কয়েকজন নাস্তিক বসে বসে আস্তিকদের গোড়ামী (!) আর ধর্মীয় কুসংস্কার (!) নিয়ে মজা করে আলোচনা করছিলো। একজন বললো, আচ্ছা আস্তিকরা যে বলে মানুষের রুহ বের হয়ে গেলে তারা মরে যায় বিষয়টি নিয়ে একটু গবেষনা করা যাক। কোন ফেরেস্তা যদি মানুষের রুহ কবজ করে সাথে করে নিয়ে যায় তাহলে রুহের ওজন কমে যাওয়ার কথা। এই বিষয়ে সুষ্পষ্ট গবেষনা করা দরকার। তাহলে বুঝা যাবে যে, রুহ বলতে আসলে কোন জিনিসের অস্তিত্ব আছে কিনা !
ভাবনা মতো তারা একজন মৃত প্রায় মানুষকে বিশেষ একটি যন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে রাখলো যাতে প্রতি সেকেন্ডের হিসেব অনুযায়ী লোকটির ওজন মাপা সম্ভব হয়। দুদিন পরে লোকটি মারা গলো। মারা যাওয়ার এক সেকেন্ড পুর্ব থেকে তার ওজনে তারতম্য হলো দুশো গ্রাম কম। নাস্তিক গবেষকরা চিন্তায় পড়ে গেলেন, তাহলে কি রুহের ওজন দুশো গ্রাম ! সর্বনাশ রুহ বলতে তাহলে কি আসলেই কিছু আছে নাকি !!
.
আরেকটু কনফার্ম হওয়ার জন্য তারা আরেকজন মৃত প্রায় রোগীর ওপর গবেষনা শুরু করে দিলে। সেই রোগীটিও দশ দিন পরে মরে গেলো। কিন্তু এবার নাস্তিকগুলোর মাথা নষ্ট হওয়ার উপক্রম। মৃত্যুর এক সেকেন্ড পুর্বের ওজনের সাথে বর্তমান ওজনের বর্ধিত পার্থক্য হলো প্রায় দুই কেজি। অর্থ্যাৎ লোকটি মরে যাওয়ার পরে তার ওজন বেড়ে গেলে দুই কেজি। প্রথমবার দুশো গ্রাম কমে যাওয়াতে রুহের ওজন ধরা হলো দুশো গ্রাম। কিন্ত এবার তো উল্টো রুহের অনুপস্থিতির কারণে ওজন বেড়ে গেলো দু কেজি ! ঘটনার কোন কুল কিনারা না পেয়ে নাস্তিকরা সব পাগল প্রায়। যুক্তি বিদ্যার ভাস্যমতে রুহের ওজন দুশো গ্রাম হওয়া কথা। আবার কোন কারণ ছাড়াই মৃত ব্যক্তির দেহের ওজন বেড়ে যাওয়ার কাছে যুক্তি পরাস্ত !
.
যুক্তির সাহায্যে বাস্তবতাকে অস্বিকার করা নাস্তিকগুলোর মানসিক সমস্যায় রুপ নিয়েছে। উল্লেখিত ঘটনায় যুক্তির মারপ্যাচে রুহের ওজন দুশো গ্রাম ধরা গেলেও দু কেজি কমে বেড়ে যাওয়ার কোন ব্যাখ্যা তারা দিতে পারলো না। একজন মানুষের রক্ত কণিকায় যে ধরণের সেল কাজ করে, মৃত মানুষর দেহে সেই সেল নিস্ক্রিয় হয়ে যায় কেন তার বিবরনও তারা দিতে পারলো না। হার্টের সকল কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ আজো অব্দি আবিস্কার করা সম্ভব হয়নি।
.
গবেষনায় বলা হলো, রক্ত কনিকার কার্যক্ষমতা কমে গেলে মানুষ মারা যায় বলে জ্ঞান বিলি করার দির্ঘ দিন পরে জানা গেলো অনেক মৃত মানুষ এমনও রয়েছে যাদের রক্ত কনিকার সেল এখনো কাজ করে। যেমন ফেরাউন এর দেহের রক্ত কনিকার সেল এখনও সক্রিয়। অন্যদিকে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তরে কিছু মানুষের লাশ কবর থেকে তোলার পরে পোস্ট মর্টেম করে দেখা গেলো যে, তাদের দেহ সম্পুর্ণ অক্ষত এবং রক্ত কনিকার সেলগুলো সক্রিয় এবং চামড়ার টিসুগুলো আগের মতোই অক্ষত। এটা সম্ভব হওয়ার কারণও তাদের জ্ঞানের বাইরে। তথাপীও এরা জাগতিক জ্ঞানের বড়াই করে নিজের অস্বিত্তকে অস্বিকার করে।
.
তাছাড়া সেন্ট্রাল নার্ভ সিস্টেমে সামান্য ছোয়া লাগলে মানুষ স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে যায় কেন, তারাও কোন ব্যখ্যা ঐসব নাস্তিকরা দিতে পারেনি। তাদের কাছে এই মর্মে কোন জ্ঞান আসেনি যে, একটি ছোট্ট সরু নালি যা কিনা মানুষের মাথার একটি চুলের কয়েক শ ভাগের এক ভাগও নয়, সেটার ভিতর মানুষের সারা জীবনের মেমরি কিভাবে আপলোড করা সম্ভব হতে পারে !
.
তাছাড়া এও তাদের জানার বাইরে রয়ে গেলো যে, মানুষের জীবনের সকল কর্মের ফিরিস্তি কি করে সামান্য একটি শিরার ভিতর সংরক্ষিত রাখা সম্ভব হতে পারে ? কিই বা তার প্রয়োজন, কেন এসব সংরক্ষিত করা হচ্ছে ? কে করছে এসব ? এমন সব প্রশ্নের জবাব খুজার কোন দরকার মনে করেনি এসব নাস্তিকরা। তারা কেবল যুক্তির পেছনে ঘুরেছে, কিন্তু তাদের সেই যুক্তি রুহের ওজন নির্ধারণে সামান্য সাহায্য করতে পারেনি।
.
যে অস্বাভাবিক কর্মযজ্ঞ একজন মানুষের দেহেরে ভিতরে সংগঠিত হয়, তাকে বিজ্ঞানের ভাষায় নিখুত প্রোগ্রামীং বলা হয়ে থাকে। মানব দেহের প্রতিটি অঙ্গ প্রতঙ্গকে একটি বিশাল কম্পিউটারের সাথে তুলনা করা হলে এর ভিতর একটি সফটওয়্যারের উপস্থিতি জরুরী ! কেননা সফ্টওয়ার ছাড়া কোন হার্ডওয়ার রান করতে পারে না। বিজ্ঞানরীরাও এটা স্বিকার করেন। মানুষের দেহের কর্মক্ষমতার এই বিস্ময়কর নিদর্শনকে প্রোগ্রামীং আখ্যা দেওয়া নাস্তিকরা ভুলে গেলো যে, প্রোগ্রামীং এমনি এমনি লিখিত হয় না। কাউকে না কাউকে প্রোগ্রামীং করতে হয়। এটাই যুক্তি, এই যুক্তি যদি স্বিকার করা হয় তাহলে একজন সৃষ্টিকর্তার উপস্থিতি কেন অস্বিকার করা হচ্ছে। এটা কিসের যুক্তিতে করা হচ্ছে ? আছে কোন উত্তর ?
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৩৬