somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যা কিছু নির্মাণ করি তা কেবল মানুষের জন্য : এস এম সুলতান

০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ৮:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যা কিছু নির্মাণ করি তা কেবল মানুষের জন্য : এস এম সুলতান
"আমি আমার বিশ্বাসের কথা বলছি ৷আমার সকল চিন্তা, সবটুকু মেধা, সবটুকু শ্রম দিয়ে যা কিছু নির্মাণ করি তা কেবল মানুষের জন্য, জীবনের জন্য, সুন্দর থেকে সুন্দরতম অবস্থায় এগিয়ে যাবার জন্য ৷আমার ছবির মানুষেরা, এরা তো মাটির মানুষ, মাটির সঙ্গে স্ট্রাগল করেই এরা বেঁচে থাকে ৷এদের শরীর যদি শুকনো থাকে, মনটা রোগা হয়, তাহলে এই যে কোটি কোটি টন মানুষের জীবনের প্রয়োজনীয় বস্তুসকল আসে কোত্থেকে? ওদের হাতেই তো এসবের জন্ম ৷শুকনো, শক্তিহীন শরীর হলে মাটির নিচে লাঙলটাই দাব্বে না এক ইঞ্চি ৷আসলে, মূল ব্যাপারটা হচ্ছে এনার্জি, সেটাই তো দরকার ৷ঐ যে কৃষক, ওদের শরীরের অ্যানাটমি আর আমাদের ফিগারের অ্যানাটমি, দুটো দুই রকম ৷ওদের মাসল যদি অতো শক্তিশালী না হয় তাহলে দেশটা দাঁড়িয়ে আছে কার উপর? ওই পেশীর ওপরেই তো আজকের টোটাল সভ্যতা ৷"
------------------------------ এস এম সুলতান
কথাগুলো ছবিপ্রাণ মানুষ এস এম সুলতানের ৷তাঁর শিল্পচেতনায় ছিল স্বদেশ-ঐতিহ্য, প্রকৃতি-পরিবেশ ও মানুষ ৷মানুষ যে শক্তিময়তার দিক থেকে অনেক বড়- এ সত্যের পরিচয় মেলে সুলতানের সৃষ্টি করা ক্যানভাসে চোখ রাখলেই ৷তাঁর ছবিতে কখনো কৃশকায় মানুষ দেখা যায় না, দেখা যায় পেশীবহুল স্বাস্থ্যবান অবয়ব ৷প্রগাঢ় সাহসী জীবনবোধের এক নিবিষ্ট চিত্রকর এস এম সুলতান (শেখ মুহম্মদ সুলতান) ৷জীবনের শুরুতেই যাঁকে সবকিছু বাদ দিয়ে পেশীতে নির্ভর করে নির্বাহ করতে হয়েছে জীবিকা ৷লড়াই করতে হয়েছে দৈনন্দিন দারিদ্র্যের সঙ্গে ৷এ লড়াইয়ের জন্য কোমল পেশীতে সঞ্চার করতে হয়েছে শক্তি ও সাহস ৷ পরবর্তী সময়ে তিনি যে মানুষকে শক্তিমান ও মহীয়ান করে চিত্রিত করেছেন তা নিছক শিল্প নয়, ঘনিষ্ট জীবনবোধ ও সমাজ বাস্তবতারও বহিঃপ্রকাশ ৷
নদীটির নাম চিত্রা ৷এটি নড়াইলের মাছিমদিয়া গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে৷ মাছিমদিয়া গ্রামেই কয়েকটি পরিবার নিয়ে গড়ে উঠেছে ধাউড়িয়া বাড়ি ৷ধাওড়িয়া বাড়ির লোক মেছের নড়াইলের জমিদার বাড়িতে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন ৷স্ত্রী, ছেলে লালমিয়া ও মেয়ে ফুলমণিকে নিয়ে তাঁর চারজনের সংসার ৷অভাব অনটন লেগেই আছে এ সংসারে ৷
অভাবের এই সংসারে লালমিয়া জন্মগ্রহণ করেন ১৯২৩ সালের ১০ আগস্ট ৷মেছের ধাওড়িয়ার একার উপার্জনে চলে এই সংসার ৷কিন্তু লালমিয়া ও ফুলমণিকে রেখে মেছেরের স্ত্রী হঠাত্‍ মারা গেলে অভাবের সংসারে দেখা দেয় নতুন সংকট ৷ছেলেমেয়ে ও সংসারের কথা চিন্তা করে মেছের আবার বিয়ে করেন নড়াইল থানার দুর্গাপুর গ্রামের আয়াতুন্নেসাকে ৷পরিবারের আভাব-অনটন তখনো তাঁদের নিত্যসঙ্গী ৷কারণ রাজমিস্ত্রীর কাজ করে যা আয় করেন তার পরিমান খুব সামান্য ৷
