টুপ টুপ করে বৃষ্টি পড়ছে। আমি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে আজিমপুর রিকশা নিলাম। তিরিশ টাকার ভাড়া, চল্লিশ! আমার লিমিটেড পকেট মানির এই একটাই সমস্যা! হিসেবে করে খরচ করতে হয়। আমাকে আজকে দশ টাকা বেশি খরচ করার জন্য, এই মাসের অন্য একদিন হেঁটে যেতে হবে।
বৃষ্টির তীব্রতা বাড়ল। আমি হুড দিয়ে উঁকি দিয়ে বৃষ্টির তীব্রতা পরীক্ষা করার চেষ্টা করলাম। রিকশাওয়ালা অবশ্য আমাকে শুরুতেই প্লাস্টিকের শিটটা দিয়েছিল। পলাশী মোড় পর্যন্ত আসলাম। সারা রাস্তা ফাঁকা। মাঝে মাঝে দুই একটা গাড়ি যাচ্ছে। কয়দিন আগে সিটি কর্পোরেশন পলাশীর মোড়ের ফুটপাতের দোকান গুলো উচ্ছেদ করে দিয়েছে। এজন্য আরও ফাঁকা লাগছে।
হঠাত্ রিকশাওয়ালা বলে উঠল, -"মামা এমন বৃষ্টিতে ফিলিং আসে না?"
অপ্রস্তুত ছিলাম। শুনিনি কথাটা। "জ্বী?"
-"কোনও মাইয়ারে পছন্দ করেন আপনে?"
অবাক হলাম। "করি তো"
-"বৃষ্টিতে মনে পড়ে না তার কতা?"
আমি হেসে দিলাম। "কাউকে পছন্দ করতেন নাকি আপনি?"
রিকশা চালাতে চালাতে মামা উত্তর দিল,-"গেরামে থাকতে একটা মাইয়ারে পছন্দ করতাম। এক ফুফুর মাইয়া আছিল। ফুফু আবার বেবাগ গরম। উনার ডরে কোনও দিন কোই নাই.."
আমি বলে উঠলাম, -"মেয়েটার নাম কি ছিল?"
আমি ফুলি, জরিনা এমন টাইপের নাম আশা করেছিলাম। কিন্তু নাম ছিল, ফাইযা! ভীষণ আধুনিক একটা নাম। অবাক হলাম আবার।-"কী হয়েছে ওই মেয়ের? পরে কখনও বলেন নাই?"
-"ধুর মিয়া। মাইয়ার বিয়াও হই গেছে। চাইরডা বাইচ্চাও আছে?"
আমি বলার ভঙ্গি দেখে হেসে দিলাম। তবে মামা রাগল না। তিনিও হেসে দিলেন। বললেন, -"আপনার কারও কতা মনে পড়তেছে না?"
আমি একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে আবার হুডের বাইরে উঁকি দিয়ে বৃষ্টির তীব্রতা মাপতে মাপতে বললাম, -"পড়ছে.." ❤
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৭:২০