ঢাকার বস্তিগুলোতে দুদিন পর পর কি এমনি এমনিতেই আগুন লাগে? আপনার কাছে কি মনে হয়?
মোটেই এমনি এমনিতে ঘটেনা। ১০টি অগ্নিকান্ডের মধ্যে ২টা হয়তো এমনিতে ঘটে। বাকি ৮টাই ঘটে পরিকল্পিতভাবে।
সরকারি দলের লোকজন বস্তির যায়গা দখল করে অন্য কোনো স্থাপনা তুলতে চায় বা অন্য কিছু করতে চায়, দিনের পর দিন বলেও বস্তিবাসীকে যায়গা থেকে সরানো যাচ্ছেনা। তখনই রাতের অন্ধকারে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটানো হয়। এবং কৌশলে বস্তিবাসিকে উচ্ছেদ করা হয়।
দেশি বিদেশি গোয়েন্দাদের পরিকল্পিত বাস এক্সিডেন্টের মাধ্যমে শত্রুকে নিরবে সরিয়ে দেয়ার মতই, যে কাউকে কোনো যায়গা থেকে উচ্ছেদের এটিও একটি সহজ ও কার্যকরী পন্থা!!
ডিসিসি মার্কেটের অগ্নিকান্ডের ঘটনাকেও এমনই পরিকল্পিত বলে মনে করছেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা। এমনটা বলার পিছনে তাদের যৌক্তিক ব্যাখ্যাও আছে।
ডিসিসি মার্কেটের একজন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ফায়ার সার্ভিসের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জানান, “ফায়ার সার্ভিসের পানির ট্যাংকে পানি ছিল না। আর যে পানি আনা হয়েছিল তাও মাঠে ছড়িয়ে দেয়া হয়। আগুন নেভাতে তাদের কোনো তৎপরতা ছিল না।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পরিকল্পিত বলে অভিযোগ তুলে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতা কোনোভাবেই আগুন নেভানোর জন্য যথেষ্ঠ ছিল না। এর উপর দীর্ঘদিন ধরে মার্কেটের ব্যবসায়ীদের দোকান ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছিল। যে কারণে সব কিছু মিলে এটা পরিকল্পিত ঘটনা ছাড়া আর কিছু নয়।”
উন্নত প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও কেনো অগ্নিনির্বাপণে এত দেরী হলো? তাও গুলশানের মত ভিআইপি যায়গায়? এই সময়ক্ষেপন কি পুরোটা পুড়ে ছাই হওয়ার জন্য? যদি এই উদ্দেশ্যেই হয়ে থাকে তাহলে তারা পুরোপুরি সফল। কারন মার্কেট এতটাই পুড়েছে যে, বিল্ডিংয়ের একাংশ ধসে পড়েছে।
যদিও ব্যপারগুলো ভাবতে অনেকের কাছেই বিস্ময়কর মনে হবে। কোটি কোটি টাকার সম্পদ পুড়িয়ে দিয়ে কিভাবে তারা পারে এসব করতে? কিন্তু বাস্তবতা আসলেই ভিন্ন।
কাওরানবাজারের আমারদেশ পত্রিকার প্রেসের সকল যন্ত্রপাতি কিভাবে পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো, সেটাও আমরা দেখেছি। একদিন পরেই কিন্তু এসব যন্ত্রপাতি অন্য যায়গায় স্থানান্তরের কথা ছিলো। কিন্তু চক্রান্তকারীরা চায়নি এই পত্রিকা আবার মাথা তুলে দাঁড়াক।
তবে আমাদের মেয়র আনিসুল হক সাহেব সবসময়ই থিংক পজেটিভ টাইপের লোক। তিনি শত শত ব্যবসায়ীর পথে বসে যাওয়াটাকে বড় করে দেখেননি। তিনি এই ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও একটি পজেটিভ বিষয় খুঁজে পেয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই ঘটনায় কোনো প্রাণহানি ঘটেনি, তাই তিনি স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
আসুন আমরা সবাই পজেটিভলি থিংকিং করি। বলি বেটা কপালে গুলি খেয়ে মরেছে মরুক, কিন্তু অল্পের জন্য যে গুলিটা চোখে লাগেনি, তার জন্য তো স্বস্তি প্রকাশ করতে পারি, নাকি???
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩১