somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তুমি রক্তাক্ত, আমি অপরাধী...

৩১ শে জুলাই, ২০০৬ রাত ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কাল অনেক চেষ্টা করেও আমার সন্তান পোস্টগুলোকে মেরে ফেলতে পারলাম না! সত্যি খুব চেষ্টা করেছি। পারি নি। অর্থহীন মনে হচ্ছিল সব কিছু, আমার ব্লগানো। আমি অরূপের কষ্টটা বুঝতে পারছিলাম, সত্যি। কষ্টটা বুঝতে পারছিলাম বলে আরও কষ্ট হচ্ছিল, না বুঝে এত কষ্ট দিয়েছি তাই।

একটা দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি, সিভিল ওয়ার... তাও কি... দেশের সরকার, সরকারের সৈন্য বাহিনী বিন্দুমাত্র সহমর্মিতা পোষণ করে না দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি। ওরা অন্য 'জাতের'। তাই 'বিদ্রোহ' দমন নীতি হওয়া উচিৎ ছিল, যা ঘটেছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম বৃহত্তম হত্যাকান্ড।

ওই সময়টা ভয়াবহ ছিল... ভয়াবহ। নয় মাসের ধর্ষন দেশব্যপী... ভাবার চেষ্টা করেও নিজেকে ওই সময়ে ভাবতে পারি না।

আমি কাল বলেছিলাম, অমি পিয়ালের বাবার পান্ডুলিপিতে একটা বাক্য আমাকে খুব ভাবিয়েছে। যন্ত্রণায় ছটফট করেছি ওটা নিয়ে ভাবার সময়। 'জনবিচ্ছিন্ন ইসলামপন্থী'...

যদি ভেবেও নেই, জামায়াত তখন অন্যায় হত্যাকান্ড, ধর্ষন ওগুলোর সাথে যুক্ত ছিল না, বরং ওগুলোর বিরোধিতা করেছে, ভিতরে থেকে... তবু, তবু... দেয়ার ইজ আ বিগ ক্যাচ... 'জন বিচ্ছিন্ন ইসলামপন্থী'... ওরা আসলেই সাধারণ মানুষের মনভাব বুঝতে পারে নি তখন। যখন গান ডাউন করে, ধর্ষন করে আতংক সৃষ্টি করা হচিছল, তখন ওদের মিন মিনে গলায় বিরোধিতা করাই যথেষ্ট ছিল না, উচিৎ ছিল পাকিস্তানি সরকারের সাথে অসহযোগিতা করা...

সিলি একটা ব্যপার কাজ করছিল তখন, ভারতের সাহায্য নিলে দেশটা ওদের হাতে চলে যাবে। ফ্র্যাঙ্কলি, আমি দ্্বিজাতি তত্ত্বের যৌক্তিকতা বুঝি না। শুধু মাত্র ধর্মের ভিত্তিতে এরকম পুরো সীমানা টেনে দেশ ভাগ করা সম্ভব কি করে বুঝি না, যেখানে কেউ ধর্ম পালন নিয়ে মাথাই ঘামাচ্ছে না! দ্্বিজাতিতত্ত্বের বিরোধিতা করেছে জামায়াত প্রথম থেকেই, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের সময় কেন এই ভুল সিদ্ধান্তটুকু নিল?

সে যাক। এখন আমাদের করণীয় কি?

ইতিহাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। ইতিহাস না জানলে নিজেকে জানব কি করে? কিন্তু ইতিহাস নিয়ে এক্সপ্লয়টেশন সম্ভব। দ্্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইহুদীদের উপর ম্যাসাকার চলল, তারপরে ওই অপরাধ বোধ থেকেই এখনও পর্যন্ত সারা পৃথিবী তার দায় বহন করে যাচ্ছে। সেটা কি হওয়া উচিৎ?

তীব্র হতাশা হয়। মনে হয়, বিচার প্রথমেই হয়ে যেত! অপরাধীদের অপরাধের বিচারের পরে ওদের শাস্তি দেয়া হত! সব শেষ হয়ে যেত! একাত্তরের পরে শুনেছি রাজাকারদের নিয়ে জেলে ভরে রাখা হত, আইন হাতে তুলে নেয়া মানুষের আক্রোশের হাত থেকে বাঁচাতে। রাখা না হত! মেরে কেটে শেষ করে দেয়া হত সবাইকে! তাহলে এখন কনফিউশন হত না। বাংলাদেশের রাজনীতির কোন ভিত্তি থাকত না, কারণ একাত্তর ছাড়া আমাদের তেমন শক্ত কোন রাজনৈতিক ইস্যু নেই সত্যি।

আমরা এখন কি করব? ভয়াবহ ব্যপার হল, পুরো কনটেক্সট বুঝার চেষ্টা না করলে, আমাদের প্রজন্মে, যারা একাত্তরের কিছুই দেখে নি, তাদের পক্ষে তখনকার মানুষদের চেয়েও অনেক বেশি ঘৃণা সম্ভব... চরমপন্থী হওয়া সম্ভব সহজেই... এই নিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব।

জানি না কেন লিখছি এসব। কাল থেকে মনে হচেছ আমি খুব অক্ষম... বুঝতে অক্ষম, বুঝাতে অক্ষম... আগেও এই নিয়ে তর্ক হয়েছে, তখন তিনজনের সাথে চ্যাট করে বুঝেছিলাম না বুঝে কি ভীষণ রক্তাক্ত করে ফেলেছি... ঠিক করেছিলাম, এই নিয়ে আর তর্কাবো না। কারণ তর্কের সময় 'প্রতিপক্ষ' সৃষ্টি হয়ে যায়, তাই আমার দৃষ্টিভঙ্গি কেউ বুঝতেও চাইবে না।

আমার সবগুলো পোস্ট এক এক করে ঘুরলাম। খুব চেষ্টা করেও 'মুছে ফেল' তে চাপ দিতে পারলাম না। এত মানুষের এত ভালবাসার মন্তব্য কি করে নিজ হাতে খুন করব! থাকুক ওগুলো। বাকির খাতায় থাকুক। কথা দিচ্ছি, এই ভালবাসাগুলো ঠিক ঠিক সুদে আসলে ফিরিয়ে দিব... নো ফাঁকিবাজি...

আপাতত আমার একটা ছোট খাট ছুটি দরকার। আপনাদের যাদের জীবনী শক্তি নষ্ট হল আমার পিছনে, তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। ভাল থেকেন সবাই...
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০০৬ রাত ৯:৩৩
৫২টি মন্তব্য ০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×