লালমিয়ার বয়স পাঁচ, মেছের ছেলের ভবিষ্যত্‍ চিন্তা করে তাঁকে স্কুলে পাঠালেন ৷১৯২৮ সালে লালমিয়াকে ভর্তি করালেন নড়াইলের ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুলে ৷কিন্তু অন্য সব ছেলেমেয়ের মতো শুধু লেখাপড়া আর খেলাধূলা করবে তেমন কপাল লালমিয়ার ছিল না ৷তাঁকে বাবার কাজে সহযোগিতা করতে হত ৷যদিও লালমিয়ার বাবার ইচ্ছে ছিল তাঁকে ভালোভাবেই পড়াশোনা করাবেন, কিন্তু সামর্থ হয়নি তাঁর ৷সংসারের অভাবের যন্ত্রণার সাথে যোগ হয় লালমিয়ার উপর সৎ মায়ের অত্যাচার ৷ এভাবেই চলছিল লালমিয়ার পড়াশোনা, বাবার কাজে সহযোগিতা আর বাঁশি বাজানো ৷অদ্ভুত সুন্দর বাঁশি বাজাতেন লালমিয়া ৷তাঁর এই বিশেষ গুণটির কথা স্কুলের সহপাঠীসহ এলাকার সব মানুষ জানত ৷নড়াইলের জমিদার বাড়ির পুকুর ঘাট, স্কুলের অনুষ্ঠান ছাড়াও বনবাদারে ঘুরে ঘুরে বাঁশি বাজাতেন তিনি ৷সে কারণে বংশীবাদক হিসাবে লালমিয়াকে অনেক মানুষ চিনত ৷এমন কথাও শোনা গেছে, জমিদার বাড়ির পুকুর ঘাটে লালমিয়া বাঁশি বাজানোর সময় কলো কেউটে সাপ দুই পাশে নাচত ৷
ছবির প্রতি ছিল লালমিয়ার ভীষণ টান ৷কোনোকিছু ভাল লাগলেই ছবি আঁকতেন ৷আঁকতেন চকখড়ি, কাঠকয়লা, হলুদ আর পুঁই ফলের রস দিয়ে ৷ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণী পাশ করার পর তাঁর বাবার ইচ্ছাতেই লালমিয়া নাকানি এ. বি. এস. জুনিয়র মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হন ৷এখানে সপ্তম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় লালমিয়া সৎ মায়ের সাথে ঝগড়া করে তিন আনা বারো পয়সা, একটি ছাতা, গুটিকয় জামা-কাপড় আর একটি ঠিকানা নিয়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান ৷বোন ফুলমণি মা হারা ভাইয়ের পিছু নেয় ৷'ফিরে আয়, ফিরে আয়' বলে কাঁদতে কাঁদতে ডেকে আকুল হয়৷ লালমিয়া ফেরেননি ৷যেতে যেতে বোনকে বলেছিলেন, 'তুই ফিরে যা, আমি আবার আসব।' হাঁটতে হাঁটতে সেদিন হাটবাড়িয়া লঞ্চ ঘাট পর্যন্ত আসেন ৷লঞ্চ ঘাট থেকে সোজা গিয়ে উঠলেন কোলকাতায় নড়াইলের জমিদার ধীরেন্দ্রনাথ রায়বাহাদুরের বাড়িতে ৷এখান থেকেই মাছিমদিয়ার লালমিয়ার জীবনের আরেক অধ্যায়ের শুরু ৷
লালমিয়া বাবার কাজে সহযোগিতা করার জন্য প্রায়ই তাঁর বাবার সাথে নড়াইলের জমিদার বাড়ি যেতেন ৷কাজের ফাঁকে জমিদারদের বাড়ির দেয়ালে কাঠ কয়লা কিংবা হলুদ দিয়ে ছবি আঁকতেন ৷সে কারণে জমিদার ধীরেন্দ্রনাথ রায়বাহাদুর ও তাঁর শিল্পরসিক ছোট ভাই লালমিয়ার ছবি আঁকার নেশার কথা জানতেন ৷তাই নড়াইল থেকে কলকাতায় জমিদার ধীরেন্দ্রনাথ রায়বাহাদুরের বাড়ি গিয়ে উঠার পর একদিন তিনি লালমিয়াকে বিলেত থেকে ছবি আঁকার উপর বিভিন্ন স্কেচের দুটো বই এনে দিয়ে বললেন 'লালমিয়া, যদি ভালো করে ছবি আঁকা শিখতে চাস, তাহলে তোকে এই প্রাথমিক বিদ্যেগুলো শিখতে হবে।' বই দুটো হাতে পাওয়ার পর ধীরে ধীরে ছবি আঁকায় আরো দক্ষ হয়ে ওঠেন লালমিয়া ৷ জমিদারের ছোট ভাই একদিন লালমিয়াকে ডেকে নিয়ে বললেন, 'দেখো লালমিয়া, তুমি যদি বড় শিল্পী হতে চাও, তাহলে তোমাকে ভালো শিক্ষকের কাছে ছবি আঁকা শিখতে হবে ৷তার মানে, তোমাকে আর্ট স্কুলে বা কলেজে ভর্তি হতে হবে ৷তার আগে তোমাকে ইন্টারভিউ দিতে হবে এবং ইন্টারভিউ দিয়ে পাশও করতে হবে।'
