নীলক্ষেত মোড়ে হিটলারের জীবনী কিনতে আসার পর থেকে ঘেমে একাকার। আমি কয়েকটা দোকান দেখলাম, নেই। ফুটপাতের উপরেও বইয়ের দোকান, তাই নীলক্ষেতের ওই খুব চিপা পথটা দিয়ে ভীড়ের মধ্যে কোনও মতে হেঁটে যাচ্ছি। সামনে অন্য একটা দোকানে দেখতে হবে। এত ভীড়ের মধ্যে কে কাকে ধাক্কা দিচ্ছে, ওতে কারও কোনও খবর নেই। মেয়েদের ওখানে হাঁটতে যে খুব অসুবিধা হয়, তা বোঝা যায়।
তরঙ্গাকারে পিছনের ধাক্কা গুলো ছড়িয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। আমার সামনে একটা মেয়ে ছিল। খুব গা বেঁচে হাঁটছিলাম, যাতে ধাক্কা কিংবা স্পর্শ না লাগে। কিন্তু হঠাৎ পিছন থেকে একটা ধাক্কায় আমি সোজা মেয়েটার গায়ের উপর! তৎক্ষণাৎ নিজেকে সামলে নিয়ে পিছনের দিকে আমি একটা ধাক্কা দিয়ে তরঙ্গ ছড়িয়ে দিলাম। আমি মেয়েটাকে সরি বললাম কিন্তু মেয়েটার পাশেই একটা ছেলে ছিল। অগ্নিমূর্তি হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে!
এতক্ষণে আমাদের হাঁটা থামেনি। হাঁটতে হাঁটতেই যত ঘটনা। মেয়েটা হেসে উত্তর দিল, "ইটস্ অকে" (সচরাচর মেয়েরা এমনটা করে না। "আপনি দেখে চলতে পারেন না?", "অন্ধ?", "বাসায় মা-বোন নাই?", "পাগল ছাগল" ইত্যাদি বলে ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা করে। ধাক্কাটা যে অনৈচ্ছিক হতে পারে, তা তারা বোঝার চেষ্টা করে না!)
তখনও ছেলেটা অগ্নিমূর্তি হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি বললাম,-"ভাই কোনও সমস্যা?"
উত্তর দিল না কোনও। মেয়েটা ওই ছেলেটাকে বলে উঠল,-"ভাইয়া বাদদে, ইচ্ছে করে ধাক্কা দেন নাই।"
ছেলেটা তাহলে মেয়েটার বড় ভাই। মেয়েটার ওই কথা বলার পরেও, আমি যতক্ষণ পর্যন্ত না একটা দোকানে থামলাম, তার বড় ভাই আমার দিকে এমন তাকিয়ে ছিল যেন আমি ওনার বোনকে পালিয়ে বিয়ে করেছি!
পৃথিবীর সব বড় ভাইরা এরকম। তারা অন্য মেয়েদের সাথে যাই করুক, তারা নিজের বোনের সাথে তা কখনও হতে দিবে না। কেয়ামত হয়ে গেলেও না! একটা মেয়ে খুবই ভাগ্যবতী, যদি তার একটা বড় ভাই থাকে! ^_^
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৫৯