somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভারত প্রেমিগন দেখে যান ভারত আপনাদের কোন চোখে দেখে

০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশের মেইনষ্ট্রীম পত্রিকা, টিভি চ্যানেলের প্রায় সবগুলোই সাম্প্রতিক ভারত পাকিস্তান উত্তেজনাতে একতরফাভাবে ভারতের পক্ষ নিয়েছে। টকশো গুলো শুনলে তো মনে হবে পাকিস্তানের চেয়ে খারাপ রাষ্ট্র আর দুনিয়াতে নাই, আর ভারতের চেয়ে ভালো রাষ্ট্র দুনিয়াতে নেই।

মোটকথা, ভারত অন্যায় করলেও ভারতের পক্ষে বলতেই হবে। আর পাকিস্তান যত ভালো কাজই করুক না কেনো তার বিরোধীতা করতেই হবে। যেমন সেদিন টকশোতে বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম ভারতের পক্ষে আর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে কোনো তথ্যপ্রমান বা উদ্ধৃতি ছাড়াই বলে দিলেন যে, পাকিস্তানের কাজই হলো ভারতে ৫টা তরুন বা যুবককে পাঠিয়ে দিয়ে সেখানে জঙ্গি হামলা বা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটানো।

পত্রিকাগুলো তো পাকিস্তানকে কিভাবে ধরাশায়ী করা যায়, কিভাবে পানিতে মারা যায়, কিভাবে ভাতে মারা যায়, এসব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত অতি উৎসাহের সাথে একের পর এক প্রকাশ করেই যাচ্ছে।

অন্যদিকে দু একটি মিডিয়া যে পাকিস্তানের পক্ষও নিচ্ছে না তা কিন্তু নয়। সেটাও হচ্ছে। তবে একেবারেই নগণ্য। এই নগণ্য অংশ মিডিয়ার পাকিস্তানের পক্ষ নেয়ার কারন কিন্তু পাকিপ্রেম না, এটা বাংলাদেশের প্রতি ভারতের বৈষম্যপূর্ণ আচরন এবং কাশ্মীরের জনগনের উপর ভারতীয় সেনাদের নির্যাতনের কারনেই।

খুব স্বাভাবিকভাবেই আমাদের অবৈধ সরকার ও তার দল তাদের প্রভুরাষ্ট্র ভারতের পক্ষ নিয়েছে। এবং খুব কঠিনভাবেই নিয়েছে। যার প্রমান পাওয়া যায়, ভারতের সাথে তাল মিলিয়ে সার্ক সম্মেলনে না যাওয়ার ঘোষণার মধ্য দিয়েই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে পাকিস্তানের হস্তক্ষেপ আর একের পর এক তীর্যক ও উত্তপ্ত মন্তব্যের পরেও যেখানে বাংলাদেশের অবৈধ সরকার পাকিস্তানে সার্ক সম্মেলনে না যাওয়ার ঘোষণা দেয়নাই, সেখানে কোন এক প্রেক্ষিতে ভারত ঘোষণা দেয়ার সাথে সাথেই শেখ হাসিনাও বলে দিলেন তারাও সার্কে যাবেন না। একেই বলে যোগ্য প্রভুর যোগ্য শিষ্য!!!

যাকগে, কথা হলো, আমাদের মিডিয়া ও সরকারের এত ভারপ্রীতির কারনে নিশ্চই ভারতীয়রা বাংলাদেশকে তাদের বন্ধুরাষ্ট্রই ভাববে বা ভাবার কথা। কিন্তু সত্যিকারের চিত্র পুরোই উল্টো।

ইন্ডিয়া টাইমসের বাংলা অনলাইন সংস্করণ ‘এই সময়’ এ আজকে একটি নিউজ প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে দেখানো হয়েছে কোন ৫ দেশ ভারতকে ভালোবাসে আর কোন ৫ দেশ ভারতে ঘৃণা করে। সেখানে ভারতকে ঘৃণা করার তালিকায় স্বাভাবিকভাবেই ১ নাম্বারে পাকিস্তানের নাম। আশ্চর্য হলেও সত্য সে সেই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানেই আছে বাংলাদেশের নাম।



এই তালিকাটা ইন্ডিয়া টাইমস কিভাবে করেছে তার কোনো ব্যাখ্যা সেখানে নেই। তবে তাদের পুরো তালিকা কতটা যুক্তিযুক্ত সেটা না জানলেও বাংলাদেশকে দ্বিতীয় স্থানে রাখাটা একেবারেই যুক্তিযুক্ত।

