দীর্ঘ লড়াই- সংগ্রাম এবং লক্ষ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে আমরা বসবাস করছি। আদৌ কি বর্তমানে আমরা স্বাধীন ভাবে বসবাস করতে পারছি? আমরা স্বাধীন ভাবে আমাদের মত প্রকাশ করতে পারছি ?? বর্তমানে আমরা এমন একটা পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছি যেখানে শাসন ব্যবস্থা সবই চলছে ব্যক্তির ইচ্ছায়। আমদের ব্যাক স্বাধীনতার উপর বিরাট তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে এই ব্যক্তি সরকার-ব্যবস্থা । নিজের অধিকার, জনগনের অধিকার নিয়ে কথা বলতে গেলেই আমরা মূল লক্ষ্যে পরিনত হচ্ছি।
আমরা একটা ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি । অপশাসন ও দুঃশাসনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের জীবন কে গতিময় ও সুস্থ স্বাভাবিক করে তুলতে হলে এ শাসন ব্যবস্থা থেকে পরিত্রান পেতে হবে। এ দেশে পাঁচ বছর সরকার ব্যবস্থার মধ্যেই সবকিছু সীমাবদ্ধ । এ পাঁচ বছর সরকার দলীয় লোকজনের ভাগ্যের পরিবর্তণ ঘটলেও ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি সাধারণ মানুষের । সরকার পালাবদলের এ পাঁচ বছর যেন কবি সামসুর রাহমানের সেই “ উল্টো রাজার দেশে” কবিতার মতো । এখানে সত্য কথা ও অধিকার নিয়ে কথা বলতে গেলেই হাজতবাস করতে হবে, হতে হবে দেশা-দ্রোহী ।
রাষ্ট্র সরকার বলছে সরকার জনগনের কল্যাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে । আমার কথা জনগন যেখানে না থাকবে সেখানে কাদের উন্নয়নের জন্য সরকার কাজ করবে ?? সীমান্তে জনগন অকাতরে মারা যাচ্ছে দেখেও যে দেশের সরকার চিন্তিত নয় সে দেশের সরকার জনগনের জন্য কি উন্নয়ন করবে ?? আমাদের দেশ নেতারা যেখানে বলছে জনগন খুব ভালো আছে, সেখানে কেন আমরা রাস্তায় , সীমান্তে বুলেট-বিদ্ধ হয়ে মরছি ??
আমাদের যুক্তিবিদ্যা, নীতিবিদ্যা, মনোবিদ্যা প্রভৃতি বিদ্যার এতই সমারোহ যে বর্তমান সমাজনীতি নিয়ে আমাদের আস্ফালন সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকারের প্রতি করুণারই বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটি হচ্ছে আমরা বিদেশি সাম্রাজ্যবাদের পরাধীনতা থেকে মুক্তি লাভ করলেও আমরা বর্তমানে আমাদের চেতনাকে ক্রমশই পরাধীনতার দিকে ঠেলে দিচ্ছি। অধিকার চাই, অধিকার চাই , মুক্তি চাই এ ধ্বনি আজ ব্যাপক ও সার্বিক। কিন্তু এই ধ্বনির প্রতিফলন কোথায় ??
বেশ কিছুদিন ধরেই সীমান্তের ঘটনা নিয়ে অনেক শোরগোল ঘটে গিয়েছে। কিন্তু বর্তমানে তার লেশমাত্রও নেই। কোথায় গেলো আমাদের যুক্তিবিদ্যা, নীতিবিদ্যা ?? সবাই চাচ্ছে একটা জাগরণের সৃষ্টি হোক । আর কত?? জনগণ এভাবেই পড়ে পড়ে মরবে ?? যুদ্ধপরবর্তী স্বাধীন দেশ হয়ে আজও আমরা একটি যুদ্ধের মধ্যে আছি । আমরা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা করছি জাগরণ কবে হবে ?? আমরা তো জাগরণের মধ্যেই আছি। এখন শুধু প্রতিফলন দরকার । অতীত থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। আমাদের সোচ্চার কণ্ঠের প্রতিফলন ঘটাতে হবে, লড়াই করতে হবে, বাঁচতে হবে এবং বাঁচাতে হবে মানুষকে।