উন্নয়নের মহাসড়কে আজ সকালে তিনটা তরতাজা লাশ পড়ে ছিলো। মাথায় গুলিবিদ্ধ তরতাজা যুবকের লাশ!! এ আর নতুন কি? অহরহই ঘটছে এসব!! পত্রিকায় ছোট করে দায়সারা একটা নিউজও হলো।
সন্ধ্যাবেলায় এসে সকালের সেই দায়সারা নিউজটির গুরুত্ব হঠাৎ করেই বেড়ে গেলো!!
কারন এই তিনটা তরতাজা যুবকের লাশের পরিচয় আগের গুলোর চেয়ে ভিন্ন। লাশগুলো জামায়াত শিবির বা বিএনপি কর্মীর নয়, তিনজনই যুবলীগ কর্মী।
কয়েকদিন আগে র্যাব তুলে নিয়ে গিয়েছিলো তাদের। অভিযোগ পরিবারের। পত্রিকায় বড় করে শিরোনাম হলো “তিন যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ, সন্দেহ র্যাবকে”!
যৌক্তিক ভাবেই র্যাবকে সন্দেহ করা মোটা দাগে। কিন্তু বিরোধী নেতাকর্মীদের বেলায় পত্রিকাগুলো এই সন্দেহ তো দূরের কথা, র্যাব যে তুলে নিয়ে গিয়েছিলো সেটা বলতেও দ্বিধা করতো!!
এই তিন যুবক যদি সন্ত্রাসীও হয়ে থাকে তবুও বিনাবিচারে এমন হত্যাকান্ডকে কোনোভাবেই সমর্থন করি না।
এদেরকে যে সন্ত্রাসের সাথে জড়িত থাকার কারনেই হত্যা করা হয়েছে, সেটা মোটামোটি শিওর। কারন এদের একজনকে কিছুদিন আগেও একবার র্যাব গ্রেপ্তার করেছিলো। হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সময় সে পালিয়ে যায়। তাছাড়া বাকিদের বিরুদ্ধেও এলাকায় সন্ত্রাস চাঁদাবাজি ও দখল বাণিজ্যের রেকর্ড রয়েছে।
সন্ত্রাসী হলেও বিনাবিচারে হত্যার কোনো রাইট র্যাবের নাই। কিন্তু অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারই বিরোধী মত দলনের জন্য তাদের হাতে এই লাইসেন্স তুলে দিয়েছে।
একটি বাহিনীকে পেলে পুষে যখন খুনি বাহিনীতে পরিণত করা হয়, বিনাবিচারে হত্যার লাইসেন্স ধরিয়ে দেয়া হয়, তখন সেই খুনি বাহিনী একসময় দানব রুপ ধারন করে নিজের মালিকের উপরও আঘাত হানে। তারই প্রতিফলন দেখা গেছে নারায়নগঞ্জের সেভেন মার্ডার, এই তিন যুবলীগ কর্মী হত্যাকান্ডসহ আরো কিছু ঘটনায়।
এই হত্যাকান্ডের বিচার চাওয়া বা প্রতিবাদ করার কোনো নৈতিক অধিকার এখন স্বয়ং আওয়ামী লীগেরও নেই। কারন র্যাব পুলিশ কর্তৃক বিরোধী দলের নিরপরাধ নেতাকর্মীদের একের পর এক নৃশংস হত্যাকান্ডে তারা র্যাবকে বাহবা দিয়ে, হত্যার প্রতি উৎসাহিত করে এই অন্যায় কাজটিকে ন্যায় কাজ বানিয়ে দিয়েছে। এখন সেই বাহিনী কর্তৃক নিজ দলের নেতা কর্মী হত্যার জন্য প্রতিবাদ বা বিচার চাইবে কোন মুখে??
অন্যায়কে সর্বদা অন্যায় এবং ন্যায়কে সর্বদা ন্যায় না বললে সেটার মূল্য একসময় দিতেই হবে। সেটা একসময় বুমেরাং হবেই। আজ হোক কাল।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০২