কারন বাংলাদেশের দালাল মিডিয়া আর অবৈধ সরকার ভারতের যতই দালালী করুক না কেনো, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ যে ভারতকে কতটা ঘৃণা করে সেটা ক্রিকেট খেলার সময়ই প্রত্যক্ষ করা যায়। তাছাড়া ভারত পাকিস্তান উত্তেজনায় ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর চিত্র দেখলেও সহজেই বুঝা যায় বাংলাদেশের জনগন ভারতকে কতটা ঘৃণা করে।

এই ঘৃণা কিন্তু এমনি এমনি তৈরি হয়নি। ভারতের ঘৃণ্য মনমানসিকতা ও কর্মকান্ডই এই ঘৃণাকে উষ্কে দিয়েছে। মজার ব্যপার হলো ভারতকে ঘৃণা করা ৫টি দেশের মধ্যে ৪টিই হলো ভারতের প্রতিবেশি দেশ। তাইলে বুঝুন, একটি দেশ কতটা খারাপ হলে সেই দেশের সব প্রতিবেশি তাকে ঘৃণা করে!! তালিকাতে ভারতের আরেক প্রতিবেশি দেশ নেপালের নাম আসেনি। নেপাল যে ভারতকে কতটা ঘৃণা করে সেটা নিশ্চই বলা লাগবে না।

পত্রিকাটির ফেসবুক পেজে বাংলাদেশিদের মন্তব্যগুলোও বাংলাদেশকে ২ নাম্বারে রাখার যথার্থতার প্রমান দেয়। সেখানে একজন বাংলাদেশিকেও ভারতের পক্ষে ইতিবাচক মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। সেখান থেকে শুধু একটি মন্তব্য তুলে ধরছি-

“এতো সস্তা রিপোর্ট একমাত্র তোমরাই লিখতে পার। বাংলাদেশের মানুষের সাথে যে বৈরী আচরণ তোমরা করে আসছ তাতে তোমাদের পছন্দ করার কোন কারন দেখিনা। ৭১ এর তোমাদের সহযোগীতার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ তাই এখনো কিছু মানুষ তোমাদের কথা বলে। ক্রিকেট, নদীর পানি সীমান্তে নির্বিচারে হত্যা, সমুদ্র সীমানা, সবজায়গাতে তোমরা আমাদের উপর অবিচার করেছ তারপরও সরকার তোমাদের পক্ষ কথা বলে, কিন্তু জনগনকে তোমরা কি দিয়ে ফেরাবে?? ধর্ম নিরপেক্ষতারর বুলি ঝেড়ে তোমরা গরুর মাংস ইস্যু বানিয়ে মানুষ হত্যা কর। আবার তোমরাই বিশ্বের এক নম্বর গোমাংস রপ্তানিকারক। ভন্ডামী চালু থাকলে আগামীতে বাংলাদেশের একজনও থাকবেনা যারা তোমাদের কথা বলবে। আর এমন যদি হয় তাহলে ভারতের জন্য সেটা কতবড় মসিবত সেটা হিসাব করে দেখো”



ভারতপ্রেমি শাহাবাগী, বাম, রাম, আওয়ামীকুল আর টকশোজীবি বুদ্ধিজীবিদেরকে বলবো, একটু দেখে যান। দেখে যান আপনার প্রেমিক ভারত আপনার প্রেমের কেমন মূল্য দিচ্ছে। যেই প্রেমিক তার প্রেমিকাকে ২ নম্বর শত্রুর তালিকায় রাখে সেই প্রেমিক নিশ্চই “মুখে মধু বোগলে ছুরি” টাইপের প্রেমিক। সুযোগ পেলেই যে পিঠে ছুরি বসাতে একটুও দেরি করবে না।

শিরোনামে ভারতপ্রেমি লিখেছি বলে এটা মনে করার কোনো প্রয়োজন নেই যে, যারা ভারতপ্রেমি নয়, তারা পাকি প্রেমি। তারা ভারত কিংবা পাকি কোনটারই প্রেমি নয়, তারা বাংলাদেশ প্রেমি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:১৭
১০টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সত্যি বলছি, চাইবো না

লিখেছেন নওরিন হোসেন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৮



সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০


শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্থান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্থান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×