*****এই লিখাটা কেন লিখলাম আমি নিজেও জানিনা। আমার ব্লগ লিখার মূল মন্ত্রটা হল আমার লিখা দেশ ও মানুষের কথা বলবে। অনেকটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম। অসুস্থতা আমাকে কাবু করে ফেলছে। অনেকদিনের ক্ষোভ সংক্ষেপে প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম এই লিখাটাতে । কিন্তু এমন অবস্থা হয়েছে যে আমি লিখতে গিয়ে কোন ছত্র আগে লিখব কোনটা পরে লিখব তা বুঝে উঠতে পারিনি।ভিবিন্ন জায়গায় জোরালো শব্দের ঘাটতি আছে। ইচ্ছা সত্ত্বেও অনেক কিছুই লিখতে পারিনি। আমার সকল দোষত্রুটি স্নেহ সহকারে মার্জনা করবেন।*****
অনেকদিন ধরেই আমার মনে কয়েকটি প্রশ্ন বারবার খোঁচাচ্ছে। আমাদের জীবন এত ছোঁট কেন?এই তাৎপর্যপূর্ণ কথাটার মর্মার্থ বুঝার সামর্থ্য ও আমার এখনো হয়ে উঠেনি। আরেকটা হচ্ছে চারিদিকে এতো বর্বরতার মাঝে আমদের ছোট জীবনের কতটুকু সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারছি জাতির কল্লানে। বর্বরতা কীসের? জিবনের?আমার ছোট চোখের পর্যবেক্ষণে এ বর্বরতা পরিবেশের ।এ বর্বরতা আমাদের সমাজ ব্যাবস্থার । আমাদের জীবনের বড় একটা অংশ এ বর্বর পরিবেশের অসহায় স্বীকার হচ্ছে।
বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে আজ এ মুহূর্তে আমি আমাদের সমাজ ব্যাবস্থাকে বর্বর আখ্যান না দিয়ে থাকতে পারছিনা।আমাদের সমাজ বেবস্থার নীতি – নিরধারকেরা ‘পলিটিক্স’ এর বইয়ের ভিতরে চোখ বন্ধ করে থাকে আর সময় হলে চোখ বন্ধ করে পাঠ আরম্ভ করে । ভাবখানা এমন “আমাদের পাঠই সকল নীতি নির্ধারণের মূল” শুধু পাঠ করলে কি হবে? সে পাঠ থেকে তো বিদ্যা অর্জন করতে হবে তাই নয় কি?
আমরা নবম- দশম শ্রেণীতে পলিটিক্স নিয়ে এরিস্টটলের মতবাদে শাসকের তিনটি গুনের কথা পরেছিলাম। তা হল আনুগত্য , যোগ্যতা ও সততা।যে কোন একটি না থাকলে সামাজিক স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে। কিন্তু কথা হল আমাদের শাসকদের তথা সমাজ ব্যাবস্থাপকদের ঐ গুণাবলিগুলো কি আদৌ আছে। যদি থেকেই থাকে তার প্রয়োগ কোথায়?
ভাববেননা যে উনাদের সাথে কি এমন শত্রুতা যে আমি শাসন ব্যাবস্থার বিরুদ্ধচারণ করছি । আমি বিরুদ্ধচারণ করছিনা। আমি প্রতিবাদ জানাচ্ছি।স্বাধীন দেসের নাগরিক হিসেবে আমার অধিকার আছে প্রতিবাদ করার । এই যে সহজে স্বাধীন দেশের নগরিক বলে নিজেকে আখ্যায়িত করলাম ... কিভাবে এবং কত সহজে বলতে পারলাম তা কি আমরা তরুণ প্রজন্ম কখনো গভীর ভাবে উপলব্ধি করেছি ?? যতটা সময় ব্যায় করি নানাবিধ অপ্রয়োজনীয় বিষয়ের উপর তার সিকিভাগও কি আমরা ব্যায় করি দেশ কিভাবে উন্নতি করবে বা দেশটা কি আদৌ স্বাধীন আছে কিনা তা নিয়ে ভাবার ।
কেন দেশ তো স্বাধীনই আছে !!! দেশের কি হল??আপনি এসব কি আবোলতাবোল বকতেছি ? কেন বলতেছি? গতকাল রাতে পলটনের পল-ওয়েল মার্কেটের পাশ দিয়ে আসার সময় একটা মঞ্চে জনৈক বক্তা বলছিলেন “উনারা দেশকে এখনো স্বাধীন মনে করেনা, দেশের স্বাধীনতা তারা মেনে নেয়নি দেশে তারা নানা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে দেশের ভিতর অরাজকতা, হানাহানি, মারামারি বৃদ্ধি করছে” এরপর আর শুনতে পাইনি । কারা ? কারা দেশকে এখনো স্বাধীন মনে করেনা ? জনগণ নাকি সরকারি ও বিরোধী দল? এদেশের পলেটিসিয়ানগন একে অপরকে দোষারোপ করতে করতে আমাদের মত সাধারণ জনগণদের কথা ভাবার ই সময় পায়না।
যদি খেয়াল থাকত তাহলে কি আর নিজ দেশে আমরা পরবাসী থাকি? কেন বললাম ?? আমাদের শাসন ব্যাবস্থায় সংবিধানে একটা কথা প্রচলিত আছে, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার মূলে’ জনগণই যদি সকল ক্ষমতার উৎস হয় তাহলে কেন দেশের গুরুত্বপূর্ণ কোন সিদ্ধান্তে জনমত নেয়া হয়না? কেন সংসদে কোন বিল উপস্থাপনের কয়েক মিনিটের মধ্যেই পাশ হয়ে যায়। দেশ যখন জনগনের,দেশের উন্নতির জন্য কি জনমতে নেয়ার প্রয়োজন ছিলনা?
দেশের শাসকগণ কি দেখছেনা সাধারণ মানুষের কান্না। তিতাসের তিস্তার সব জল যে এখন সাধারণ মানুষের চোখে অশ্রু হয়ে মাটিতে মিশে যাচ্ছে।
৭১’এ দেশের জনগণ জেগে উঠেছিল নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য।আর এখন আমাদের জেগে উঠতে হবে নিজেদের অধিকার রক্ষার জন্য। জেগে উঠার কাজ আমাদের তরুণ প্রজন্মকেই শুরু করতে হবে। তা না হলে আমাদের অধিকার ও একসময় বিক্রি হয়ে যাবে ।