বা ভেতরে কোথাও জায়গা করে নিতে হতো। গোপনীয়তার কোনো বালাই নেই। লোক সমাগম বেশি হওয়ার জন্য সবাইকেই সামান্য জায়গা নিয়ে পাশাপাশি শুতে হতো। অনেকে হ্যামক বা ঝুলন্ত বিছানা ব্যবহার করত ঘুমানোর জন্য। সমুদ্রে এটিই সুবিধাজনক, কারণ এতে জাহাজের দুলুনির জন্য ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে না।
ভিডিওতে বিস্তারিত বলা হয়েছে।
লেখা ক্রেডিট- জলদস্যুর জীবন
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০২১ রাত ১১:৩৩