যেকোনো ঘটনায় কোনো প্রমান ছাড়াই জামায়াতকে দায়ী করাটা শাহরিয়ার কবিরদের একটা মুদ্রাদোষে পরিণত হয়েছে। অনেকটা ‘গরু রচনা’ বা ‘খাচকাটা খাচকাটা’ গল্পের মত। সেই ছাত্র যেভাবে ‘পাট’ রচনাতে পাটক্ষেতের পানি বৃষ্টির পানির সাথে মিশিয়ে নদীতে নামিয়ে নদীতে গরুকে গোশলের জন্য নামিয়ে দিয়ে গরুর বর্ণনা শুরু করে দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের মুরগি সাপ্লাই করা শাহরিয়ার কবিরেরাও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সবকিছুতে জামায়াতকে টেনে আনেন!! ব্যপারটা যদি সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন হয় তাহলেতো কথাই নেই!!!
সেদিন সময় টিভির টকশোতে শাহরিয়ার কবির কোনো তথ্য প্রমান বা উদ্ধৃতি ছাড়াই নাসিরনগরে হিন্দু বাড়িতে হামলা ও মূর্তি ভাংচুরের জন্য জামায়াতকে দায়ী করেছেন। শুধু দায়ী করেই ক্ষান্ত হননি। তিনি হিন্দু যুবক রশরাজ কর্তৃক কাবা শরীফের উপর শিবের মূর্তি প্রতিস্থাপনকেও জামায়াত শিবিরের কাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন, গ্রামের হিন্দু ছেলেরা নাকি ফটোসপের কাজ বুঝেইনা, এসব শিবিরের কাজ। জামায়াত শিবিরকে জড়ায়ে মিথ্যাচার হলে বর্তমানের টকশোর উপস্থাপকগনও যেনো আনন্দিত হন। তাইতো তারা এসব অভিযোগের জন্য শাহরিয়ার কবিরের কাছে কোনো তথ্য প্রমাণও চাননা।
রামুর ঘটনা কারা ঘটিয়েছে সেটা এখন সুষ্পষ্ট। কিন্তু আজও শাহরিয়ার কবির সাহেব রামুর ঘটনার জন্য কেবলই জামায়াতকে দায়ী করে যাচ্ছেন। জামায়াত নাকি বিএনপি আওয়ামী লীগকে সামনের সারিতে রেখে এসব অপকর্ম সাধন করে। আশ্চর্য!! জামায়াতের এত ক্ষমতা? বিএনপি আওয়ামী লীগকে দিয়ে অপকর্ম সাধনে তারা এত পারদর্শি?? শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির বেলায় জামায়াতের এত ক্ষমতা আর পারদর্শিতা কোথায় ছিলো? তারা কেনো এসব ক্ষমতা দিয়ে তাদের নেতাদের বাঁচাতে পারেনি?
যাকগে... কথা হলো, শাহরিয়ার কবির সাহেব যে নাসিরনগরের হামলার জন্য জামায়াতকে জড়িত বললেন। পুলিশতো এ পর্যন্ত নাসিরনগরে প্রায় ৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সেখানে কতজন আছে জামায়াত শিবিরের? এই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে আওয়ামী লীগের তিন নেতাকে বহিষ্কার পর্যন্ত করা হয়েছে। স্বয়ং আওয়ামী লীগ নেতারাই এখন বলছেন, আওয়ামী লীগের অন্তর্কোন্দলের কারনে আওয়ামী লীগই হিন্দুদের বাড়িতে হামলা অগ্নিসংযোগ ও মূর্তি ভাংচুর করেছে। নিচের ভিডিওতে শুনুন বিস্তারিত-
এখন কি হবে শাহরিয়ার কবিরের? হয়তো এখনো তিনি আওয়ামী লীগের কোন্দলের পিছনে জামায়াতকেই খুঁজবেন? কারন তার জন্ম- মিশন- ভিশন সবকিছুই জামায়াত কেন্দ্রীক। আদর্শের বিরোধীতায় মানুষ এতটা মিথ্যাচার করতে পারে সেটা শাহরিয়ার কবিরকে না দেখলে বিশ্বাসই হতো না। গুলশান হামলার দিন/পরের দিন ভারতের এনডিটিভিকে দেয়া এক টেলিফোন স্বাক্ষাৎকারে শাহরিয়ার কবিরের প্রথম বাক্যটাই ছিলো জামায়াতকে নিয়ে। মানে গুলশান হামলা জামায়াতই ঘটিয়েছে, উদ্দেশ্য হাসিনা সরকারকে উৎখাত!! সেই একই গরু রচনা আরকি।
যেকোনো ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক বা সংখ্যালঘুর ফ্লেভার লাগিয়ে ধর্মীয় দলগুলোকে দোষারোপ করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করাই হচ্ছে শাহরিয়ার কবিরদের একমাত্র ও প্রধান কাজ। এরা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দালাল। এদের মুদ্রাদোষ সাধারণ কিছু নয়। এদের মুদ্রাদোষ একপ্রকার গোয়েবলসীয় প্রচারণা। হলুদ মিডিয়া যার সহায়ক হিসেবে কাজ করে। পুরো জাতিকে দূষিত করার আগেই এদেরকে বয়কট করুন।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১৮