সে সময় কলকাতা আর্ট কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য অন্তত অ্যান্ট্রান্স (মেট্রিক) পাশের যোগ্যতা প্রয়োজন হতো ৷সে যোগ্যতা লালমিয়ার ছিল না ৷কারণ পাঠ অসমাপ্ত রেখেই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এসেছিলেন তিনি ৷এ নিয়ে যখন লালমিয়ার আর্ট কলেজে পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে তখন জমিদার বাবু বললেন, 'একটা উপায় অবশ্য আছে। সোহরাওয়ার্দীকে ধরতে হবে ৷তিনি এই কলেজের ভর্তি কমিটির সদস্য ৷তিনি বলে দিলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।'
ঠিকানা নিয়ে সোহরাওয়ার্দীর বাসার খোঁজে জমিদার বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন লালমিয়া ৷লালমিয়া যে মুহুর্তে বাড়িটি খুঁজে পেলেন ঠিক সেই মুহূর্তে সোহরাওয়ার্দী গাড়িতে করে বাইরে বেরুচ্ছিলেন ৷বাড়ির সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন লালমিয়া ৷তাঁকে দেখতে পেয়ে সোহরাওয়ার্দী ইশারায় ডাকলেন ৷লালমিয়া সোহরাওয়ার্দীর কাছে গিয়ে বিয়য়টা খুলে বললেন এবং সেই সাথে একটা মিথ্যা কথাও বললেন ৷বললেন, তাঁর কেউ নেই ৷সোহরাওয়ার্দী সব কথা শুনে গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির ভেতর নিয়ে গেলেন তাঁকে ৷একটি ঘর দেখিয়ে বললেন, 'ঐ ঘরের খাটে যিনি বসে আছেন তাঁকে তুই মা বলে ডাকবি ৷ঐ মহিলা সোহরাওয়ার্দীর চাচার স্ত্রী, নিঃসন্তান ৷লালমিয়া ঘরে ঢুকে দেখলেন, বিশাল খাটের ধবধবে বিছানার উপর সোনার গহনা পরা প্রৌঢ়া এক সুন্দরী মহিলা বসে আছেন ৷লালমিয়া সোহরাওয়ার্দীর কথামতো মহিলাকে 'মা' বলে ডাকলেন ৷খাট থেকে নেমে এসে লালমিয়াকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি ৷সেই থেকে লালমিয়া হয়ে উঠলেন সোহরাওয়ার্দীর পরিবারের সদস্য ৷
এর পর আর্ট কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে আর কোনো সমস্যাই হয়নি লালমিয়ার ৷আর্ট কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে প্রথম হলেন তিনি ৷১৯৪১ সালে আর্ট কলেজে ভর্তি হলেন ৷আর্ট কলেজে ভর্তি হওয়ার পর সোহরাওয়ার্দীর বাড়িতে থেকেই কলেজে যেতেন লালমিয়া৷ সোহরাওয়ার্দী লালমিয়ার নতুন নাম রাখেন শেখ মোহম্মদ সুলতান ৷এই বাড়িতে থাকার সময় আর্টের অসাধারণ সমঝদার ও সমালোচক সোহরাওয়ার্দীর বিশাল লাইব্রেরির তত্ত্বাবধায়ক হলেন তিনি ৷এ সময় থেকেই সুলতানের বিজয়ের শুরু ৷সুলতানকে নিজের ছেলের মতোই ভালবাসতেন সোহরাওয়ার্দী ৷সে বাড়িতে কোনোকিছুরই অভাব ছিল না তাঁর ৷বাড়ির দুতলায় বিশাল লাইব্রেরিতে ছিল বিশ্ববিখ্যাত সব চিত্রকরদের শিল্পকর্ম আর সেরা সেরা সমালোচকদের বই পুস্তক ৷সুলতান নিজের চর্চা দিয়েই মন ও মগজে গেঁথে নিলেন সেই বৈভব ৷পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী পরিবারে থাকার কারণেই আরবি, ফারসি ও ইংরেজিতে বেশ দক্ষ হয়ে উঠলেন তিনি ৷সে সময় আর্ট কলেজের পুরু কোর্সের মেয়াদ ছিল ছয় বছর ৷সুলতান প্রথম বছরের পরীক্ষায় দ্বিতীয় এবং পরের দুই বছর পর পর প্রথম হলেন ৷ভালোই চলছিল সবকিছু, কিন্তু সুলতান ছয় বছরের কোর্সে চার বছরের মাথায় এসে হাঁপিয়ে ওঠেন ৷১৯৪৪ সালে শেখ মোহম্মদ সুলতানের মাঝে হঠাৎ‍ই জেগে ওঠে মাছিমদিয়ার দুরন্ত লালমিয়া ৷টান পড়ে নিরুদ্দেশ হওয়ার ৷কলেজ, কলেজের সহপাঠী, প্রিয় শিক্ষকদের ভালবাসা, সোহরাওয়ার্দী পরিবারের স্নেহ-মমতা, সোনালি সাফল্যের হাতছানি- কোনোকিছুই সুলতানকে আর আটকাতে পারল না ৷সব পেছনে ফেলে একদিন সত্যি সত্যি কলকাতা ছেড়ে ভারতবর্ষ দেখতে বেরিয়ে পড়েন তিনি ৷প্রথমে গেলেন দিল্লী, দিল্লী থেকে লক্ষ্ণৌ, সেখান থেকে হিমালয়ের পাদদেশ ৷এভাবেই তাঁর ভবঘুরে শিল্পী জীবনের শুরু ৷কন্যাকুমারিকা থেকে হিমালয় পর্যন্ত গোটা ভারতবর্ষ চষে বেড়ান তিনি ৷
তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কাল ৷সুলতান ভারতের শহর থেকে শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আর পাঁচ দশ টাকার বিনিময়ে গোরা সৈন্যদের ছবি আঁকছেন ৷ভয় নেই, ভাবনা নেই, নেই কোনো দায়-দায়িত্ব, আছে শুধু সুন্দরের প্রতি সুতীব্র টান আর ছুটে চলার গতি ৷এরপর কাশ্মীরের উপজাতীয়দের সাথে বসবাস শুরু করেন আর তাদের নিয়ে ছবি আঁকেন তিনি ৷প্রকৃতি, নিসর্গ ও মানুষকে নিয়ে ছোট-বড় অসংখ্য ছবি এঁকেছেন সুলতান ৷এরই মধ্যে শিল্পী হিসেবে এস এম সুলতান কিছুটা খ্যাতিও অর্জন করেছেন ৷মিসেস হাডসন নামে কানাডীয় এক মহিলার উদ্যোগে ১৯৪৫ সালে ভারতের সিমলাতে সুলতানের প্রথম চিত্র প্রদর্শনী হয় ৷সেখানকার মহারাজা প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করেন ৷প্রদর্শনীতে বেশিরভাগই ছিল বাংলা ও কাশ্মীরের নয়নাভিরাম ল্যান্ডস্কেপ ৷মানুষের অবয়ব নিয়ে কিছু কাজও ছিল ৷এরপর সুলতান চলে যান পশ্চিম পাকিস্তানে ৷
১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের করাচিতে এবং ১৯৪৯ সালে লাহোর ও করাচিতে সুলতানের চিত্র প্রদর্শনী হয় ৷তারপর আরো কয়েক বছর কাশ্মীর ও ভারতে কাটান তিনি ৷১৯৫১ সালে চিত্রশিল্পীদের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিতে তিনি আমেরিকায় যান ৷এরপর সুলতান আবার নড়াইলের মাটিতে ফিরে আসেন ৷কিন্তু পৈত্রিক ভিটেয় তাঁর ঠাঁই মিলল না ৷পৈত্রিক ভিটেয় ঠাঁই না পেয়ে সুলতান ঢাকায় থাকতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ঢাকায় সে সময় খ্যাতিমান শিল্পীদের পাশে তিনি কোনো স্থান পেলেন না ৷আবার ফিরে গেলেন পশ্চিম পাকিস্তানের করাচিতে ৷সেখানে তিনি একটি আর্ট স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করলেন ৷আর পাশাপাশি চলছিল তাঁর ছবি আঁকা ৷
পঞ্চাশের দশকেই সুলতান যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচটি ও লন্ডনে চারটি প্রদর্শনী করেন ৷এর মধ্যে পাভলো পিকাসো, সালভাদর দালি, মাতিস, ব্রাক ও ক্লীর মতো বিশ্বনন্দিত শিল্পীদের সঙ্গে ছিল শেখ মোহম্মদ সুলতানের চিত্রকর্মের যৌথ প্রদর্শনী ৷১৯৪৬ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে তাঁর মোট বিশটি একক প্রদর্শনী হয় ৷এসব একক ও সম্মিলিত প্রদর্শনীর মাধ্যমে সুলতান প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের চিত্রকলার জগতে আলোড়ন তুলেছিলেন ৷শুরু থেকে এস এম সুলতানের ছবির মূল বিষয় ছিল নিসর্গ ৷পঞ্চাশের দশকের শেষদিকে তাঁর শিল্পবোধে পরিবর্তন আসে ৷ল্যান্ডস্কেপে আসে ফসলের জমি, বাংলার কৃষি জীবন ও মানুষ ৷ষাটের দশকের শেষ দিকে এসে তাঁর চিত্রকর্মে উপজীব্য হয়ে উঠল মানুষের দেহাবয়ব ৷ল্যান্ডস্কেপের পরিবর্তে মানুষই হয়ে উঠল তাঁর ছবির অধিপতি ৷
১৯৫৩ সালে আজীবন ভবঘুরে সুলতান বিশ্ব ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে আসেন ৷বসতি গড়েন জন্মভূমি নড়াইলে ৷তবে সেটা তাঁর বাবার ভিটেয় নয়, নড়াইলের জমিদার বাড়ির পরিত্যক্ত শিবমন্দিরে ৷এই মন্দিরের চারদিকে ঘন জঙ্গল, আর বটগাছের শেকড় অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে রেখেছে শিবমন্দিরটিকে ৷গোটা মন্দিরকেই যেন গিলে খাচ্ছে সেই বটগাছ ৷চুন, সুড়কির গাঁথুনি খসে পড়ছে ৷ফাঁক-ফোঁকরে বাস করে বিষাক্ত সাপ ৷সুলতান সাপের ভয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যাননি ৷পরম মমতায় এসব সাপকে লালন পালন করছেন, রোজ এদের দুধ কলা খাওয়ান ৷এ যেন এক অন্য সুলতান ৷একজন অসম্ভব প্রাণীপ্রেমী মানুষ ৷জীব-জন্তু নিয়েই যেন তাঁর জীবন ৷লম্বা ছিপছিপে গড়ন, পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত ছাই রংয়ের পাঞ্জাবি আর কাঁধ পর্যন্ত লম্বা চুল ৷কোলে সব সময়ই কোনো না কোনো প্রাণী থাকে ৷সারাদিন এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আড্ডা দিচ্ছেন, না হয় কোথাও বসে বাঁশি বাজাচ্ছেন ৷তিন কুলে তাঁর তখন কেউই নেই, বিয়েও করেননি ৷দিনে যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়াতেন, বাঁশি বাজাতেন আর রাত হলে শিবমন্দিরে ঘুমাতেন ৷
এর কিছুদিন পর শিবমন্দির ত্যাগ করে সুলতান এসে উঠলেন মাছিমদিয়া গ্রামে জমিদারদের আরেকটি পরিত্যক্ত দুতলা বাড়িতে ৷এখানে এসে তিনি আরো সংসারী হয়ে উঠলেন ৷দিন দিন সুলতানের সংসারে সদস্য সংখ্যা বাড়তে থাকল ৷তাঁর সংসারে সদস্য হচ্ছে কয়েক ডজন গিনিপিগ, ইঁদুর, বিড়াল, কুকুর, বাঁদর ও নানারকম পাখি ৷এরা তাঁর সন্তানের মতো ৷রোজ এদের খাবারের জন্য প্রয়োজন হয় পাঁচ সের দুধ, কয়েক ডজন কলা, মাছ, মাংস- আরো কত কী ৷সেই দিনগুলোতে এদের আহার জোগাড় করতে গিয়ে অর্থকষ্টে দিনযাপন করেছেন তিনি ৷কখনো কারো বাড়িতে আশ্রিত হয়ে থেকেছেন ৷আবার কখনো দশজনের সহযোগিতায় চলেছেন ৷শুধু জীবজন্তু নয়, সখ্যতা গড়ে উঠেছিল গ্রামের সাধারণ খেটেখাওয়া মানুষ ও শিশুদের সাথেও ৷সুলতান ছিলেন শিশুদের অকৃত্রিম বন্ধু ৷এদের নিয়ে এমনি করেই সুলতানের কেটে গেল দেড় যুগ ৷এই দীর্ঘ সময়ে তুলিতে কখনো রং লাগাননি সুলতান ৷
১৯৫১ থেকে ১৯৭৬ এর মাঝে সুলতানের কোনো প্রদর্শনী হয়নি ৷স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৬ সালের সেপ্টেম্বরে শিল্পকলা অ্যাকাডেমির গ্যালারিতে পঁচাত্তরটিরও বেশি চিত্রকর্ম নিয়ে সুলতানের প্রথম একক চিত্র প্রদর্শনী হয় ৷ততদিনে বাংলাদেশে সুলতানের ছবির সমঝদার অনেক বেড়েছে ৷সুলতান সে সময় ভাঙা বাড়ির সংসার রেখে ঢাকায় চলে এসেছিলেন ৷কিন্তু থাকতে পারেননি ৷নাগরিক জীবনের সাথে একেবারেই মানাতে পারেননি নিজেকে ৷চিত্রার পাড়ের গুল্মঘেরা পরিত্যক্ত বাড়িতেই ফিরে গেলেন আবার ৷পাখি, মানুষ আর শিশুদের নিয়ে সারা দিন ঘুরে বেড়ান, শিশুদের ছবি আঁকা শেখান, আড্ডা দেন ৷এমনি করেই কাটান কয়েক বছর ৷সুলতান বাংলাদেশে ততদিনে চিত্রশিল্পী হিসেবে বিরাট সম্মানের আসনে আসীন ৷
১৯৮২ সালে সুলতান লাভ করেন একুশে পদক ৷এর দু' বছর পরেই ১৯৮৪ সালে সরকার সুলতানকে বাংলাদেশ শিল্পকলা অ্যাকাডেমির আবাসিক শিল্পী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ৷সরকার আর্থিক ভাতায় ও সরকারি খরচে তাঁর ঢাকায় স্থায়ীভাবে থাকার ব্যবস্থা করেন ৷এর বিনিময়ে বছরে ছয়টি ছবি তিনি অ্যাকাডেমিকে দেবেন ৷এ ছাড়া চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিল্পকলার উপর বছরে একটি করে বক্তৃতা দেবেন ৷এর উদ্দেশ্য হচ্ছে অর্থাভাবে সুলতান যেন ছবি আঁকা বন্ধ করে না দেন ৷প্রথমত এ চুক্তি দু' বছরের জন্য হলেও পরবর্তীতে তাঁর মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্তই তা বহাল ছিল ৷১৯৮৬ সালে সুলতানের ৬২তম জন্মদিনে চারুশিল্পী সংসদ এই শিল্পীকে সম্মাননা প্রদান করে ৷
১৯৮৭ সালে এপ্রিল-মে মাসে গ্যেটে ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে জার্মান কালচারাল ইনস্টিটিউটে দ্বিতীয়বারের মতো একশ'টিরও বেশি ছবি নিয়ে সুলতানের আরেকটি একক চিত্র প্রদর্শনী হয় ৷এ প্রদর্শনী পরিদর্শন করে ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা জেভিটস বলেছিলেন, 'এই উপমহাদেশের গুটিকয় অসামান্য শিল্পীর মাঝে সবচাইতে জমকালো সুলতান ৷তিনি এশিয়ার কন্ঠস্বর ৷সুলতানের শক্তির উৎস তাঁর টিকে থাকার ক্ষমতায় ৷যেসব মানবমূর্তি তিনি রচনা করেছেন, তারা জীবনযুদ্ধে মানুষের টিকে থাকার বার্তাবহ ৷বাংলাদেশ আর বাংলাদেশিদের টিকে থাকার ক্ষমতা ছাড়া তেমন আর কিছু নেই ৷তাঁর ছবিতে এ জাতির স্বকীয়তার প্রতীক সনাক্ত করা যায়।'
এই প্রদর্শনীর কিছুদিন পরেই একাডেমির সাথে সকল চুক্তি সাঙ্গ করে প্রকৃতি ও তাঁর সন্তানদের মাঝে আবার ফিরে গেলেন সুলতান ৷ঢাকা থেকে ফিরেই শিশুদের পড়াশোনা, ছবি আঁকা, গান, নৃত্য ইত্যাদি মিলিয়ে 'শিশুস্বর্গ' নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তিনি ৷ প্রাকৃতিক পরিবেশে শিশুদের জন্য এমন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর আগে এই দেশে আর কোথাও ছিল না ৷জীর্ণ দুতলা বাড়িটি হয়ে উঠল শিক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র ৷পরবর্তীকালে যশোর সেনানিবাসের জিওসি সুলতানকে সুন্দর ছিমছাম তিন কামরার একটি বাসগৃহ, ছবি আঁকার জন্য বড় আকারের একটা কামরা, তার সঙ্গে ছোট্ট আরো একটি কামরা বানিয়ে দেন ৷কিছুদিন পর সুলতান সরকারি অনুদানে বাড়িটিকে আরো মনোরম করে তোলেন এবং এখানে ছোট্ট একটি চিড়িয়াখানা গড়ে তোলেন ৷
হঠাৎ একদিন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সুলতান ৷নড়াইল হাসপাতালে ভর্তি করানো হল তাঁকে ৷পূর্বপরিচিতা নিহারবালা নামে এক মহিলার সাথে সেখানে দেখা হল তাঁর ৷নিহারবালা হাসপাতালে সেবিকার কাজ করেন ৷তাঁর দুই মেয়ে, পদ্ম ও বাসনা ৷স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই মেয়েকে নিয়ে নিহারবালা তখন অথৈ জলে ৷সুলতানকে নিহারবালা আগে থেকেই কাকু ডাকতেন ৷ফলে হাসপাতালে কাকুর সেবায় এতটুকু ত্রুটি রাখেননি তিনি ৷কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর সুলতান যখন ফিরলেন তখন তিনি আর একা ফিরলেন না ৷সাথে নিহারবালা ও তাঁর দুই মেয়েকে নিয়ে এলেন ৷নিহারবালা হাসপাতালের সেবিকার কাজ ছেড়ে দিয়ে অসুস্থ সুলতানের দেখাশোনার দায়িত্ব সেচ্ছায় কাঁধে তুলে নিলেন ৷
তখন সুলতানের সংসারের মাসিক খরচ ত্রিশ হাজার টাকা ৷আয়ের উৎ‍স ছিল শিল্পকলা একাডেমি থেকে পাওয়া মাসিক নয় হাজার টাকা আর ছবি বিক্রির টাকা ৷সেই সময় সুলতানের ছবির কদর অনেক বেশি থাকলেও অনেকেই ছবি নিয়ে অথবা বিক্রি করে টাকা দিত না ৷ সে কারণে সংসারে দিন দিন সংকট বাড়তে থাকে ৷সুলতান দিনরাত উত্‍কন্ঠায় থাকেন ৷বিশেষ করে 'শিশুস্বগর্' ও শিশুদের নিয়ে ৷ইচ্ছে থাকলেও তখন আর ভবঘুরে হতে পারেননি তিনি ৷কারণ বিশাল এক সংসারের দায় তখন তাঁর কাঁধে ৷তাছাড়া শরীরের ভারেও অনেকটা নত হয়ে পড়েছেন ৷নব্বইয়ের দশকের শুরুতেই সুলতানের শরীর অনেক ভেঙে পড়েছিল ৷শেষের দিকে এসে তাঁর শরীর আরো দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে ৷এই সময় ১৯৯৪ সালে ঢাকার গ্যালারি 'টোনে' সুলতানের স্কেচ নিয়ে একক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয় ৷এই প্রদর্শনীটি ছিল সুলতানের জীবনের শেষ প্রদর্শনী ৷এ বছরের ১০ আগস্ট শিল্পকলা অ্যাকাডেমির উদ্যোগে অনাড়ম্বরভাবে নড়াইলে শিল্পীর বাসভবনে ৭০তম জন্মদিন পালন করা হয় ৷
১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোরের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মহান এই শিল্পী শিল্প ও জীবনের দায় থেকে মুক্তি লাভ করেন ৷
জন্ম ও শৈশবঃ
শিল্পী এস এম সুলতানের জন্ম ১০ আগস্ট ১৯২৩ নড়াইলের মাছিমদিয়া গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে ৷বাবা মেছের ধাউড়িয়া, পেশায় একজন প্রান্তিক কৃষক ও কাঠ মিস্ত্রী ছিলেন ৷এস এম সুলতানের মা ছিলেন দরিদ্র পরিবারের গৃহিণী ৷সুলতানের শৈশবেই তিনি মারা যান ৷তাঁর নাম জানা যায়নি ৷
পড়াশোনাঃ
১৯৮২ সালে নড়াইল ভিক্টোরিয়া স্কুলে ভর্তি হয়ে পঞ্চম শ্রেণী পাস করেন ৷এরপর বাবার ইচ্ছায় ভর্তি হন নাকানি এ. বি. এস. জুনিয়র মাদ্রাসায় ৷সেখানে সপ্তম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় সৎ মায়ের সাথে ঝগড়া করে কলকাতায় চলে যান ৷১৯৪১ সালে কোলকাতা আর্ট কলেজ ভর্তি হন ৷আর্ট কলেজে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত পড়েছিলেন তিনি ৷
চিত্র প্রদর্শনীঃ
সুলতানের প্রথম চিত্র প্রদর্শনী ১৯৪৫ সালে ভারতের সিমলাতে ৷পরে ১৯৪৮ ও ১৯৪৯ সালে লাহোর ও করাচিতে ৷১৯৪৬ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে তাঁর মোট বিশটি এর মধ্যে একটি যৌথ প্রদর্শনী ছিল যেখানে পাভলো পিকাসো, সালভাদর দালি, মাতিস, ব্রাক ও ক্লির মতো বিশ্বনন্দিত শিল্পীদের চিত্রকর্মের সঙ্গে ছিল শেখ মোহম্মদ সুলতানের চিত্রকর্ম ৷১৯৭৬ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে তাঁর প্রথম একক চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে শিল্পকলা অ্যাকাডেমি ৷১৯৮৭ সালে জার্মান কালচারাল ইনস্টিটিউট এবং সর্বশেষ চিত্র প্রদর্শনী হয় ১৯৯৪ সালে ঢাকার গ্যালারি 'টোনে' ৷
উল্লেখযোগ্য চিত্রকর্মঃ
জমি কর্ষণ-১, জমি কর্ষণ-২ (তেল রং ১৯৮৬, ১৯৮৭), হত্যাযজ্ঞ (তেল রং ১৯৮৭), মাছ কাটা (তেল রং ১৯৮৭), জমি কর্ষণে যাত্রা-১ এবং ২ (তেল রং ১৯৮৭, ১৯৮৯), যাত্রা (তেল রং ১৯৮৭), ধান মাড়াই (তেল রং ১৯৯২), গাঁতায় কৃষক (তেল রং ১৯৭৫), প্রথম বৃক্ষ রোপন (তেল রং ১৯৭৬ ), চর দখল (তেল রং ১৯৭৬) পৃথিবীর মানচিত্র (তেল রং) ইত্যাদি ৷
সম্মান ও পুরস্কারঃ
শিল্পী এস এম সুলতান ১৯৮২ সালে একুশে পদক লাভ করেন ৷ ১৯৮৪ সালে শিলাপলা একাডেমি তাঁকে আবাসিক শিল্পী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ৷১৯৮৬ সালে চারুশিল্পী সংসদ শিল্পী এস এম সুলতানকে সম্মাননা প্রদান করে ৷
সামাজিক অবদানঃ
আশির দশকে নড়াইলে শিশুদের নিয়ে 'শিশুস্বর্গ' নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন ৷'শিশুস্বর্গে' তিনি শিশুদেরকে প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে শিক্ষা দানের ব্যবস্থা করেন ৷'শিশুস্বর্গ্' এর পরিপূরক হিসেবে নড়াইলে নিজ বাসভবনেই একটি মিনি চিড়িয়াখানা গড়ে তোলেন এস এম সুলতান ৷
মৃত্যুঃ
১০ অক্টোবর ১৯৯৪ সালে যশোরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে বিকেল ৪ টা ৩৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ৷
তথ্যসূত্র : এস. এম. সুলতান স্মারক গ্রন্থ ২০০৫, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী

৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×